ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

প্রয়াত কোচের কথা স্মরণ করে কাঁদলেন রিতু

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
প্রয়াত কোচের কথা স্মরণ করে কাঁদলেন রিতু রিতু মণি/ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করেও হেরে গেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে ফলাফল পক্ষে না এলেও বোলিংয়ে নজর কেড়েছেন রিতু মণি। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলতি আসরে এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন এই মিডিয়াম পেস বোলিং অলরাউন্ডার। এমন অসাধারণ অসাধারণ কীর্তি গড়ার পর নিজের প্রয়াত কোচের কথা স্মরণ করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।

মেলবোর্নে শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) কিউই মেয়েদের ৯১ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। যেখানে মাত্র ১৮ রান খরচে ৪ উইকেট তুলে নেন রিতু মণি।

এটি এখন পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। এরপর অবশ্য ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৭৪ রানে অলআউট হয়ে ১৭ রানে হেরে যান সালমারা।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রয়াত কোচ মুসলিম উদ্দিনের কথা স্মরণ করে কেঁদে ফেলেন রিতু।  

মুসলিম উদ্দিনের হাত ধরেই ক্রিকেটে পদার্পণ করেন রিতু। বগুড়ার স্থানীয় কোচ মুসলিম উদ্দিনের হাত ধরে আরও অনেক নারী ক্রিকেটারের জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন মুসলিম উদ্দিন। সে কথা করেই সংবাদ সম্মলনে এসে কেঁদে ফেলেন রিতু।

রিতু বলেন, ‘আমি তার (মুসলিম) অধীনেই অনুশীলন শুরু করি এবং আমি আজ এখানে আসতে পেরেছি সেটাও তারই কারণে। বিশ্বকাপে অংশ নিতে আমরা যখন অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর পর তার মৃত্যু সংবাদ পাই। এটা আমাদের সবার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি, বিশেষ করে তিনি যেভাবে বাংলাদেশ দলে খেলার স্বপ্ন পূরণে ভূমিকা রেখেছেন সেজন্য। তিনি দারুণ মানুষ ছিলেন এবং আমার জীবনে অনেক বড় অবদান রেখেছেন তিনি। ’

“তার মৃত্যুর কয়েকদিন পর আমাদের একটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ ছিল এবং এই ধাক্কা সামলে ম্যাচটা খেলা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু আমি নিজেকে বললাম, ‘মুসলিম স্যার আমার মধ্যে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছিলেন। আমাকে অবশ্যই টুর্নামেন্টে নিজের সেরাটা দিতে হবে কারণ তার জন্য আমি অন্তত এটাই করতে পারি। ’ তিনি যদি আজ জীবিত থাকতেন তাহলে আমার এই দিনটা দেখতে পারতেন,” যোগ করেন তিনি।

৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৪৫টি সাদা বলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ২৯২ রান করেছেন রিতু। আর বল হাতে নিয়েছেন ১৭টি উইকেট। তবে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা পারফরম্যান্সের দেখা পেলেন আজই, যেখানে প্রথমবারের মতো ৪ উইকেট পেলেন তিনি।  

এমন দারুণ পারফরম্যান্সের রহস্য জানতে চাইলে মণি বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি খুব বেশি কিছু করিনি। শুধু লাইন আর লেন্থ ঠিক রেখেছি। ’ 

তবে নিজের এই উত্থানের পেছনে প্রধান কোচ আঞ্জু জেইন এবং সহকারী কোচ দেবিকা পালশিকারের বড় ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তিনি, ‘দেবিকা ম্যাডাম দারুণ সহায়তা করেছেন। নেটে অনুশীলনের সময় তিনি খেয়াল রাখেন যেন আমি লাইন আর লেন্থের দিকে বেশি নজর রাখি। তিনি একই জায়গায় বারবার বল ফেলার জন্য বলেন আমাকে। আঞ্জু ম্যাডামও আমাকে সেটাই করতে বলেন। বিশেষ করে ঝুঁকি না নেওয়ার দিকেই জোর দেন তারা। মাঝে মাঝে সাধারণ বোলিংয়েও উইকেট পাওয়া যায়, জুটি ভাঙা যায়, তাই আমার কোচদের এই নির্দেশনা আমি মেনে চলি। ’

শুধু কোচদেরই নয়, নিজের ভালো পারফরম্যান্সের পেছনে সাবেক বাংলাদেশ ওপেনার এবং বর্তমানে মেয়েদের দলের ম্যানেজার জাবেদ উমর বেলিমের ভূমিকাও দেখেন মণি, ‘জাবেদ উমরও আমাকে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। আশা করি এই ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস আমাকে ভবিষ্যতে আরও ভালো করতে সহায়তা করবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।