ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পর্যটক সেবায় কুয়াকাটার ৪০০ বাইকার

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
পর্যটক সেবায় কুয়াকাটার ৪০০ বাইকার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুয়াকাটা থেকে: একটুও আলো ফোটেনি, কিন্তু সূর্যোদয় দেখতে হলে আঁধারেই নামতে হবে পথে। বিচের কাছে আসতেই অচেনা কণ্ঠ আর মোটরসাইকেলের হর্নের শব্দ।

চেহারা কিছুই দেখা গেলো না। জানালেন, দিন শুরুর আগেই প্রতিদিন পর্যটকদের সেবায় নামেন তারা। ভোরের সূর্যোদয় দেখা থেকে শুরু করে উল্লেখযোগ্য অন্তত ১২টি স্পট দেখার সুযোগ করে দেন বিচ সংলগ্ন এলাকার চারশো বাইকার।

কিলোমিটার ও ঘণ্টা- উভয় হিসাবে তাদের সঙ্গে চুক্তিতে আসা যায়। ক'টি স্পট ঘুরতে চান, কোনটি বাদ দিতে চান পর্যটক, তার ওপরও দরদাম নির্ভর করে।

ভেজা বালি, শুকনো বালি, খানাখন্দের রাস্তায় চলার দক্ষতা রয়েছে তাদের। বাংলানিউজকে বাইকার মোশাররফ হোসেন জানান, প্রায় চারশো মোটরসাইকেল চালক রয়েছেন কুয়াকাটা জুড়ে, যারা নিজেদের বাইকে পর্যটকদের সেবা দেন। মোশাররফ এ কাজ করছেন ২০০৬ সাল থেকে।

জানালেন, নিজের বাইকই চালান তারা। কারণ বিচে বাইকের এতোটাই ক্ষয়ক্ষতি হয় যে ভাড়ায় চালিয়ে সেভাবে পোষায় না। নিজেরা পর্যটক নিয়ে ঘুরিয়ে আনেন, কিংবা কোনো পর্যটক যদি চান নিজেরাও বাইকারের কাছ থেকে বাহনটি ভাড়া নিতে পারেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।

গঙ্গামতিতে সূর্যোদয় দেখাতে মোশাররফ ভাড়া নেন ১০০ টাকা, ফিরতে আরও ১০০ টাকা। ঘণ্টা হিসেবে মোশাররফ নেন ২৫০ টাকা করে। দর্শনীয় সবগুলো স্থান দেখাতে তিন ঘণ্টার মতো সময় লাগে। তবে দরদামের সুযোগও রয়েছে। কেউ কেউ ফুল প্যাকেজ ৫০০ টাকা করে রাখেন জনপ্রতি।

কোনো কোনো বাইকে তিন বা চারজনের পুরো পরিবারও চড়ে বেড়ান গঙ্গামতির পথে। সমুদ্রতটে কেবল বাইকের চাকা ও পর্যটকের পায়ের ছাপ দেখা যায় আলো-আঁধারিতে। অনেকেই হেঁটে যান গঙ্গামতি, কিন্তু সূর্যোদয়ের পর আর অতটা হাঁটতে পারেন না। তখন বাইকের আশ্রয় নিতে হয় তাদের।

একই বাইকার এক ভোরে তিন থেকে চারবারও একই পথ অতিক্রম করতে পারেন পর্যটক নিয়ে।

গঙ্গামতিতে সূর্যোদয় দেখে ইকো পার্ক, লাল কাঁকড়ার দ্বীপ, ঝাউ বন, কুয়াকাটার ঐতিহাসিক কুয়া, পাল তোলা প্রাচীন জাহাজ, কাউয়ার চর, রাখাইন পল্লির বুদ্ধমূর্তি, ঝিনুক দ্বীপ, লেবুর বন, দ্বিতীয় সুন্দরবন বা ফাতরার বনসহ বেশ ক'টি জায়গায় পর্যটক নিয়ে যান তারা।   তবে এক্ষেত্রে পুলিশি নজরদারিও রয়েছে বলে জানান বাইকাররা।

মোশাররফ জানান, কিছুদিন আগে আবছা আলোতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যায় ছোট্ট এক শিশু পর্যটক। বিচের বালিতে ডুবে থাকা দড়িতে (নৌকা বাঁধার) আটকে পড়ে বাইক। দড়িটি একদিকে ছিঁড়ে বাচ্চাটির গলা কেটে যায়। সেই থেকে পুলিশ এসব মোটরসাইকেলে নজর রাখে।

বেলা হলে পুলিশ কয়েকটি পথ বন্ধও করে দেয় সাবধানতায়।   তাই নিরাপত্তার খাতিরে দক্ষ চালক কিনা, পথে দড়ি বা দুর্ঘটনা ঘটার মতো কিছু আছে কিনা এবং গতিও ধীর কিনা লক্ষ্য রাখতে বলেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
এসকেএস/এএ

**  ‘হ্যাপি জার্নি বাই শাহপরাণ!’
**  সোনালী দিনের অপেক্ষায় ‘সাগরকন্যা’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।