ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১

দাঁতের ফাঁকে থাকা কিছু গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে কি? 

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৩ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৮
দাঁতের ফাঁকে থাকা কিছু গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে কি?  অপার মহিমার রমজান

ঢাকা: অপার মহিমার মাস রমজান। আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠনের এ মাসে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রমজান মাসকে সঠিকভাবে পালনে করণীয় ও বর্জনীয়সহ নানা বিষয়ে জানার থাকে মুসল্লিদের। 

এজন্য মাহে রমজানে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। এই আয়োজনের মাধ্যমে ([email protected] ঠিকানায় ইমেইল করে) পাঠক তার রমজান বিষয়ক প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন উত্তর।

পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফের আলোকে পাঠকের জিজ্ঞাসার উত্তর দেবেন বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী।

প্রশ্নকর্তা: রফিকুল ইসলাম, পল্টন, ঢাকা।
প্রশ্ন: দাঁতের ফাঁকে গোশত বের করে আবার গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে কি না?
উত্তর: দাঁতের ফাঁকে গোশত বা সুপারির অংশ অথবা অন্য কোনো বস্তু আটকে থাকলে তা খিলাল করার মাধ্যমে বের না করে গিলে ফেললে অর্থাৎ এ অবস্থায় ওই খাদ্যদ্রব্য যদি একটি চানা বুটের পরিমাণ অথবা এর চেয়ে বেশি পরিমাণের হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।  

এর কম হলে রোজা ভাঙবে না। তবে তা যদি মুখ থেকে বের করে এনে পরে গিলে ফেলে, তখন এই পরিমাণের চেয়ে খাদ্যদ্রব্য কম হলেও রোজা ভেঙে যাবে। (সূত্র: ফাতাওয়া আলমগিরি, খ- ১, পৃষ্ঠা ২০৮)

আরও পড়ুন>>
** 
নামাজ ছেড়ে দিলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে কি?

প্রশ্নকর্তা: মো. সুজন, এয়ারর্পোট রোড, বরিশাল।
প্রশ্ন: মুখ দিয়ে রক্ত বের হলে সেই রক্ত থুথুর সঙ্গে গিলে ফেললে রোজা কি ভেঙে যাবে? 
উত্তর: মুখ দিয়ে রক্ত বের হলে সেই রক্ত থুথুর সঙ্গে গিলে ফেললে তাতে রোজা ভেঙে যাবে। তবে থুথুর চেয়ে রক্তের পরিমাণ কম হলে এবং গিলে ফেলার সময় রক্তের অনুভূতি অনুভব না হলে তাতে রোজা নষ্ট হবে না। (সূত্র: বেহেশতি জেওর, খ- ৩, পৃষ্ঠা ১১)

প্রশ্নকর্তা: রিপন মিয়া, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ।
প্রশ্ন: রমজানে দিনের বেলা ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটালে রোজার কোনো ক্ষতি হবে?
উত্তর: প্রথমত: নিজ স্ত্রী ব্যতীত সহবাস ছাড়া অন্য কোনোভাবে বীর্যপাত করা হারাম। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন: ‘(মুমিন তারা) যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে। নিজেদের স্ত্রী ব্যতীত। এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। এদের ছাড়া অন্য কিছু কামনা করলে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী হবে। ’ (সুরা মুমেনুন: ৫-৬)

আর এ ধরনের কাজে শরীরেরও ক্ষতি। রমজানের দিনের বেলা কোনো সিয়াম পালনকারী যদি এই ধরনের কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে করে ফেলে তাহলে সে গুনাহগার হবে। তার ওই দিনের সিয়াম কাজা করতে হবে। কারণ বীর্যপাত করা সহবাসের মতই।

বুখারিতে এসেছে আয়েশা (রা.) বলেন: ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) সিয়াম পালন করা অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দিতেন। কিন্তু তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে সামর্থ্য ছিলেন। ’ 

একথার দ্বারা বুঝে আসে যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না রমজানের দিনের বেলা সিয়াম অবস্থায় তার চুমো দেওয়া জায়েজ নেই। চুমো দিতে যেয়ে কামাবেগে যদি বীর্যপাত হয়ে যায় তাহলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে। তবে কাফফারা আদায় করতে হবে না। কাজা আদায় ও তওবা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত: যার ওপর সিয়ামের কাজা ওয়াজিব সে পরবর্তী রমজান আসার আগে যদি কাজা আদায় না করে তবে তার এ অলসতার জন্য তওবা ইস্তিগফার করতে হবে, কাজা আদায় করতে হবে ও প্রতিটি সিয়ামের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করতে হবে। সাহাবায়ে কেরামের এক জামাত এ ফতোয়া দিয়েছেন।  

একটি সিয়ামের কাফফারা হলো অর্ধ সা’ খাদ্য যা বর্তমানে প্রায় এক কেজি পাঁচশো গ্রাম পরিমাণ হয়ে থাকে। আল্লাহতায়ালাই সর্বাধিক জ্ঞাত।

জবাব প্রদানে: মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৮
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১ এর সর্বশেষ