ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজের বোলিং বৃত্তান্ত

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজের বোলিং বৃত্তান্ত ফাইল ফটো

টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের বিপক্ষে বল হাতে তিন ম্যাচেই নিস্প্রভ ছিলেন মোস্তাফিজ। দিল্লিতে ২ ওভারে ১৫ রান খরচায় থাকেন উইকেটশূন্য। পরিস্থিতির কারণে তার বোলিং কোটা পূরণ করা যায়নি। রাজকোটে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩.৪ ওভারে ৩৫ রান খরচ করলেও কোনো উইকেট পাননি। আর নাগপুরে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে কোনো উইকেটের দেখা পাননি।

নাগপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের আগে বিবর্ণ মোস্তাফিজকে নিয়ে কথা বলতে হয়েছিল প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘সে খুবই মানসম্মত বোলার এবং ম্যাচ উইনার।

এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার। খুব দ্রুতই সাফল্য তার কাছে ধরা দেবে। ’

ম্যাচের দিন সবার চোখ ছিল ফিজের দিকেই। কিন্তু সাফল্য এবারও ধরা দেয়নি তার হাতে। 'কাটার মাস্টার' নামে বিশ্ব ক্রিকেটে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া দ্য ফিজ ধুঁকছেন সাম্প্রতিক সময়ে। ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।

ম্যাচের পরদিন মোস্তাফিজের ফর্ম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক অধিনায়ক এবং নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন জানান, ‘মোস্তাফিজ পারফরমার বোলার। হয়তো রিসেন্টলি এই বছরটা ওর ভালো যায়নি। কিন্তু এর আগে যদি দেখেন সে কিন্তু সবসময় পারফর্ম করেছে। এ বছর তার ইকোনোমিটা একটু হাই। আমাদের এখন পর্যন্ত স্লগ ওভারে মোস্তাফিজই সবচেয়ে সেরা বোলার এবং স্লগ ওভারেই সবসময় ভালো বল করে থাকে। ’

টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজের বোলিং অ্যানালাইসিসে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
২০১৫ সাল: ১৯.৩ ওভারে ১২২ রান দিয়ে মোস্তাফিজ পেয়েছিলেন ৬ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ২/১৬। ১৮.৬৭ গড়ে প্রতি উইকেট পাওয়া বাঁহাতি এই পেসারের ওই বছর ইকোনমি রেট ছিল ৫.৭৪।

২০১৬ সাল: দুর্দান্ত কাটার-স্লোয়ারে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানানো মোস্তাফিজ ২০১৬ সালে ৩১.৫ ওভার বল করে ১৯৫ রান দিয়ে তুলে নেন ১৬টি উইকেট। বেস্ট বোলিং ফিগার ৫/২২। ১২.১৯ গড়ে উইকেট তুলে নেন সে বছর। তবে, ইকোনমিটা ছিল আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি (৬.১৩)।

২০১৭ সাল: ১৪ ওভার বল করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ৯৬ রান খরচায় সে বছর নিয়েছিলেন মাত্র ৫টি উইকেট। তার মধ্যে সেরা বোলিং ফিগার ৪/২১। ১৯.২০ গড়ে উইকেট নেওয়া ফিজের বোলিং ইকোনমি বেড়ে দাঁড়ায় ৬.৮৬।

২০১৮ সাল: এই বছরে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে ৪৫.১ ওভার বল করেছেন মোস্তাফিজ। যেখানে প্রথমবারের মতো মেডেন ওভারের দেখা পান (৩টি)। ৪৪৫ রান খরচায় নিয়েছিলেন ২১ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ৩/৩১। ২১.১৯ গড়ে উইকেট নেওয়া ফিজের ইকোনমিটা ভুলে যাওয়ার সামিল (৯.৮৫)।

২০১৯ সাল: ২৪.৪ ওভার বল করে রান দিয়েছেন ২১৭। উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৪টি। সেরা বোলিং ফিগার ছিল ২/৩৮। সবশেষ তিন ম্যাচে নেই একটিও উইকেট। আগের চার বছরে যা হয়নি, ফিজের বেলায় এই বছরে তাই হয়েছে। প্রতিটা উইকেট নিতে তাকে খরচ করতে হয় ৫৪.২৫ রান। এই বছর ইকোনমি ৮.৮০।

মোটাদাগে মোস্তাফিজ টি-টোয়েন্টিতে ১৩৫.১ ওভার বল করে দিয়েছেন ১ হাজার ৬৫ রান। উইকেট নিয়েছেন মোট ৫২টি। চার বা তার বেশি উইকেট দুইবার। ২০.৪৮ গড়ে তার ইকোনমি রেট ৭.৮৮।

মোস্তাফিজ ক্যারিয়ারের শুরুতে দুর্দান্ত গতি, সুইং, বাউন্সের পাশাপাশি স্লোয়ার, ইয়র্কার আর কাটার বিষে নীল করেছিলেন বাঘা-বাঘা ব্যাটসম্যানদের। সেই মোস্তাফিজের ডেলিভারি এখন যেন ব্যাটসম্যানদের চাপ মুক্তির ওভার হয়ে দাঁড়িয়েছে। টি-টোয়েন্টিতে ৫২ উইকেট শিকার করে ভারত সফরে গিয়েছিলেন দ্য ফিজ। আইপিএল, বিপিএল, পিএসএল, ইংলিশ কাউন্টির মতো বড় ইভেন্টে খেলা এই পেসার সেখানেই আটকে আছেন। টি-টোয়েন্টির সবশেষ তিন ম্যাচ থেকে কোনো উইকেটই পাননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।