ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

তারার ফুল

দেশি নায়করা ওপারে যোগ্য নন!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৫
দেশি নায়করা ওপারে যোগ্য নন! (বাঁ থেকে) শাকিব খান, আরিফিন শুভ, বাপ্পি ও সাইমন/ ছবি: নূর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রে বাংলাদেশি নায়ক নেই কেন- এই প্রশ্নটি এখন প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। ছবিগুলোতে ঘুরেফিরে এপারের নায়িকাদের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন ওপার বাংলার নায়করা।

সাম্প্রতিক যৌথ প্রযোজনার কোনো ছবিতে পাওয়া যায়নি দেশীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান, আরিফিন শুভ, ইমন, নিরব, বাপ্পি কিংবা সাইমনকে। অন্যদিকে ঢালিউডের সাধারণ ছবিতেও প্রায়ই নায়ক আনা হচ্ছে ওপার বাংলা থেকে। এসব প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে নানা কথা উঠছে। অনেকে রসিকতা করে বলছেন, তবে কী (যৌথ প্রযোজনার ছবির জন্য) আমাদের নায়কেরা উপযুক্ত বা যোগ্য নন?

এসব প্রসঙ্গে কথা বলেছেন প্রথম সারির তারকা নায়কেরা। ঢালিউডের ‘কিং খান’খ্যাত নায়ক শাকিব খান বলেছেন, ‘নীতিমালা পুরোপুরি মেনে যৌথ প্রযোজনার ছবি আগে হোক, সেটা বেশি জরুরি। তারপর এসব নিয়ে কথা বলা যাবে। আমাদের নায়করা উপেক্ষিত কি-না এটাও বলার সময় হয়নি। আমি এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। ’

জনপ্রিয় নায়ক বাপ্পি বলেন, ‘আমি মনে করি এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রযোজকেরা অবহেলিত। কলকাতার প্রযোজকদের কাছে তারা কোনঠাসা। বিশ্ব চলচ্চিত্রে নায়করা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ঢালিউডেও তাই। কিন্তু প্রযোজকরা এখানে আমাদের নায়কদের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ’

আলোচিত নায়ক সাইমন বলেন, ‘প্রথম সারির নায়করা যৌথ প্রযোজনার ছবিতে নেই কেন- এটা একটা সাময়িক প্রশ্ন। কিছুদিন পর উত্তরটা নিজেই এসে ধরা দেবে। আর বিষয়টা নিয়ে সংশ্লিষ্টরাই ভালো বলতে পারবেন বলে আমি মনে করি। তবে নায়করা যে বসে নেই সেটাও নিশ্চয়ই সবাই দেখছেন!’ 

এদিকে অধিকাংশ যৌথ প্রযোজনার ছবির কারিগর প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। তাদের ছবিগুলোর নায়িকা মাহি (রোমিও বনাম জুলিয়েট, অগ্নি ২), নুসরাত ফারিয়া (আশিকী, হিরো ৪২০) ও জলি (অঙ্গার)। এসব ছবির নায়কেরা সবাই ওপার বাংলার। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় তাদের সঙ্গে।

জাজের কর্ণধার আব্দুল আজিজ অবশ্য ফেসবুক পেজেও এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে ভালো বা বাণিজ্যিকভাবে চলার মতো সিনেমা কম। আর বর্তমানে বাংলাদেশে মূলত তিনজন নায়কের সিনেমা ডিস্ট্রিবিউশনে কম-বেশি চাহিদা আছে। যেমন শাকিব খান, বাপ্পি, আরিফিন শুভ। অন্য প্রযোজকরা তাদেরকে সিনেমাতে নিয়ে মূলত নিরাপদ বোধ করেন এবং তাদের কলকাতা থেকে নায়ক আনার সুযোগও কম। কিছু প্রযোজক আছেন যারা এই তিনজনের বাইরে সিনেমা বানাতে চান না। জাজ বছরে ১২টা সিনেমা বানানোর জন্য কাজ করছে। আমরা যদি এই তিনজনকে নিয়ে বছরে ১২টা সিনেমা করি, তবে অন্য প্রযোজকরা কী করবেন? তারা তো সিনেমা বানাবেন না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘জাজ যদি নায়িকা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আর নায়ক কলকাতা থেকে নিয়ে ১২টা সিনেমা করে, তাহলে অন্য প্রযোজকরা ওদের তিনজনকে নিয়ে ১২-১৫টা সিনেমা করে, তবে বছরে আমাদের সিনেমা হলগুলো আনুমানিক ৩০টা সিনেমা পাবে, এতে হলগুলো বাঁচবে। আর কে না জানে হল বাঁচলে সিনেমা বাঁচবে!’

আব্দুল আজিজ জানান, এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তারা চেষ্টা করছেন। প্রতিষ্ঠানটি নতুন নায়ক খুঁজছে। সব ঠিক থাকলে নতুন বছরে যৌথ প্রযোজনার কোনো ছবিতে পাওয়া যাবে সেই নায়ককে।

অন্যদিকে জাজের বাইরের ছবিগুলোতেও দেশি নায়করা উপেক্ষিত। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দাগ বিদ্যা সিনহা মিমকে নিয়ে তৈরি করেছে ‘ব্ল্যাক’ ছবিটি। এর নায়ক সোহম। প্রসেনজিৎ কাজ করছেন যৌথ প্রযোজনার ছবি গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’-এ। এর নায়িকা কুসুম সিকদার। জয়া আহসান তো কাজ করছেনই। এর আগে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’ ছবিতে নায়ক-নায়িকা উভয়ে ছিলেন কলকাতার। একাধিক যৌথ প্রযোজনার ছবিতে নায়িকা হয়েছেন মিষ্টি জান্নাত। নায়ক হিসেবে তার সঙ্গে আছেন সোহম।
 
যৌথ প্রযোজনার বাইরের ছবির জন্যও ঢাকায় এসেছেন ওপার বাংলার কয়েকজন নায়ক। শুধু কলকাতাই নয়, উড়িষ্যা থেকেও নায়ক আনছেন প্রযোজক-পরিচালকরা। সম্প্রতি ঢাকার সিনেমায় কাজ করেছেন কলকাতার সোহম, ইন্দ্রনীল, পরমব্রত, হিরণ, অঙ্কুশ, ওম প্রমুখ।
    
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৫
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ