ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

রবির ছোঁয়ায় মন ভরে যায় কুঠিবাড়িতে

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৭
রবির ছোঁয়ায় মন ভরে যায় কুঠিবাড়িতে রবির ছোঁয়ায় মন ভরে যায় কুঠিবাড়িতে। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিলাইদহ থেকে ফিরে: পদ্মার ঝিরঝিরে হাওয়া বইছে। রকমারি বৃক্ষরাজির শীতলছায়ায় বিমোহিত মন। হৃদয়ে প্রশান্তি আনছে মৃদুস্বরের রবির গান।

রবি ঠাকুরের স্মৃতিধন্য কুঠিবাড়ি, কাছারি বাড়ি, বকুলগাছ, ষোল বেহারার পালকি, ‍হাত পালকি, অর্ধচন্দ্রাকৃতির বসার বেঞ্চি, শান্ত দীঘিতে ২০১১ সালে তৈরি সেই বজরাখানিসহ সবমিলে অন্য এক জগত। যেখানে পরতে পরতে রবীন্দ্রনাথ, পরশে পরশে তার সগৌরব উপস্থিতি জানান দেবে আপনাকে।

রবির স্মৃতিবিজড়িত খাট ও বকুলতলা

শিলাইদহের আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র কুঠিবাড়ি। সত্যিকার অর্থে বাংলা ভাষাভাষী পর্যটকদের জন্য অদ্বিতীয় আকর্ষণের জায়গা এটি। একদিকে নীলকরদের ইতিহাসের অন্যতম অনুষঙ্গ আরেকদিকে বাংলায় বিশ্বজয়ী রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিচিহ্ন। স্বাভাবিকভাবে কুঠিবাড়ির তুলনা কুঠিবাড়িই।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালের ৬ জুন ‘শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির সম্প্রসারিত উন্নয়ন কার্যক্রম’ উদ্বোধন করেন। এরপর পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নকার্যক্রম শুরু হয়। কুঠিবাড়িতে সাংবাদিক নেতারা

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) কুঠিবাড়ি দেখার সুযোগ হয় আমাদের। যখন পৌঁছি তখন রাত। চারণ শিল্পীদল বকুলতলা শিল্পী গোষ্ঠী রবির গানে সম্ভাষণ জানালেন। এরপর থেকে আমরা গানের ভুবনে সময় কাটালাম। ছিলাম কুঠিবাড়ির অন্যতম অতিথিশালা ‘গীতাঞ্জলি’তে। যেখানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে আমরা সভা করি। স্বাগত বক্তব্য দেন বিএফইউজে মহাসচিব ওমর ফারুক। যাতে সারা দেশের ১০টি ইউনিটের (সাংবাদিক ইউনিয়ন) নেতারা অংশ নেন। এ সভাটি কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজন করে। কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের আতিথিয়তায় আমরা সবাই মুগ্ধ।

অল্প সময়ের মধ্যে কুঠিবাড়ির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো। কুঠিবাড়ি প্রথম কিনেছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। নীলের ব্যবসা ছেড়ে সাহেবরা চলে গেলে কুঠির তিনতলা বাড়ির নিচতলায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জমিদারির কাছারি। ১৮৯২ সালে পদ্মার গ্রাস থেকে বাঁচাতে কুঠিবাড়ি ভেঙে স্থানান্তর করা হয় বর্তমান জায়গায়। নতুন বাড়িটি তৈরির ভার ছিল দ্বিজেন্দ্রনাথের ছেলে নীতীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর। এরপর রবি ঠাকুরের ছোঁয়া লাগে চারপাশে। প্রায় ৩৩ বিঘা জমির ওপর বাড়িটি। মাঝখানে প্রাচীরঘেরা আড়াইতলা ভবন। যাতে হলসহ ১৫টি কক্ষ আছে। পদ্মার শান্ত জলরাশিতে নৌ ভ্রমণ

কুঠিবাড়ি আমাদের গৌরব। এমন পরিকল্পিত বাগান, এত বিচিত্র বৃক্ষরাজির সমাহার সবাইকে মুগ্ধ করে। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বকুলতলা। যেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফেরি হয় রবির গান। গানে আর মানে কুঠিবাড়ি বাঙালির প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে অনন্তকাল।   

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, ২৬ মে, ২০১৭

টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।