এজন্য মাহে রমজানে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। এই আয়োজনের মাধ্যমে ([email protected] ঠিকানায় ইমেইল করে) পাঠক তার রমজান বিষয়ক প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন উত্তর।
প্রশ্নকর্তা: মো. বিল্লাল হোসেন; পাহাড়পুর, মিরপুর, কুষ্টিয়া।
প্রশ্ন: রোজায় থাকা অবস্থায় টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজার ক্ষতি হবে কি-না জানতে চাই?
উত্তর: যদি টুথপেস্ট এর অংশ পেটের ভিতর প্রবেশ করে তবে রোজা ভেঙ্গে যাবে, তাই না করাই উত্তম।
প্রশ্নকর্তা: আলী হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন: রোজা অবস্থায় রমজানে দিনের বেলায় স্ত্রীকে চুম্বন বা আলিঙ্গন করলে তা জায়েজ কি-না?
উত্তর: যদি সিয়াম অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে সহবাস ব্যতীত চুমো দেয় বা আলিঙ্গন করে তবে তা জায়েজ। এতে সিয়ামের কোনো অসুবিধা হয় না। কেননা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করতেন, আলিঙ্গন করতেন।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) রোজা অবস্থায় (স্ত্রীকে) চুমু দিতেন এবং আলিঙ্গন করতেন। কিন্তু আপন (জৈবিক) চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন তোমাদের মধ্যে সবচে’ বেশি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার অধিকারী। (বুখারি ১৮৪১, মুসলিম ১১২১) তবে এতে যদি সহবাসে লিপ্ত হয়ে পরার আশঙ্কা থাকে তবে তা মাকরুহ হবে। আর চুম্বন বা আলিঙ্গনের কারণে যদি বীর্যপাত হয়ে যায় তবে দিনের বাকি অংশ সিয়াম অবস্থায় থেকে পরে সাওমের কাজা আদায় করবে।
কাফফারা আদায় করতে হবে না। এটা অধিকাংশ আলেমদের মত। চুমো বা আলিঙ্গনের কারণে যদি মজি বের হয় তবে এতে সিয়ামের কোনো ক্ষতি করে না। এটা অধিকতর বিশুদ্ধ মত। আল্লাহ তায়ালাই সর্বাধিক জ্ঞাত।
রোজাদারের জন্য চাই সে যুবক হোক বা বৃদ্ধ স্ত্রীকে চুমো দেওয়া এবং আলিঙ্গন করা জায়েজ যদি যৌন তাড়নার বশবর্তী হয়ে সহবাসে লিপ্ত বা বীর্যপাত হবে না বলে নিজের ওপর দৃঢ় আস্থা থাকে। চাই তার রোজা নফল হোক বা ফরজ, রমজানে হোক বা অন্য কোনো মাসে। আলিঙ্গন দ্বারা উদ্দেশ্য গায়ে গা মেলানো। যেমন: স্পর্শ করা বা জড়িয়ে ধরা। আলিঙ্গন এখানে স্ত্রী সহবাস
উদ্দেশ্য নয়। কারণ স্ত্রী সহবাস অবশ্যই রোজাভঙ্গকারী।
আল্লাহতায়ালা হাদিসে কুদসিতে বলেন, একজন রোজাদার তার চাহিদা ও খানা-পিনা আমার কারণেই ছাড়ে। অপর এক বর্ণনায় রাসুল (সা.) বলেন, সে তার স্বাদ গ্রহণ আমার জন্যই ত্যাগ করে এবং তার স্ত্রী আমার জন্যই ছাড়ে। তবে যদি ‘মজি’ বের হয় তাতে রোজা ভঙ্গ হবে না। আলেমদের বিশুদ্ধ মতানুসারে এতে তার ওপর কোনো কিছু ওয়াজিব হবে না, তবে তার জন্য উচিত হলো যৌন উত্তেজক আচরণ যেগুলো হারামে পতিত করার সম্ভাবনা রাখে তা হতে বিরত থাকা।
(আহসানুল ফাতাওয়া, ফাতাওয়া দারুল উলুম, ইমদাদুল ফাতাওয়া, বেহেশতি জেওর, মিনহাতুল বারি ৩৬৪/৪)
সামান্য পরিমাণ ধূমপান করলেও রোজা ভেঙে যায়। আর স্বেচ্ছায় ধূমপান করার কারণে কাজা-কাফফারা উভয়টি আদায় করা আবশ্যক হয়। অতএব, আপনি রোজা অবস্থায় যে কয়দিন ধূমপান
করবেন, প্রতিটি রোজার ভিন্ন ভিন্ন কাজা আদায় করবেন এবং সবগুলোর জন্য একটি কাফফারাও আদায় করবেন।
(আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাদ্দুর ১/৪৫০; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৬৮১)
জবাব প্রদানে: মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী।
লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৮
এমএ/