ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফুটবল

রিয়ালে যেও না, নেইমারকে মেসি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৯
রিয়ালে যেও না, নেইমারকে মেসি মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ, বার্সার সফল ত্রয়ী ফের এক হতে পারেন-ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মের দলবদলের শেষ সময় যত ঘনিয়ে আসছে, নেইমার নাটক ততই জমে উঠছে। এবার এতে পরোক্ষ ভূমিকায় নেমেছেন বার্সার অধিনায়ক লিওনেল মেসি। নেইমার যতই বার্সায় ফিরতে চান না কেন, তাকে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সাবেক সতীর্থকে ফোন করে রিয়ালে যেতে নিষেধ করেছেন মেসি। সেই সঙ্গে ফিরতে বলেছেন পুরনো ঠিকানা ক্যাম্প ন্যুয়ে।

সাবেক প্রিয় সতীর্থ আর মাঠের বাইরে ভালো বন্ধু নেইমার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে খেলবেন, এমনটা ভাবতেই পারেন না মেসি। নেইমার নিজেও তা চান না।

মেসি-সুয়ারেজদের মতো বন্ধুদের ত্যাগ করে একবার যে ভোগান্তি হয়েছে, তা থেকে মুক্তি যান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। কিন্তু চাইলেই না আর হচ্ছে না। রিয়াল তো একপ্রকার মরিয়া হয়েই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নেইমার নিজে না চাইলে অবশ্য ভিন্ন কথা। আর সেটাই চাইছেন মেসি।

বার্সায় নিজের সেরা সময় পার করেছেন নেইমার। তার সঙ্গে মেসি আর সুয়াজের জুটি ছিল অবিশ্বাস্য। এই ত্রয়ীকে বলা হতো ‘এমএসএন’। তিনজন মিলে গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণভাগ। এই সম্পর্ক মাঠ ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব পর্যন্ত গড়ায়। নেইমার চলে গেলেও সম্পর্ক আজও আগের মতোই আছে।  

পিএসজিতে যাওয়ার পর নিজের ভুল বুঝতে পারেন নেইমার। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। মেসি তাকে বার্সায় থেকে যেতে সবরকম চেষ্টাই করেছিলেন। কিন্তু নেইমার তার প্রিয় বন্ধুর ছায়া থেকে বের হতেই পিএসজি গিয়েছিল, যা তার জীবনের সবচেয়ে ব্যয়র ভুল হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। তার জন্য পিএসজি ২২২ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে। এখন এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

এদিকে পিএসজি ছাড়তে মরিয়া নেইমার শেষ পর্যন্ত সেই মেসিরই শরণাপন্ন হয়েছেন। বার্সায় ফেরার রাস্তা তৈরি করে দিতে দিতে মেসির কাছে ফোনও করেছিলেন। সেসময়ই তাকে রিয়াল মাদ্রিদের অফারে রাজি না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মেসি। সবাই জানে মেসি বার্সার জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শুধু বার্সার অধিনায়কই নন, তার ইচ্ছা ও মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় কাতালান জায়ান্টরা।  

অনেক সময় মেসিকে খুশি রাখতে আগ বাড়িয়েই অনেক সিদ্ধান্ত নেন হোসে মারিয়া বার্তমেউ। এর সর্বশেষ উদাহরণ, গত মৌসুম শেষে কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দেকে যখন ক্লাবের সমর্থকরা বিদায় করে দেওয়ার দাবি তুলেছিল, মেসির নেতৃত্বে দলের সব খেলোয়াড় তখন কোচের পাশে দাঁড়ান। এর ফলাফল তো সামনেই।

নেইমারের ক্ষেত্রে মেসির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা আসলে ‘বন্ধুত্ব’ আগেরবার তার কথা শোনার পরও নেইমারকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন তিনি। এবার ক্লাবে ফিরিয়ে আনতেও বড় ভূমিকাটা আর্জেন্টাইন তারকাই রাখছেন। আর ক্লাবের সবাই জানে, মেসি আর সুয়ারেজের সঙ্গে নেইমারের সম্পর্ক কেমন। তাই মেসি চাইলে ‘না’ করার সুযোগ নেই বললেই চলে।

মেসি চাইলেও নেইমারকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা পিএসজি আর বার্সার খারাপ সম্পর্ক। এর জের ধরে নেইমারকে বার্সায় নয়, রিয়ালের কাছেই বেচার আগ্রহ ফরাসি জায়ান্টদের। আর বার্সাও পিএসজিকে নেইমারের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ দিতে রাজি নয়।  

বার্সার জন্য সুবিধা হলো, রিয়াল এখনও তাদের কয়েকজন ‘অপ্রয়োজনীয়’ খেলোয়াড়কে বেচতে পারেনি। গ্যারেথ বেল, হামেস রদ্রিগেজ ও মারিয়ানো দিয়াজকে বেচে নেইমারকে কেনার অর্থ ক্যাশ করতে চায় মাদ্রিদের ক্লাবটি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই তিনের কাউকে নিয়েই ভালো অফার পায়নি তারা।  

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী বার্সার একটি প্রতিনিধি দল পিএসজি’র অফিসে হাজির হয়েছে। তাদের দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী, নেইমারের বিনিময়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ইউরো এবং সঙ্গে ফিলিপ্পে কৌতিনহোকে পাবে পিএসজি। এখনও এ নিয়ে কোনো ফলাফলের খবর জানা যায়নি। তবে দলবদলের বাজার শেষ হওয়ার আগেই বড় সিদ্ধান্ত আসছে তাতে সন্দেহ নেই। নেইমারকে পাওয়ার লড়াইয়ে কে জিতবে, বার্সা নাকি রিয়াল?

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।