ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

দূর থেকে ভাসমান, কাছে গেলেই দৃশ্যমান ছেঁড়া দ্বীপ

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৬
দূর থেকে ভাসমান, কাছে গেলেই দৃশ্যমান ছেঁড়া দ্বীপ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সেন্টমার্টিন থেকে: দেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত সেন্টমার্টিন। প্রবাল পাথরে আচ্ছাদিত এই দ্বীপ জুড়ে রয়েছে মাত্র কয়েক হাজার লোকের বসবাস।

দেশের মূল ভূখণ্ডের অংশ হয়েও যেন বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিন। বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীর পাড় দিয়েই যেতে হয় সেন্টমার্টিনে।
সাগরের নীল জল দেশের অন্য জেলা থেকে পৃথক করে দিয়েছে সেন্টমার্টিনকে। আবার সেন্টমার্টিনের ভূখণ্ড থেকেও বিচ্ছিন্ন ছেড়া দ্বীপ।   দূর থেকে দেখলে মনে হয়, সাগরের মাঝে ভাসমান একটি বন; কাছে গেলেই দেখা মেলে প্রবাল পাথর আর বালু ঢেউ খেলছে ছেঁড়া দ্বীপে।  
ছেঁড়া দ্বীপ মূল দ্বীপ থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। প্রবাহ বঙ্গোপসাগরের ঢেউ ছেড়া দ্বীপের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন ঢোকার পথে একমাত্র ব্রিজের কাছ থেকে ছোট বোটে চড়েই যেতে হয় ছেঁড়া দ্বীপে। ছেঁড়া দ্বীপে যাওয়ার জন্য জোয়ারের অপেক্ষা করতে হয় পর্যটকদের।
কেননা সাগরে পূর্ণ জোয়ার না থাকলে সেখানে বোটে চড়া দূরহ হয়ে যায়। বঙ্গোপসাগরের নীল জল আগত পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে প্রবাল পাথরের ওপর। মুহুর্তেই ঢেউ এসে পরিষ্কার করে দিচ্ছে দ্বীপের বিচ। চিকচিক বালুর ওপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে উপভোগ করা যায় বঙ্গোপসাগরের ঢেউ’র খেলা।
সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপে একটি মাত্র পরিবার বসবাস করে। হোসেন আলীর এ পরিবারে রয়েছে চার সন্তান। বড় ছেলে সাদ্দাম, মেয়ে মৌসুমী, অন্য দুই সন্তান ও স্ত্রী রহিমা খাতুনকে নিয়ে হোসেন আলীর সংসার।
১৯৯৭ সাল থেকে হোসেন  আলী পরিবার নিয়ে ছেঁড়া দ্বীপে বসবাস করছেন। আগত পর্যটকদের ঘিরেই এদের জীবন আচার। একটি দোকান যেখানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন আইটেমের জুস ও পানি। এছাড়া কেউ চাইলে এখানে দুপুর ও রাতের খাবারও সেরে আসতে পারেন।
হোসেন আলী বড় ছেলে সাদ্দাম হোসেন নৌকায় পেরেক মারতে মারতে বলছিলেন, আমরা মূলত ট্যুরিস্ট কেন্দ্রিক বসবাস করি। আমাদের পরিবার চলে আগত ট্যুরিস্টদের কাছে কিছু বিক্রি করে। পর্যটকদের মৌসুমে যে আয় হয়, তাই দিয়েই প্রায় বছর চলে যায়।

সেন্টমার্টিনসহ ছেঁড়া দ্বীপের চারপাশেই রয়েছে কেউড়া গাছের বিস্তরণ। কেউড়া গাছের শিকড় একটি আরেকটিকে যেভাবে জড়িয়ে ধরে আছে, হয়তো এ জন্যই এই গাছের নাম কেউড়া গাছ। এই কেউড়া গাছ ঝড় জলোচ্ছ্বাসকে কিছুটা হলেই দ্বীপবাসীকে রক্ষা করে। তাই দ্বীপবাসীর জীবন রক্ষাকারী হিসেবেও কাজ করছে কেউড়া গাছ।
সেন্টমার্টিনের আরও একটি আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে জোয়ারের সময় দুই ঘণ্টা আগে যেখান দিয়ে বোট (নৌকা) যেতে হয়, দুই ঘণ্টা পরে এলেই দেখা যাবে বালু আর প্রবাল পাথর। কাছে না গেলে কারো মনেই হবে না যে এখান দিয়েই দুই ঘণ্টা আগে ছোট নৌকায় চড়ে পার হয়েছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৬
এসএম/পিসি

** সৈকতের আল্পনাশিল্পীদের করুণ মৃত্যুগাথা (ভিডিও)
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।