মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়েছে এক টুকরো সুন্দরবন। প্রকৃত সুন্দরবনের আদলে তৈরি করা হয়েছে মিনি ইকোপার্ক।
![](../../../images/PhotoGallery/2014January/safari-park-1020140118175903.jpg)
শনিবার সকাল থেকে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন এই মিনি ইকোপার্কে।
চট্টগ্রাম থেকে আগত মো. তামিম বাংলানিউজকে বলেন, আমি ঢাকায় খালার বাসায় বেড়াতে এসেছি। আজ খালাতো ভাইদের সঙ্গে আমিও মেলায় ঘুরতে এসেছি। তবে আমার কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হলো এ মিনি সুন্দরবন।
তিনি আরো বলেন, আমি বাস্তবে কখনও সুন্দরবন দেখিনি। তবে বন্ধুদের মুখে অনেক গল্প শুনেছি। এখানে এসে সুন্দরবন ও এ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পর্কে অবহিত হতে পেরেছি। সুযোগ পেলে সুন্দরবন ঘুরে আসতে ভুল করবো না।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পূর্বদিক বরাবর এ মিনি সুন্দরবন তৈরি করা হয়েছে সরকারি উদ্যোগে। মূলত বিভিন্ন এলাকার মানুষদের সুন্দরবনের প্রতি আকৃষ্ট করতে এবং এ দেশের পর্যটন শিল্পকে উন্নয়নের জন্য এ আয়োজন করেছে সরকার।
মিনি সুন্দরবনের ডিজাইন করেছেন ডিজাইনার জামিউর রহমান লেমন। তিনিই এ মিনি সুন্দরবনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া ডিজাইনিং অ্যাডভারটাইজিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ মিনি সুন্দরবনের সাজ সজ্জার কাজ করেছে।
![](../../../images/PhotoGallery/2014January/safari-park-620140118175857.jpg)
জামিউর রহমান লেমন বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের এ প্রয়াস। প্রধানত পর্যটন শিল্পকে প্রমোট করা, সাধারণ মানুষকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করা এবং মেলায় আগত দর্শনার্থীদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা।
এ কাজে কোনো কোম্পানির সহায়তা না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, এ ধরনের কাজের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। আমরা বেশ কিছু বড় বড় কোম্পানিকে এ কাজে অর্থায়ন করার আহ্বান জানিয়েছিলাম কিন্তু বেসিক ব্যাংক ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেনি।
তবে প্রজেক্টের একটি অংশে বেসিক ব্যাংক অর্থায়ন করেছে। যদি বড় বড় কোম্পানিগুলো আমাদের এ কাজে এগিয়ে আসতো তবে এটা আরো ভালভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হতো। আর মাত্র তিন লাখ টাকা খরচ করলে এখানে সুন্দরবনের লাইটিং এবং সাউন্ডের ব্যবস্থা করা সম্ভব হতো বলে মনে করেন লেমন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে বড় বড় কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসবে।
লেমন বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই। বিশেষ করে এক নির্দিষ্ট এলাকায় অন্য এলাকার ঐতিহ্য তুলে ধরতে চাই। যেমন উত্তর বঙ্গে আমরা মিনি সি বিচ তৈরি করে সে এলাকার মানুষকে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে, চট্টগ্রামে মিনি সুন্দরবন তৈরি, শহর এলাকায় একটি মিনি আদর্শ গ্রাম তৈরি করে গ্রাম সম্পর্কে ধারণা দেওয়ায় আমাদের মূল লক্ষ্য।
![](../../../images/PhotoGallery/2014January/safari-park-420140118180350.jpg)
সরেজমিন মিনি ইকো পার্ক পরিদর্শন করে দেখা যায, সেখানে মেলা প্রেমীদের অনেক ভিড়। অনেকে মিনি সুন্দরবনের সীমানায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে ভুল করছেন না। তবে পার্কের মধ্যে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ মিনি সুন্দরবনের মধ্যে রাখা হয়েছে বাঘ, কুমির, ভাল্লুক, হরিণ, অজগর, বানর, পাখির মূর্তি। এছাড়া জীবন্ত রাখা হয়েছে হাঁস, টিটি পাখি, কচ্ছপ, মুরগীসহ নান প্রাণী।
সুন্দরবনের মধ্যে ছোট ছোট হৃদের আদলে তৈরি করা হয়েছে খাল। যার মধ্যে ছাড়া হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এছাড়া সুন্দরবনে নদীর ধারে যে গোলপাতার গাছ থাকে তাও এ মিনি সুন্দরবনে রাখা হয়েছে। তবে টাকার অভাবে এনভায়ারনমেন্টাল সাউন্ড দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানান আয়োজকরা।
* মেলায় বেঙ্গল প্যাভিলিয়নে আগুন আতঙ্ক
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৪
সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর