ঢাকা: ‘চাচা তোমার খবর কী? সবাই তোমার সম্পর্কে জানতে চায়। ’ দুপুরে ফিল্ডিংয়ের আগে খালেদ মাহমুদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন জেমি সিডন্স।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন সিরাজ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মঞ্জুর আহমেদ এবং উপ মহাব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জাতীয় দলের সহকারী কোচকে অনুরোধ করেছেন। মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস কথা বলেছেন। কিন্তু মাহমুদ বুঝতে পারছেন না কি করবেন!
আবাহনীর সঙ্গে চুক্তি। ক্লাব কোচিংয়ে অনেক বেশি আয়ের হাতছানি। এসবের মোহ ত্যাগ করে জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে থেকে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন মনে করছেন মাহমুদ। অবশ্য তিনি আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারেন।
আশার কথাই শুনিয়েছেন সিইও। সাংবাদিকদের বলেছেন,“এই মুহূর্তে পরিবর্তন সহজ হবে না। এছাড়া তাকে সম্মানও দেখাতে চাই আমরা। আশা করি এ মাসেই সমাধান হয়ে যাবে। ”
বিসিবির সিইও ইতিবাচক সামাধানের ইঙ্গিতই দিয়েছেন। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকেও গ্রহণযোগ্য সমাধান আশা করা হচ্ছে। প্রধান কোচের সঙ্গে মাহমুদের সমস্যা তেমন কিছু নয় বলেই মনে করেন এনায়েত হোসেন। বলেন,“সিডন্স আমাকে বলেছে মাহমুদের সঙ্গে তার কোন সমস্যা নেই। অনেক আগে একবার বাকবিতন্ডা হয়েছে। ”
কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন অন্য কথা। তার মতে,“ফিল্ডিং এবং বোলিং কোচ চলে আসায় মাহমুদ নিজেকে অবহেলিত মনে করছে। খবরদারি করতে পারবে না বলেই নানা বিষয়ে দুয়ো তুলছে। সমস্যা যখন হয়েছে তখন বিসিবির সঙ্গে আলোচনা করেনি কেন? চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখন অনেক কথা বলছে। পেশাদার কোন কোচ এভাবে বলতে পারে না। ”
পদত্যাগের খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর সংবাদ মাধ্যমে বিসিবি এবং জাতীয় দলের প্রধান কোচের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন মাহমুদ। এমনকি আইসিসির নিয়ম ভেঙ্গে বর্ণবৈষম্যমূলক বক্তব্য দিয়েছেন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। এনিয়ে খোদ বোর্ড কর্মকর্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এসবের কিছুই মনে রাখতে চাইছেন না প্রধান কোচ। তিনি আশা করছেন মাহমুদ পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করে নিবে। আগের মতোই কোচিং করাবে। জেমির বিশ্বাস,“মাহমুদ কেন এমন করছে আমি বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে বিশ্বকাপ পর্যন্ত কাজ করলে তারই উন্নতি হতো। কোচিংয়ের কৌশল শিখে যেতো। এসব এমনি এমনি শেখা যায় না। কারো কাছ থেকে শিখতে হয়। ”
নিজের অভিজ্ঞতা থেকেও সহকারী কোচের দায়িত্ব বোঝাতে চেষ্টা করেছেন সিডন্স। বলেন,“আমি ব্যাটিং এবং বোলিং বিশেষজ্ঞ হওয়ার পরও অস্ট্রেলিয়া দলের সহকারী কোচ ছিলাম। বুকাননের সঙ্গে আমার কোন সমস্যা হয়নি। প্রধান কোচকে আমি সবসময় সাহায্য করেছি। মাহমুদের কাজ আমাকে সাহায্য করা। আমি যেখানে তাকে কাজে লাগাবো সেখানেই সে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু সে চাইছে বিশেষ দায়িত্ব। সে তো অভিজ্ঞ কোচ নয়। ”
তবে মাহমুদ না থাকলেও সিডন্স কিছু মনে করবেন না। বরং অন্য একজন স্থানীয় কোচকে সহকারী হিসেবে চেয়ে নেবেন বিসিবি থেকে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন,“মাহমুদ না থাকলে আমি অন্য একজনকে নিয়ে নেব। আমি কারো জন্য অপেক্ষা করবো না। হ্যাঁ মাহমুদ অভিজ্ঞ হয়ে ওঠায় বিশ্বকাপ পর্যন্ত থেকে যেতে বলেছি। এরপর আর বলবো না। ”
সবকিছু ঠিক থাকলে দুদিনের মধ্যেই আলোচনার অবসান হতে পারে। মাহমুদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে একান্তে আলোচনায় বসবেন মঙ্গলবার। সুযোগ সুবিধা এবং আবাহনীতে কোচিং করানোর অনুমতি পেলেই হয়তো জাতীয় দলের সঙ্গে থেকে যাবেন। সমস্যার সমাধানে বিসিবিও কিছুটা ছাড় দিতে পারে বলে উর্ধ্বতন একক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১০