ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

পর্যটন

প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে ঘুরে আসুন রাঙামাটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৯
প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে ঘুরে আসুন রাঙামাটি রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। ছবি: বাংলানিউজ

রাঙামাটি: ঈদের ছুটিতে প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে ঘুরে আসুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙামাটিতে। হ্রদ, ঝরনা আর উপত্যকাবেষ্টিত এই মায়াবি শহর আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশাল হ্রদ ঘিরে রেখেছে সবুজাভ ছোট্ট এই শহরটিকে। হ্রদের কিনারায় উঁচু সবুজ পাহাড় মুগ্ধতা ছড়াবে। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে অসংখ্য ঝরনা ঝরছে সকাল-দুপুর-সাঁঝে। ১৩টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনাচার মুগ্ধতা ছড়ায় পথে প্রান্তরে।

যেভাবে আসবেন: ট্রেনে আসতে চাইলে ঢাকার কমলাপুর, গাবতলী, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মহাখালী, ফকিরাপুল, কমলাপুর, সায়দাবাদ থেকে বাসে উঠতে হবে। বাসে সরাসরি পৌঁছে যাবেন রাঙামাটি।

ট্রেনে বা বিমানে আসলে চট্টগ্রাম নেমেই টেক্সিক্যাব বা অটোরিকশায় চলে আসুন স্টেশন রোড বিআরটিসি কাউন্টার কিংবা অক্সিজেন রাঙামাটি বাস কাউন্টারে।

পাহাড়িকা বিরতিহীন পরিবহনে আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন রাঙামাটিতে। চট্টগ্রাম থেকে রেন্ট-এ কার নিয়েও চলে আসতে পারেন।

কোথায় ঘুরবেন: ঘণ্টা দুয়েক রেস্ট নিয়ে টুরিস্ট বোট রিজার্ভ করে চলে যান সুভলং ঝরনায়। পথে পাহাড়ের বুকে রেস্টুরেন্টের ঐতিহ্যমণ্ডিত খাবার, সবমিলিয়ে একটা দিন কেটে যাবে আপনার। দেখা হয়ে যাবে পেদাতিংতিং, জুমঘর, টুকটুক ইকো ভিলেজ, স্বর্গছেঁড়া, চাংপাং পর্যটন স্পট আর চাইলে সুভলং বাজারও। ফেরার পথে দেখে নেবেন রাঙামাটি পর্যটন মোটেল সংলগ্ন সেই বিখ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি। রাঙামাটি রাজবন বিহার।  ছবি: বাংলানিউজসন্ধ্যায় চলে যান স্থানীয় আদিবাসী পোশাক মার্কেটে। কিনতে পারেন প্রিয়জনের জন্য স্থানীয় পোশাক। দামাদামি খুব একটা যুতসই হবে না। পরদিন সকালে রিজার্ভ অটোরিকশা কিংবা মাইক্রো নিয়ে আসামবস্তি সড়ক ধরে চলে যান কাপ্তাই।

এশিয়ার বৃহত্তম কাগজ কল, দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, নেভিক্যাম্প, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থানে। তবে সবচেয়ে ভালো লাগবে যাওয়া আসার ১৯ কিলোমিটার চড়াই উৎড়াই আঁকাবাঁকা পথটিই। একপাশে হ্রদ আর অন্যপাশে গভীর বনঘেরা সবুজ পাহাড় আপনার ভালোলাগা জুড়ে স্থায়ী আসন নেবে। এ পথেই দেখে নিতে পারেন বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু বনভান্তের জন্মস্থান মোরঘোনা এবং পাহাড়িয়া রিসোর্ট রাইন্যা টুগুন। কাপ্তাইয়ে জুম রেস্তোরাঁ বা অন্য কোথাও দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারেন। সন্ধ্যা নামার আগেই ফিরে আসুন রাঙামাটি।

পরদিন সকালে রাঙামাটি রাজবন বিহারে চলে যান। দেখুন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা কীভাবে আত্মমগ্ন হয়ে নির্জনে ধর্মচারে ব্রত। বিহারের পাশেই চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়ের রাজবাড়ি। এখান থেকে বেরিয়ে চলে যান সুখীনীলগঞ্জ। রাঙামাটির সাবেক পুলিশ সুপারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত নতুন পুলিশ লাইন। এখানে আছে বিচিত্র ধরনের বৃক্ষের সমাহার। পাশেই রাঙামাটি জেলা পরিষদের বোটানিক্যাল গার্ডেন। এরপরই বেরিয়ে চলে আসুন রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাদুঘরে। যেখানে চোখ বুলিয়ে নিন হাজার বছরের ঐতিহ্যে।

এখান থেকে চলে যান ডিসি বাংলো। অনুমতি সাপেক্ষে ঘুরে দেখুন জেলার সবচেয়ে প্রাচীন বাড়িটি এবং সংলগ্ন জাদুঘর। বাংলোর পেছনে ছোট্ট একটি ব্রিজ পাড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে ভালোই লাগবে আপনার। দেখতে পারেন ডিসি বাংলো পার্ক ও পুলিশের পলওয়েল পার্কও।  

ভিন্ন স্বাদের ভুঁড়িভোজ যেখানে করবেন: রাঙামাটি বেড়াতে আসবেন আর স্থানীয়দের ঐতিহ্যবাহী রীতিতে রান্না করা কোনো খাবার খাবেন না তা কী হয়? বৈচিত্রময় খাবার খেতে চলে যান সাবারাং, রঙরাঙ, কেবাং কিংবা মেজাং রেস্টুরেন্টে। আপনার এতদিনের চেনা মুরগি কিংবা গরুর মাংস বা ডিম রান্নার স্থানীয় প্রক্রিয়ার ভিন্নতর স্বাদ আর সুগন্ধ আপনার রসনা বিলাসকে সমৃদ্ধ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৯
এনটি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।