ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

মরা শামুক হাঁটে ছেঁড়া দ্বীপে!

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৬
মরা শামুক হাঁটে ছেঁড়া দ্বীপে! ছবি: শুভ্রনীল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সেন্টমার্টিন থেকে: শিরোনাম দেখে একটু ঘাবড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটনা সত্যি! ছেঁড়া দ্বীপে মরা শামুককে হাঁটতে দেখা গেলো বেশ চঞ্চল চিত্তে।

ছড়ানো ছিটানো প্রবাল খণ্ড পেরিয়ে পশ্চিম দিকে চোখ আটকে রাখে কেয়া বন। বনের পাশ ঘেঁষে দ্বীপের ময়লা আবর্জনায় চোখ রাখতে গিয়ে ধরা পড়লো ভিন্ন জিনিস। একটি ছোট আকৃতির শামুক বেশ দ্রুতগতিতেই হাঁটছে।

একটু সন্দেহ হলো। ধীরগতি বোঝাতে যে শামুককে সব সময় ‘শম্বুক গতির’ উপমা হতে হয় সে আবার এতো জোরে হাঁটে কীভাবে! কৌতূহল থেকে কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই বোঝা গেলো শামুকটির পা আছে।
ততক্ষণে পর্যটকদের ভিড়ও জমেছে ছোট্ট এ প্রাণটিকে ঘিরে। আকার আকৃতি দেখে কেউ আবার কচ্ছপের বাচ্চা বলেও ভুল করলেন।
 
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখা গেলো সে একটু করে হাঁটছে আর থামছে। অবশ্য সে হাঁটাকে দৌড়ও বলা চলে। আগ্রহ আরও বাড়তে থাকায় একটিকে ধরে দেখা গেলো এক আজব বিষয়। শামুক হাঁটছে, কিন্তু তার ভেতরে লুকিয়ে দুষ্টু বুদ্ধিমান কাঁকড়া!
শামুকের ভেতরে ঢুকে মাংস খাবে, এ লোভেই এভাবে দৌড়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ভেবে গতিবিধি লক্ষ্য রাখা হচ্ছিলো। একটু পরে আশপাশে এ রকম আরও কয়েকটিকে দেখা গেলো। সবার গন্তব্য কেয়াবনের গোড়ার আবর্জনা ও শিকড়ের অন্তরাল।
 
পরে না দাঁড়িয়ে শুরু হলো ঘোরা। শেষে তেষ্টা মেটাতে আশ্রয় ছেঁড়া দ্বীপের একমাত্র বসতি হোসেন আলীর দোকানে। আসল রহস্য উন্মোচন করলেন তার ছেলে সাদ্দাম। তার কাছে জানতে চাইলে বেশ আগ্রহ নিয়েই খোলাসা করেন বিষয়টি।
জানান, ছোট এ কাঁকড়াগুলো লালচে ও বাদামি রঙের। আকৃতিতে বড়ও হয়। এখন তারা ছোট। তাই প্রকৃতির বিভিন্ন শত্রুর কাছ থেকে বাঁচতে তাদের এমন অদ্ভুত আশ্রয়।
 
আকৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওরা ছোট থেকেই সৈকতে মরে পড়ে থাকে, শামুকের খোলে ঢুকে পড়ে। প্রয়োজন হলে বের হয় কোনো শত্রুর সাড়া শব্দ পেলে মরা শামুকের ভান ধরে। আর ভেতরে এমনভাবে আঁকড়ে থাকে যে কষ্ট করেও বের করা যায় না।
এরা নাকি যত বড় হতে থাকে তত বড় শামুকের খোলে আশ্রয় নেয়। একটি শামুক ধরে অনেক চেষ্টা করেও ভেতর থেকে বের করা গেলো না। উদ্দেশ্যটা ছিল অবশ্য বুদ্ধিমান এ কাঁকড়াটিকে এক নজর দেখা। তবে জয় কাঁকড়াটির। প্রকৃতিতে টিকে থাকার পদ্ধতিটি যে সে ভালো করেই রপ্ত করেছে তা শিখিয়ে দিলো মানুষ নামের প্রাণীটিকেও!
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৬
এএ/আইএ

** তথ্যহীন পর্যটন তথ্য কেন্দ্র!
** ড্যান্সিং বাসে কক্সবাজার টু টেকনাফ
** ডাব-তরমুজেই পকেট ফাঁকা সেন্টমার্টিনে
** নোনা দ্বীপে মিষ্টি পানি
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।