ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

কক্সবাজারের দ্বীপগুলোতে ‘হায়েনার’ থাবা

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৬
কক্সবাজারের দ্বীপগুলোতে ‘হায়েনার’ থাবা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার: মানুষরুপী ‘হায়েনার’ থাবা পড়েছে কক্সবাজারের সমুদ্রঘেরা ছেঁড়াদ্বীপ, দারুচিনি দ্বীপ, সোনাদিয়া দ্বীপসহ বিভিন্ন দ্বীপগুলোতে।

 

সমুদ্র থেকে এসব দ্বীপগুলোর দিকে তাকালে মনে হয় ঘন সবুজ গাছ-গাছালিতে ভরা সবুজ দিক।

কিন্তু ভেতরে গিয়ে দেখা যায় বাস্তব চিত্র। দ্বীপের কোনো গাছ একটু বড় বা মোটা হলেই দ্বীপদস্যুরা তা কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

দ্বীপগুলো পরিদর্শন করে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছেঁড়াদ্বীপ, দারুচিনি দ্বীপের গাছ চুরি করে সাবাড় করেছে সেন্টমার্টিন থেকে আসা দ্বীপদস্যুরা। আর সোনাদিয়া দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় ওই দ্বীপের গাছ কেটে সাবাড় করছে কক্সবাজার থেকে আসা দ্বীপদস্যুরা।

ছেঁড়াদ্বীপ ও দারুচিনি দ্বীপ ঘুরে দেখা গেছে, এর চারপাশে গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ কেয়া গাছ, ‘আইফেল টাওয়ার’ খ্যাত একটি ঝাউগাছ ছাড়া আর কোনো গাছই নেই দ্বীপ দু’টিতে। দ্বীপ দু’টির ভেতরে থাকা স্থানীয় ভাষায় ‘রাং গাছ’ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি এর শেকড় পর্যন্ত তুলে নিয়ে গেছে।

ছেঁড়াদ্বীপের একমাত্র বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বাধা দিলেও তারা শোনে না। বরং উল্টো আমাকেই মারতে আসে। আমি একা মানুষ, তাদের সঙ্গে পেরে উঠিনা বলে চুপ করে থাকি।
 
তিনি জানান, কোস্ট গার্ড, জেলা প্রশাসন ও সেন্টমার্টিন পুলিশের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন ও চারদিকে বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত হওয়ায় এসব দ্বীপদস্যুদের নাগাল পায়না প্রশাসন।

সোনাদিয়া দ্বীপ ঘুরে দেখা গেছে, দ্বীপটি রক্ষায় এর চারদিকে বনবিভাগ ঝাউগাছ রোপন করেছে। কিন্তু গাছগুলোর বয়স ৭/৮ বছর হলেই তা কেটে নিয়ে যায় দ্বীপদস্যুরা। দ্বীপটির ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট হিসেবে ঘোষণা করা বনও কেটে সাবাড় করছে তারা। দ্বীপটি ঘুরে একটু মোটা কিংবা লম্বা কোনো ঝাউগাছ খুঁজে পাওয়া দুরূহ ব্যাপার।

দ্বীপের পর্যটন বিভাগের একমাত্র কর্মচারী আব্দুল করিম বাংলানিউজকে জানান, এখানে বন বিভাগের তিনজন কর্মচারী আছেন। তারা দিনে অন্যকাজ করে রাতে এখানে এসে ঘুমান। দস্যুরা এসে বন কেটে উজাড় করে দিলেও ভয়ে তারা বের হন না। কয়টি গাছ দস্যুরা কেটে নিয়ে গেছে দিনের বেলা তারা বনবিভাগ ও কোস্টগার্ডকে সে হিসাব দেন। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় দ্বীপদস্যুদের প্রতিহত করাও সম্ভব হয় না বলে জানান এ কর্মকর্তা।

দ্বীপগুলোতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা জানান, দ্বীপদস্যুদের প্রতিহত করা না গেলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে হুমকির মুখে পড়বে এসব দ্বীপের অধিবাসীরা। বিপন্ন হয়ে উঠবে এর পরিবেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮,২০১৬
এমআই/জেডএস

** ছেঁড়া দ্বীপের আইফেল টাওয়ার
** অব্যবস্থাপনায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
** কেয়ারি সিন্দবাদে দোল খেতে খেতে সেন্টমার্টিন
** কেয়া আর নারকেল গাছ সেন্টমার্টিনকে করেছে অপরূপা
** পরিত্যক্ত অবস্থায় ছেঁড়া দ্বীপের একমাত্র মসজিদ
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।