ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

পর্যটন

প্রাণ জুড়াবে তৈদুছড়া ঝরনা

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯
প্রাণ জুড়াবে তৈদুছড়া ঝরনা তৈদুছড়া ঝরনা

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির অধিকাংশ পর্যটন স্পট হাতের নাগালে। মানে গাড়ি থেকে নামলেই স্পট। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব স্পট ঘোরার জন্য আদর্শ হলেও ট্রেকিং কিংবা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের মন ভরে না। সে সুযোগও এখন হাতের নাগালে। যদি উঁচুনিচু পাহাড় আর ঝিরিপথ দিয়ে হেঁটে পাহাড়ের অন্য রূপ দেখতে চান তবে তৈদুছড়া ঝরণা আদর্শ।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের সীমানা পাড়ায় অবস্থিত ঝরণাটি। খাগড়াছড়ির অন্য পর্যটন স্পটের সঙ্গে এই ঝরনা আলোচনায় এলেও এতদিন সেখানে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল কম।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্পটটিতে বাড়ছে পর্যটকদের সংখ্যা।
 
স্থানীয় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ঝরনাটির নাম দিয়েছে ‘তৈদু’। ত্রিপুরা ভাষায় 'তৈ' অর্থ ‘পানি’ আর ‘দু’ অর্থ ‘ধারা’। পাহাড়ের গাঁ ঘেঁষে অঝোর ধারায় নিচে গড়িয়ে পড়ছে স্বচ্ছ জলধারা। বুনো প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্যময় ঝরনাটিকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। সবুজ পাহাড় বুনো জঙ্গলের মধ্যে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার ঝরনাটি আপনাকে মুগ্ধ করবে।
ট্রেকিং রুট 
তৈদুছড়া ঝরনার নিচে আরো একটি ঝরনার অবস্থান। সচারচার পর্যটকরা প্রথম ঝরনাটি দেখে ফিরে আসেন। মূলত প্রথম ঝরণা থেকে দ্বিতীয় ঝরনা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের হাঁটা পথ। এই চলার পথটি যেমন কষ্টকর তেমনি রোমাঞ্চকর ও সুন্দর। এর উচ্চতা আবার তৈদুছড়া থেকে বেশি।
 
আপনি চাইলে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের নয় মাইল এলাকা দিয়ে যেতে পারেন তৈদুছড়া ঝরনায়। নয় মাইল নামক স্থানে নেমে অথবা সরাসরি গাড়িতে করে প্রথমে যেতে হবে সীমানা পাড়া এলাকায়। গাড়িতে করে যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিটি। সেখান থেকে তৈদুছড়া ঝরনার দূরত্ব প্রায় এক ঘণ্টার হাঁটা পথ। সেখানে খাবারের দোকান না থাকায় হালকা খাবার আর পানি আপনাকে খাগড়াছড়ি শহর থেকে নিতে হবে।
 
সীমানা পাড়া থেকে একজন গাইড নেওয়া উত্তম। না হয় পাহাড়ের পথে চলে যেতে পারেন। পাহাড়ি গ্রাম, কখনো পাহাড়ের উঁচু-নিচু পথ আপনার অ্যাডভেঞ্চার মনের ক্ষুধা মেটাবে। চারদিকে সবুজের সমারোহ, মাথার উপর নীল আকাশ, উঁচু-নিচু টিলা, ছড়া, মাচাং ঘর, জুম ক্ষেত, বাঁশ ঝাড় ইত্যাদি দেখতে দেখতে যখন ক্লান্তি ভর করবে, তখনই দেখা পেয়ে যাবেন মন জুড়ানো তৈদু ঝরনার।  
 
তৈদুছড়াদীর্ঘ পথ হাঁটার পর যখন ঝরনার স্পর্শ পাবেন তখন মুহূর্তেই সব ক্লান্তি ধুয়ে যাবে। ঝরনার শীতলতার পরশ আপনাকে ক্ষণিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেবে। পানি এসে সরাসরি যেখানে পড়ছে, সেখান থেকে সিঁড়ির মতো তিনটি পাথুরে ধাপ রয়েছে। ধাপগুলো বেয়ে পানি নিচে গড়িয়ে পড়ছে। উপরের ধাপে দাঁড়িয়ে অনায়াসেই গোসলের কাজটি সেরে নেওয়া যায়।
 
কীভাবে যাবেন
খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে দিঘীনালার সীমানা পাড়া পর্যন্ত গাড়ি যায়। কিংবা নয় মাইল নামক স্থানে নেমে হেঁটে যেতে পারেন। খাগড়াছড়ি থেকে সীমানা পাড়া পর্যন্ত আসা-যাওয়া গাড়িভাড়া দুই হাজার টাকা। এবার সীমানা পাড়া থেকে তৈদুছড়ার উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু।
 
কোথায় খাবেন
এই যাত্রায় যথেষ্ট পানির প্রয়োজন। তাই পানি শুকনো খাবার শহর থেকে নিয়ে যাওয়া ভালো। সীমানা পাড়ায় পানির সংকট রয়েছে। আর চাইলে দুপুরে সীমানা পাড়ায় খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে স্থানীয় গাইড কিংবা পাড়া প্রধানকে বললে হবে। তাদের মেন্যু বলে দিলে বাজার করা, রান্নাবান্না সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
এডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।