ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

আত্মসমর্পণ করলেন মুশফিকুর রহিম

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১১
আত্মসমর্পণ করলেন মুশফিকুর রহিম

ঢাকা: বিশ্বকাপের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে যেদিন ৫৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ দল তখন খেলা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাবিক আল হাসান বলেছিলেন,‘আমরা তো একদিন অত কম রানে অলআউট হয়েছি। আগের দল তো প্রতি ম্যাচেই ৭০ বা ৮০ রানে আউট হতো!

পরে আরেকটি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশ দল।

তারপরেও হার মানেননি সাকিব। কিন্তু অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম মেনে নিলেন ১৯৮৬ সালের জাতীয় দলের চেয়ে খুব বেশি উন্নতি হয়নি তাদের,“পুরনো বাংলাদেশ আর এ বাংলাদেশের পার্থক্য বলতে আমরা যে খুব বড় কোন উন্নতি করে ফেলতে পারিনি, এ পারফরমেন্সই তার প্রমাণ। ওয়ানডে হোক কিংবা টেস্ট ক্রিকেটে। আমরা হয়ত এক পা এগোচ্ছি তো আবার পাঁচ পা পিছিয়ে যাচ্ছি, আমার তাই মনে হয়। ”

‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আপনি যদি ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম না করেন, সেটা জিম্বাবুয়ে, পাকিস্তান বা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই হোক, আপনি জেতা তো দূরের কথা, প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়ে তুলতে পারবেন না। যেটা আমরা করতে পারছি না। ব্যাটসম্যানরা মাঝখানে গিয়ে নিজেদের প্রয়োগ করতে পারছে না। বাংলাদেশ টিম যে খুব উন্নতি করে ফেলেছে তা নয়। আমাদের আরও কিছু কাজ করার জায়গা আছে। ’

১৯৮৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলা বাংলাদেশ দল আগে ব্যাট করে ১৪ ইনিংসে শত রানের নিচে অলআউট হয়েছে। যার তিন ইনিংস বর্তমান দলের এবং ২০১১ সালে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। দুটি বিশ্বকাপে, অন্যটি পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিলো পাকিস্তানের বিপরীতে ৮৬’র এশিয়া কাপে। ওই ম্যাচেও ৯৪ রান করেছিলো গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের সর্বনিম্ন স্কোর ৮৬ রান ২০০০ সালে।

তার মানে দাঁড়াচ্ছে, হয় বাংলাদেশ দলের পারফরমেন্সে অবনমন হয়েছে নয়তো পাকিস্তানের এই দলটি ইমরান খানের দলের চেয়েও সেরা। তা না হলে বাংলাদেশের মাঠে বাংলাদেশকে এভাবে নাস্তানাবুদ করতে পারতো না। যদিও মুশফিকুর রহিমরা মিসবাহ উল হকের পাকিস্তানকে অনেক সমীহ করছেন,“পাকিস্তান ওয়ানডের অন্যতম সেরা বোলিং অ্যাটাক। এটাই মূল কারণ। টপ অর্ডার রানে না থাকলে আত্মবিশ্বাস এমনিতেই কম থাকে। সেদিক থেকে আমার মনে হয় সবাই একটু চাপে আছে। সবাই মুক্ত মনে খেলতে পারছে না। তারওপর দ্রুত দুই-তিনটা উইকেট পড়ে গেলে চাপ আরো বেড়ে যায়। আমাদের ব্যাটিংটা নিয়ে আরও কাজ করা দরকার। বিশেষ টপ অর্ডারের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলা দরকার। স্লো খেলে হলেও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খেলা দরকার। হয়ত আজ ১৫০ রান হলে খেলাটা অন্যরকমও হতে পারত। ”

‘আমরা বেশিরভাগ সময়ই বাজে বলে আউট হই। এর কারণ হতে পারে তারা বেশিরভাগ সময়ই আটসাট বোলিং করে। যখন একটা লুজ বল চলে আসে তখন হয়ত আমরা ওভারহিট করতে যাই। তখন হয়ত বডি পজিশন ঠিক থাকে না। বল ওপরে উঠে যায়। মিস হিট হয়ে যায়। খেয়াল রাখতে হবে যে ওভারহিট না করে গ্যাপে খেলা। ’

বিগত দুই সিরিজ ধরে স্বাগতিক সুবিধা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের উইকেট রীতিমতো ভিলেনের মতো আচরণ করছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে। এজন্য পিচের পরিচর্যাকারীও বদল করেছে বিসিবি। তাতেও কোন লাভ হয়েছে বলে মনে হয় না। পাকিস্তান সিরিজে আগের চেয়ে খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয় মুশফিকুরদের। অথচ প্রতিটি দল স্বাগতিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ অধিনায়ক স্বাগতিক সুবিধা যে কি বুঝতে পারছেন না,“সত্যি বলতে ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ কাকে বলে গত দুটো সিরিজে আমি নিজেই বুঝিনি। হোমে খেলা মানে নিজের পরিচিত মাঠ ও উইকেটে খেলবেন। আপনি ব্যাটিং করতে গেলে জানবেন যে এখানে এত রান হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে। আপনি যদি উইকেটে গিয়ে না-ই জানেন যে ১৫০ করলে হবে কিনা, নাকি ২৪০ করতে হবে, তাহলে ‘অ্যাপ্রোচ’টা ওভাবে হবে না। সেই সঙ্গে আমাদেরও প্রয়োগক্ষমতা থাকতে হবে। ”

পিচ নিয়ে আসলেই সমস্যায় আছে বাংলাদেশ দল। কোচ স্টুয়ার্ট ল পর্যন্ত জাতীয় পিচ পরিচর্যাকারি গামিনী ডি সিলভার সঙ্গে একান্তে কথা বলছেন। কি বলেছেন দূর থেকে তা বোঝা যায়নি। তবে হাতের ভাষা দেখে অনুমান করা গেছে, পিচের ওপরে যে সার্ফেস থাকে, পাতলা প্রলেপের মতো তাই বিদঘুটে করে দিচ্ছে উইকেট। ”

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।