ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ট্রাভেলার্স নোটবুক

পাহাড়-সমুদ্র ঘেরা স্বপ্নিল দ্বীপ-শহর ক্র্যাবি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
পাহাড়-সমুদ্র ঘেরা স্বপ্নিল দ্বীপ-শহর ক্র্যাবি! পাহাড়-সমুদ্র ঘেরা স্বপ্নিল দ্বীপ-শহর ক্র্যাবি-ছবি: বাংলানিউজ

থাইল্যান্ডের ক্র্যাবি ঘুরে এসে: সূর্বণভূমি এয়ারপোর্ট থেকে নেমেই সাইথাই বাসস্ট্যান্ড। গন্তব্য আন্দামান সাগরের কোলঘেঁষা শহর ক্র্যাবি। বিলাসবহুল বাসে করে আরামে ১২ ঘন্টা পাড়ি। ভোরের আলো ফোটার আগেই জেগে উঠেছে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অনন্য নজির ক্র্যাবি। ঘুমজড়ানো চোখে মিলল সড়কের দু'ধারের সবুজ গাছ-গাছালি আর পাথুরে পাহাড়ের সংবর্ধনা।

নয়নাভিরাম ক্র্যাবি প্রথম দেখাতেই মেলে ধরলো তার অপরূপ রূপ-সুষমা। বাসস্টেশন থেকে নেমেই ট্যাক্সি করে হোটেলে।

ঝটপট ফ্রেশ হয়েই শুরু হলো দিগন্তবিস্তৃত সুনীল সাগর-ভ্রমণ। নোপ্পারাত থারা বিচ থেকে দুরন্ত গতিতে আন্দামান সাগরে ছুটে চলছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। যতদূর চোখ যায় সূনীল সাগরের সঙ্গে মেঘের মিতালি। একটু পরপর সবুজে মোড়া ছোট ছোট পাথুরে দ্বীপ। নৌকার গতিতে চোখে-মুখে পানির ঝাপটা এসে লাগে। ঠোঁট চেটে তীব্র নোনা স্বাদ পাওয়া যায়। পাহাড়-সমুদ্র ঘেরা স্বপ্নিল দ্বীপ-শহর ক্র্যাবি-ছবি: বাংলানিউজট্যুরের জন্য নির্দিষ্ট চারটি দ্বীপ-- ফ্রানাং আইল্যান্ড, চিকেন আইল্যান্ড, টাব আইল্যান্ড ও আও নাং আইল্যান্ড। তবে নিজের দুর্ভাগ্য আর থাইদের ইংরেজি জ্ঞানের দৌড় বা আমাদের বোঝার অক্ষমতায় আও নাং আইল্যান্ড ও চিকেন আইল্যান্ড ঘুরে ক্ষান্ত থাকতে হলো। ভাষাগত সমস্যার কারণে বাতচিত বা ভাব বিনিময় হলো না তেমন।

চালকের কথামতো প্রথমে আন্দামানের বিশাল জলরাশির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা চিকেন আইল্যান্ডে থামল ইঞ্জিন নৌকা। আধাঘন্টা ভ্রমণের পর চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রকৃতির খেয়ালে গড়ে ওঠা দ্বীপটি। দেখতে মুরগীর মতো সবুজে ঘেরা দ্বীপটির চারপাশে আন্দামানের স্বচ্ছ জলরাশি। স্কুবা ডাইভিং-এর জন্য দ্বীপটি বিখ্যাত। বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কোরাল সমৃদ্ধ পানিতে নেমে স্নরকেলিং করতে দেখা গেল।

চিকেন আইল্যান্ড থেকে ১০ মিনিটে আও নাং আইল্যান্ডে। এখানে বুক-পানি পার হয়ে এক দ্বীপ থেকে সাগরের মাঝ দিয়ে আরেক দ্বীপে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা সত্যিই অসাধারণ।

দ্বীপটিতে নানা বর্ণের, নানা দেশের পর্যটকের দেখা মিলল। এর মধ্যে নোনা পানিতে শরীর ভিজিয়ে কেউ শুয়ে বই পড়ছে, কেউবা চড়া রোদে শরীর পুড়িয়ে নিচ্ছে; কেউবা আবার কায়াকিংয়ে ব্যস্ত। কেউ কেউ নানা ভঙ্গিতে ক্যামেরায় পোজ দিয়ে যাচ্ছে।

ক্র্যাবি ভ্রমণের দ্বিতীয় দিন অ্যাম্ফোই খলোং থমে অবস্থিত হট স্ট্রিম ওয়াটারফল ভ্রমণ। থাই সরকারের জাতীয়করণ করা এই ঝর্ণাটির দূরত্ব ক্র্যাবি শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ট্যাক্সি ব্যয়বহুল বিধায় মোটর বাইকেই যাত্রা। জিপিআরএস চালু করে মৃসণ সড়কে বাইকের পিছনে এক সঙ্গে দু:সাহসিক ও অসাধারণ অনুভূতির ভ্রমণ। দেড় ঘন্টায় গন্তব্যস্থলে।

২০ বাথ দিয়ে হট স্ট্রিম ওয়াটারফলে লোকজনকে প্রবেশ করতে দেখা গেল। গিজগিজ করছে মানুষ। সবুজ গাছ-গাছালি বেষ্টিত ওয়াটারফলে দর্শনার্থীর ভিড়ের মধ্যে শরীর ভেজানোর সুযোগ বের করাই দায়। এই প্রাকৃতিক ঝর্ণার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাহাড়ের কোল থেকে গরম পানির ধারা নেমে আসছে। দর্শনার্থীরা ঝর্নার গরম পানিতে গা ভিজিয়ে ঠাণ্ডা পানিতে সাঁতরাতে পারেন।   এজন্য ঝর্নার সঙ্গে ঠাণ্ডা পানির লাগোয়া জলাশয় রয়েছে। পাহাড়-সমুদ্র ঘেরা স্বপ্নিল দ্বীপ-শহর ক্র্যাবি-ছবি: বাংলানিউজথাইল্যান্ডের ক্র্যাবি ছবির মতো এক স্বপ্নিল, অপরূপ শহর। এলাকাটি মুসলিম অধ্যুষিত হওয়ায় হালাল খাবার পেতে কোনো সমস্যা নেই। আন্দামান সাগরের সঙ্গে ক্র্যাবির সন্ধ্যাটা মনোমুগ্ধকর। ফল ও বিভিন্ন স্বাদের খাবার নিয়ে তীরে বসলে সমুদ্রের গর্জনের সঙ্গে রাস্তার ধারের রেস্তোরাঁ থেকে ভেসে আসা মিউজিক আপনাকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।