ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

ম্যানেজারের কাজে অখুশি, ভয়ে মুখ খুলছেন না ক্রিকেটাররা

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১২
ম্যানেজারের কাজে অখুশি, ভয়ে মুখ খুলছেন না ক্রিকেটাররা

ঢাকা: জাতীয় দলের ম্যানেজার পদের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে আবেদন চাওয়া হয় ২০১১ সালের অক্টোবরে। অনেকগুলো আবেদনপত্র জমা হলেও সেগুলো আমলে না নিয়ে জাহিদ রাজ্জাক মাসুমকে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে দেশে গতবছর যে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজে হয়, সেখানে জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০১২ সালে দুই মাস চলে গেছে কিন্তু ম্যানেজার পদের জন্য কাউকে খোঁজা হয়নি। এশিয়াকাপ ঘনিয়ে আসায় তড়িঘড়ি করে আবারও জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাসুমকে। তার কাজে বিসিবি যে খুব খুশি তাও নয়। ক্রিকেটারদের মধ্যেও তাকে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই ম্যানেজারের কাজে অখুশি। বিসিবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় প্রকাশ্যে তারা কিছু বলতে পারছেন না। পরিচালকদের রোষানলে পড়ার ভয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ারও সাহস করেননি। পাছে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ারও ভয় কাজ করছে তাদের মধ্যে।

এশিয়া কাপে তাকে ম্যানেজার করায় কয়েজন ক্রিকেটার আক্ষেপ করে বলেন,‘আমাদের দলে এমন একজনকে ম্যানেজার করা হয়েছে যার সঙ্গে সন্ধ্যার পর যোগাযোগ করা কঠিন। ওই সময় তিনি অন্যরকম থাকেন। আমাদেরকে দুই সেট জার্সি দেওয়ার কথা থাকলেও যারা একটু শান্তশিষ্ট গোছের, তাদেরকে একটি করে দেওয়া হয়। খাবার নিয়েও নয়-ছয় করেন। ’

পাকিস্তান সিরিজের সময় খেলোয়াড়দের হাত খরচের টাকা দিতেও বিলম্ব করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন নাম গোপন রাখার শর্তে একজন ক্রিকেটার। অথচ সিরিজ শুরুর আগেই ম্যানেজার মাসুমের একাউন্টে ২৫ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিলো বিসিবি‘র কোষাগার থেকে।

যদিও ম্যানেজার মাসুম অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন,‘আমার সঙ্গে খেলোয়াড়দের সম্পর্ক খুবই ভালো। তাদেরকে চিটাগংয়ে নিয়ে গিয়ে কত আপ্যায়ন করি, তারপরেও অভিযোগ করলো! খেলার সময় আমি হোটেলেই থাকি। সন্ধ্যার পরেও তাদের সঙ্গে দেখা হয়। আমি পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব ছেড়ে দলের সঙ্গে বেশি সময় কাটাই। তারা তো স্বাক্ষর করে টাকা নেয়। একবারই শুধু টাকা দিতে দেরি হয়েছে। চট্টগ্রামে অনুশীলন ক্যাম্পের সময় বিসিবি থেকেই দেরিতে টাকা পেয়েছি, তাই দিতেও দেরি হয়েছে। ’

ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির সভায় চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন সিরিজে অন্য একজনকে এশিয়া কাপে ম্যানেজার করার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। শনিবারের সভায় তার প্রস্তাব ছিলো,‘বিপিএলে তো অনেকে কাজ করেছে। তাদের মধ্য থেকে একজনকে ম্যানেজার করলে কেমন হয়। ’ কিন্তু ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের প্রস্তাব আমলে না নিয়ে মাসুমকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সভার প্রভাবশালী কর্মকর্তাদ্বয়। ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ক্রিকেটারদের অভিযোগ সম্পর্কে সিরাজ বলেন,‘অনেক কথাই শুনতে পাই। তবে ক্রিকেটারদের কাছ থেকে কোন লিখিত পাইনি। অধিনায়কও যদি লিখিত দিতো, তাহলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতো। ’

বর্তমান ম্যানেজারের পারফরমেন্সের সন্তুষ্ট কি না জানতে চাওয়া হলে সিরাজ বাংলানিউজকে মোবাইলফোনে বলেন,‘এখন তো সময় নেই। সেজন্য বাইরে থেকে ম্যানেজার করা সম্ভব হয়নি। মাসুম যেহেতু আগের দুটি সিরিজে দায়িত্ব পালন করেছে, সেজন্য তাকে রেখে দেওয়া হয়েছে। এক মাস পরে জিম্বাবুয়ে সিরিজে আমরা নতুন ম্যানেজার নিয়োগ দেবো। ’

ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অনিয়ম অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন,‘আমরা ম্যানেজারের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। কয়েকটি আবেদনও পড়েছে। লম্বা সময়ের জন্য একজন ম্যানেজার নেওয়া হবে। ’
আগের দুই সিরিজে ম্যানেজার মাসুমের কাজে বিসিবি খুশি কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি কূটনৈতিক উত্তর দিয়েছেন,‘আমরা যেহেতু অন্য কাউকে ম্যানেজার করতে চাচ্ছি এখানেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১২




বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।