ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

৪৬ বছরে ক্রিকেট 'ঈশ্বর'

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
৪৬ বছরে ক্রিকেট 'ঈশ্বর' শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত

শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। যাকে বলা হয় 'ক্রিকেট ঈশ্বর'। যার ঝুলিতে ঐতিহাসিক সব রেকর্ড। ১৯৭৩ সালে মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া শচীন আজ ৪৬ বছরে পা রাখলেন। যুগে যুগে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ক্রিকেটকে যেন অন্য এক জগতে পৌঁছে দিয়েছেন ভারতের এই ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’।

ক্রিকেট ইতিহাসকে পাল্টে দেওয়া এ কিংবদন্তি ১৯৮৯ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়। শুরুটা খুব একটা ভালো না হলেও  

নিজের সক্ষমতার প্রামাণ দিয়ে হয়েছেন ক্রিকেটের বিম্ময়।

২৪ বছর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কারিশমা দেখানো শচীন ২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। সেখানে তৈরি হয় এক আবেগঘন দৃশ্যের। সতীর্থদের কাঁধে চড়েই বিদায় নেন এ ক্রিকেট বিস্ময়।

শচীন টেন্ডুলকার।  ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল মুম্বাইয়ে জন্ম নেন টেন্ডুলকারের। ছেলেবেলা থেকেই তার ধ্যান জ্ঞান ক্রিকেট। ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতা মানুষটি ক্রিকেটের এমনসব কীর্তি রেখে গেছেন যেখানে আদৌ কেউ পৌঁছাতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে বছরের পর বছর।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একশত সেঞ্চুরির মালিক টেন্ডুলকার। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রানেরও মালিক তিনি। ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করা টেন্ডুলকারের ব্যাট কথা বলেছে টানা দুই যুগ।

লম্বা এ সফরে ২০০ টেস্ট খেলেছেন। ৫৩.৭৮ গড়ে করেছেন ১৫৯২১ রান। সেঞ্চুরি ৫১টি। তার ঝুলিতে রয়েছে ৪৬টি উইকেট। ৪৬৩টি ওয়ানডে খেলে ৪৪.৮৩ গড়ে তার রান ১৮৪২৬। এতে আছে ৪৯টি সেঞ্চুরি আর ৯৬টি হাফসেঞ্চুরি। আছে ১৫৪ উইকেটও।

শচীন টেন্ডুলকার।  ছবি: সংগৃহীত

শুধু ক্রিকেটই নয়, সমানভাবে পারদর্শী টেনিসেও। ছোটবেলায় টেন্ডুলকারের জন ম্যাকেনরোকে আদর্শ মেনে টেনিস খেলায় মেতে ওঠেন। তবে পরবর্তীতে ক্রিকেটেই সব ধ্যান জ্ঞান দেন।

টেন্ডুলকারের জীবনের সবচেয়ে মজার ঘটনার মধ্যে একটি হলো তিনি পাকিস্তানের হয়েও খেলেছেন। ১৯৮৭ সালে ২০ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার স্বর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক প্রদর্শনী ম্যাচে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি ক্রিকেট দলের হয়ে তিনি পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে নামেন।

১৯৯৯ সালে মোহম্মদ আজহারউদ্দীনের পর ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন টেন্ডুলকার। কিন্তু তার অধিনায়ক জীবন খুব একটা সফল ছিল না। অধিনায়কত্ব লাভের পর ভারত-অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলে ০-৩ ফলাফলে পরাজিত হয়। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা ভারত সফরে এসে ভারতকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করলে অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেন্ডুলকার পোর্ট অফ স্পেন টেস্টে তার উনত্রিশতম শতরান করে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের রেকর্ড স্পর্শ করেন। ২০০২ সালে আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিশতম টেস্ট শতরান করে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের রেকর্ড ভেঙে দেন। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্টে মোট ১২ হাজার রান করে ব্রায়ান লারার রেকর্ড ভেঙে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের বিশ্বরেকর্ড গড়েন।

২০১২ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে শততম শতরান করে বিশ্বরেকর্ড করেন। ২০১২ সালে ২৩ ডিসেম্বর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।

টেন্ডুলকারের উল্লেখযোগ্য সম্মাননা ও পুরস্কারগুলো-
১। আইসিসি পুরস্কার - স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি, ২০১০-এর সেরা ক্রিকেটার
২। পদ্মবিভূষণ, ভারতের ২য় সর্বোচ্চ পুরস্কার, ২০০৮
৩। আইসিসি বিশ্ব একদিনের আন্তর্জাতিক একাদশে খেলোয়াড় হিসেবে অন্তর্ভুক্তি: ২০০৪ ও ২০০৭
৪। রাজীব গান্ধী পুরস্কার (খেলা): ২০০৫
৫। ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ২০০৩-এ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়
৬। মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক সর্বোচ্চ নাগরিকের পুরস্কার লাভ: ২০০১
৭। পদ্মশ্রী, ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিকের পুরস্কার, ১৯৯৯
৮। খেলাধুলায় ভারতে সর্বোচ্চ সম্মাননা হিসেবে রাজীব গান্ধী খেল রত্ন লাভ: ১৯৯৭-৯৮
৯। উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটার: ১৯৯৭
১০। ক্রিকেটে অভূতপূর্ব ফলাফল করায় ভারত সরকার কর্তৃক অর্জুন পুরস্কার লাভ।
১১। অক্টোবর, ২০১০-এ লন্ডন স্পোর্ট এন্ড দ্য পিপল্‌স চয়েজ এওয়ার্ড হিসেবে দি এশিয়ান অ্যাওয়ার্ড লাভ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
এমকেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।