ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

পাকিস্তানের শোয়েব আছে, বাংলাদেশের মুশফিক নেই

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২০
পাকিস্তানের শোয়েব আছে, বাংলাদেশের মুশফিক নেই শোয়েব মালিক ও মুশফিকুর রহিম

চাপে পড়ে যাওয়া ম্যাচ ৫৮ রানের ইনিংস খেলে একাই বের করে নিলেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক। টপ অর্ডারে অভিজ্ঞতার মূল্য ভালোই বুঝিয়ে দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ঠিক এই জায়গাটায় শূন্যতা অনুভব করেছে বাংলাদেশ। আরও সোজা ভাষায় বললে, মুশকিকুর রহিমের অভাব ভুগিয়েছে টাইগারদের।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুক্রবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। অরথচ শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মোহাম্মস নাঈম মিলে ৭১ রান তুলে ফেলেছিলেন।

কিন্তু দুজনে মোট বল খেলেছেন ৬৬টি। টি-টোয়েন্টির বিচারে যা মোটেও মানানসই নয়।

তামিম-নাঈম জুটির রান তোলার গতি যেকোনো বিচারেই ছিল ‘স্লো’। এর মধ্যে তামিম আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে খেলেছেন ৩৯ রানের ইনিংস। বাউন্ডারি ৪টি আর ১টি ছক্কা হাঁকালেও বাঁহাতি ওপেনারের স্ট্রাইক রেট ১১৪.৭০। অন্যদিকে ৪১ বলে ৪৩ রান করেছেন নাঈম। ৩ চার ও ২ ছক্কা হাঁকানো এই ওপেনারের স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০৪.৮৭।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা লিটন দাস ১৩ বলে করেছেন ১২ রান। তার স্ট্রাইক রেট ৯২.৩০। এরপর বলার মতো রান করেছেন শুধুই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৪ বলে তার ১৯ রানের ইনিংসটি ২ চারে সাজানো, যা তার সঙ্গে বেমানান। যদিও তার স্ট্রাইক রেটই সর্বোচ্চ (১৩৫.৭১)। শেষদিকে ঝড় তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য সরকার, আফিফরাও।

বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডারের হতশ্রী চেহারার বিপরীতে পাকিস্তানের ইনিংসের দিকে তাকালে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সেখানে একজন একাই অভিজ্ঞতা দিয়েই সব পাল্টে দিয়েছেন। সেই একজন আবার দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা মালিক। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ১৫ ম্যাচে যার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫৫ রান। তার ব্যাটিং গড় ছিল ৩৭.৯১ আর স্ট্রাইক রেট ১৩০।  

রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে খেলা শোয়েব সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তিনি ছিলেন চারে। ফিফটি করেছিলেন ৩টি। জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও তাই দলে ডাকতে দেরি করেননি পাকিস্তানের নির্বাচকরা। আর মাঠে তার সেই অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই কাজে লাগিয়েছে পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচেই নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ ঠিক শোয়েবের মতো অভিজ্ঞ কাউকে মিস করেছে। সেই একজন নিশ্চিতভাবেই মুশফিক। কারণ, গত বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। খুলনা টাইগার্সের হয়ে ১৪ ম্যাচে ৭০.১৪ গড়ে তিনি রান করেছিলেন ৪৯১, স্ট্রাইক রেট ১৪৮। এর মধ্যে দুই ম্যাচে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে থেমেছিলেন তিনি আর ফিফটি করেছিলেন ৪টি।

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মুশফিক শেষ মুহূর্তে নিজেকে পাকিস্তান সফর থেকে সরিয়ে নেন। কারণ হিসেবে পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তার কথা জানান তিনি। সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু তার মতো অভিজ্ঞ একজনের অভাব ঠিকই বোধ করছে টাইগাররা। কারণ, তিনে ব্যাট করার মতো সত্যিই কেউ এই দলে নেই। তাছাড়া উইকেটরক্ষক হিসেবে বোলারদের নির্দেশনা দেওয়ার আলাদা সামর্থ্য তো আছেই।

লিটন, আফিফ, সৌম্য সবাই ওপেনার হিসেবে খেলেন। কিন্তু দলে এত বেশি ওপেনার থাকায় বাধ্য হয়ে সবার ব্যাটিং অর্ডার পাল্টে গেছে। এতে আদতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পাকিস্তানি পেসারদের গতির ঝড় সামলে টি-টোয়েন্টির গতিতে রান তোলার মতো মাহমুদউল্লাহ ছাড়া তেমন কেউ এই দলে কি আছেন? প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং দেখে আপাতত ‘নেই’ বলাই যায়।  

শুরুর দিকে দ্রুতগতিতে রান তুলতে না পারলে টি-টোয়েন্টিতে পরে সেই ‘গ্যাপ’ পূরণ করা কঠিন। তামিম আর নাঈমের ‘স্লো’ ব্যাটিং সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পরে ঝড় তোলার মতো ব্যাটসম্যান আছে মনে হলেও মুশফিকের বিকল্প আদতে এই দলে নেই। মাহমুদউল্লাহ নিজে চারে নামলেও তিনের শূন্যতা থেকেই যাচ্ছে। পরের দুই ম্যাচে এই অভাব কীভাবে পূরণ করবে বাংলাদেশ, সেটাই প্রশ্ন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।