ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পর্যটন বিকাশে

বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ‘রোড-শো’, দেশে সাজবে ট্রেন-বাস

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬
বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ‘রোড-শো’, দেশে সাজবে ট্রেন-বাস

ঢাকা: বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের একটি সম্ভাবনাময় দেশ। বাংলাদেশের অবারিত প্রাকৃতিক ও ভৌগলিক সম্পদ, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আতিথেয়তা নানা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

কিন্তু অপর্যাপ্ত প্রচার-প্রচারণার কারণে বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প বিশ্বে খুব একটা পরিচিতি লাভ করেনি।

তাই এই শিল্পকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে ২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করে ‘রোড-শো’ করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।

এছাড়া দেশের প্রতিটা বাস ও ট্রেনে ‘ভিজিট বাংলাদেশ’ বিষয়ক ক্যাম্পেইন প্রচার করা হবে। ট্রেনের বগিতে শোভা পাবে পর্যটন বিষয়ক নানা পোস্টার ও ব্যানার। এই বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

এর পাশাপাশি বিদেশি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল ব্লগারদের ভ্রমণ করিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিচিতিকরণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের বিভিন্ন সূত্র বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় দেশের বিমানবন্দরগুলোকে নান্দনিকভাবে সাজানো হবে। দেশি-বিদেশি বিমানের যাত্রীদের হাতে পর্যটন বিষয়ক ম্যাগাজিন ধরিয়ে দেয়া হবে। জার্মানি, জাপান, ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও দুবাইয়ে নানা ধরণের রোড-শোসহ পোস্টার ও ব্যানার টানানো হবে।   এ খাতে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। এছাড়া সমগ্র দেশে ব্যয় করা হবে ৪০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

এর পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে পর্যটন শিল্পকে পরিচয় করিয়ে দিতে নানা উদ্যোগ হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সরকার ‘ন্যাশনাল ট্যুরিজম পলিসি-২০১০’ প্রণয়ন এবং পলিসি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড গঠন করেছে।

দ্রুততম সময়ে সম্পন্নের জন্য ‘ডেভলপমেন্ট অব প্রোমোশন অব ট্যুরিজম ফর ভিজিট বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন’ নামক একটি প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ‘রোড-শো’ এবং সেলস মিশনের আয়োজন করা হবে।
 
প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা। এপ্রিল ২০১৬ সাল থেকে জুন ২০১৮ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। দেশের ৬৪টি জেলাসহ বিশ্বের নামিদামি শহরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অনলাইন মিডিয়া, টেলিভিশন, প্রিন্ট মিডিয়া এবং আউটডোর মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেয়া হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও পর্যটন প্রদর্শনে আকর্ষণীয়ভাবে অংশগ্রহণ করা হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও পর্যটন উইং) মো. রফিকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের একটি সম্ভাবনাময় দেশ। পর্যটন বর্ষ উদযাপন ও প্রচার-প্রচারণা হলো পর্যটন শিল্পকে আকৃষ্ট করার অন্যতম মাধ্যম। তাই দেশে বিদেশে নানা ধরণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। বিশ্বের বিভিন্ন শহরে রোড-শো করবো। এছাড়া প্রচার প্রচারণার জন্য বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করবো। পযর্টন শিল্পের বিকাশে দেশের প্রতিটা ট্রেনের বগিতে নানা ধরণের ব্যানার ও পোস্টার টানাবো। এছাড়া ট্রেনের ভেতরে ভিজিট বাংলাদেশ বিষয়ক প্রচারণা চালাবো। এই বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছি। ট্রেনের পাশাপাশি বাসেও এই উদ্যোগ নেয়া হবে। ’

অন্যদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পযর্টকদের সেবা ও পণ্যের মান বজায় রাখার জন্য দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচারণা পরিচালনা করা হবে। পর্যটন বর্ষ উদযাপন ও প্রচার-প্রচারণা হলো পর্যটন শিল্পকে আকৃষ্ট করার অন্যতম মাধ্যম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পর্যটন বর্ষ উদযাপনের মাধ্য এ শিল্পের প্রসার বিস্তার করিয়েছে। তাই প্রকল্পের মাধ্যমে এ শিল্পের প্রচার ও বিপণন, স্থানীয় পর্যায়ে শিল্প সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও পর্যটন স্পটসমূহের উন্নয়ন করা হবে।

প্রকল্পের গুরুত্ত্বপূর্ণ অঙ্গভিত্তিক ব্যয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণায় ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ শিল্পের বিকাশে দেশে ও বিদেশে নানা অনুষ্ঠানের জন্য ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে।

অন্যান্য ব্যয়ের মধ্যে গবেষণা খাতে সাড়ে ৬ কোটি, ডেলিগেশন খাতে সাড়ে ৪ কোটি ও ৫৭টি জেলায় পর্যটন তথ্য কেন্দ্র উন্নয়ন বাবদ ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। স্পট ইনফরমেশন খাতে দুই কোটি, পার্বত্য তিন জেলায় ট্রেকিং রুটের উন্নয়নে ৫০ লাখ, বেসিক ফ্যাসিলিটিজ ও ডেভলপমেন্ট অব ব্যাকওয়াটার্স ট্যুরিজমে সাড়ে তিন কোটি খরচ করা হবে। প্রকল্পে ভ্রমণে হাত খরচা বাবদ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
এমঅাইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।