ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ট্রাভেলার্স নোটবুক

ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া

নাবেদুল হক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৪
ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া

ঘোরাঘুরি বিষয়টা বরাবরই বেশ পছন্দের। বেশ কয়েকদিন হলো কোথাও ঘুরতে যাওয়া হচ্ছিল না, সেই ফেব্রুয়ারিতে সুন্দরবন আর মার্চে কুয়াকাটা ভ্রমণই শেষ।

এরপর ইউনিভার্সিটির সেমিস্টার শুরু, পড়ালেখার চাপে কোথাও যাওয়া হয়ে উঠছিল না। হঠাৎ একদিন শেরপুরের এক বন্ধু  আসিফের ফোন। শেরপুর ঘুরতে যাওয়ার আমন্ত্রণ। লুফে নিলাম প্রস্তাবটা। কিন্তু মনে মনে ভাবলাম কি আর আছে দেখার মতো।  

গজনী, আর মধুটিলা ছাড়া অন্যকিছু আছে কিনা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারলাম যে জামালপুর লাউচাপড়া অবসর বিনোদনকেন্দ্র আছে, জায়গাটা এখনো ততটা পরিচিতি পায় নাই।
Untitled_2
সেমিস্টার চলছে তাই কেউ যেতে রাজি না। অনেক কষ্টে ৩ বন্ধুকে রাজি করালাম। জুলাই মাসের ৫ তারিখ রাতে রওনা হলাম, সকাল ৪টা ৩০ মিনিটেই পৌঁছে গেলাম। খুব ভোরে বের হয়ে গেলাম শেরপুর শহর দেখতে। সকালে নাস্তা শেষে ভাড়া  করা গাড়িতে উঠলাম।

খরারপাড়া আসার পর আসিফ  বললো, অর্কিড পর্যটন প্রকল্পটা ঘুরে যেতে। কি আছে দেখতে তাই নেমে পড়লাম বাস থেকে।
Untitled_3_
খরারপাড়া থেকে ৫০০ মিটারের মতো কান্দাপারা কলাবাগান, এর দিকে এগুলেই অর্কিড পর্যটন প্রকল্প। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মতো না। ছিমছাম আর গোছানো এ পর্যটন কেন্দ্র। কুরের ঘর আর  সবুজের সমারোহ। সঙ্গে বানর, সাইকাস গাছ। তৈরি হচ্ছে সুইমিংপুল, চারপাশে পলাশ ফুলের গাছের সারি,পানির ফোয়ারা। আর পর্যটকদের জন্য বসে বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা। খুবি পরিপাটি অর্কিড পর্যটন কেন্দ্র।

প্রকল্পটি একেবারেই নতুন, এখনও কাজ চলছে। এখানে আপনি ইচ্ছে করলে পার্টির ব্যবস্থা করতে পারবেন। আর এতে একদিনের জন্য আপনাকে আপনাকে গুনতে হবে ১০ হাজার টাকা।
Untitled_4
প্রায় দেড় ঘণ্টা ঘোরাঘুরির পর আমরা বেরিয়ে এলাম। পথ ধরলাম লাউচাপড়ার। শেরপুর শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার,যেতে সময় লাগবে ১ ঘণ্টার মতো। রাস্তার দুই পাশে কাশফুলের সারি পিছনে ফেলে মহিশের গাড়ি দেখতে দেখতে শ্রীবর্দি হয়ে বকশিগঞ্জ চলে এলাম।

ভিতরে প্রবেশ করেই নেমে পড়লাম গাড়ি থেকে, এখানে যাতে আপনি রেস্ট নিতে পারবেন সেজন্য আছে রেস্টহাউস। আমরা যেহেতু এখানে রাতে থাকবো না তাই, ভেতরে ঢুকেই ঘুরতে শুরু করলাম।

এখানে আছে পর্যটকদের জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, টাওয়ার থেকে আপনি ইচ্ছে করলে সম্পূর্ণ জায়গাটা দেখতে পারবেন। মোট তিনটি টাওয়ার আছে।
Untitled_5_copy
সারি সারি বিশাল বিশাল এক একটি গাছ, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে গেছে। অবর্ণনীয়  সেই দৃশ্য।

ছোট একটি লেক, লেকের উপর ব্রিজের মতো জায়গা আছে। আছে মৎসকন্যা! তবে বাস্তবের নয়, পাথরে তৈরি।

আমার মতো যারা ভ্রমণ প্রিয় মানুষ তাদের জন্য একদিনের একটা ট্যুর। বিকেলের মধ্যে ফিরতে পারবেন শেরপুর শহরে। তারপর ঢাকার বাসে চেপে সোজা ঢাকা।
Untitled_
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে শেরপুরগামী বাস আছে তবে এগুলো বেশিরভাগই লোকাল সার্ভিস, রাতে যেতে চাইলে সাদিকা পরিবহনের একটা সার্ভিস আছে, তাতে যেতে পারেন, ভাড়া ৩০০ টাকা। আর শেরপুর থেকে একটা গাড়ি সরাদিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারবেন, খরচ পরবে ২৭০০-৩০০০ টাকা। আমাদের ড্রাইভার  জুয়েল ভাই এর মোবাইল (০১৭৫৬১৮৭৭৬৩) নম্বর দিয়ে দেওয়া হলো, চাইলে যাওয়ার আগে যোগাযোগ করতে পারেন। । ৪-৫ জন গেলে এদিনে মাথাপিছু খরচ  পড়বে ১৭০০ টাকার মতো।

প্রিয় পাঠক, ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে।
Untitled_7
আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেনই না, সেই সঙ্গে বাতলে দিন সেখানে যাওয়ার পথঘাটের বিবরণও।

প্রিয় পাঠক, আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন  [email protected] এই ঠিকানায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।