ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

খেলা

নারী ক্রিকেট

টিকিট নেই তবুও বাজেট ৫ লাখ টাকা!

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১১
টিকিট নেই তবুও বাজেট ৫ লাখ টাকা!

ঢাকা: খেলা আয়োজন তো নয় টাকার শ্রাদ্ধ। কোটি কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র কোষাগার থেকে।

নারী বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বাছাই প্রতিযোগিতায় খরচ দেখানো হচ্ছে ৪ কোটি ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৮ টাকা।

টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান এই বিশাল অঙ্কের বাজেট পেশ করেছেন বিসিবির কাছে। খরচের খাতগুলো দেখে চটে গিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল। প্রথমে বাজেট অনুমোদন করতে রাজি হননি। সূত্র জানায়, গত ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির জরুরী সভায় এনিয়ে রেদোয়ান এবং প্রভাবশালী পরিচালক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুলের সঙ্গে বাকবিতন্ডাও হয় বিসিবি সভাপতির। বিসিবি কার্যালয়ের বারান্দা থেকেও উত্তপ্ত বাক্যগুলো শোনা গেছে। যদিও শেষপর্যন্ত বিশাল অঙ্কের ওই বাজেট অনুমোদনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

লজিস্টিক এবং প্রোটকল কমিটির জন্য বাজেট করা হয়েছে ২ কোটি ৭ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা। মেডিক্যাল কমিটির জন্য ৩ লাখ ১৮ হাজার ২০০ টাকা, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স কমিটির জন্য ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটি বিভাগের জন্য ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সাউন্ড সিস্টেম ও ব্রান্ডিংয়ের জন্য ৫৭ লাখ ২ হাজার ৯৫৮ টাকা, গেট পাহারা ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির জন্য ৪০ লাখ, টিকিট অ্যান্ড সিটিং কমিটির জন্য ৫ লাখ ৬ হাজার ২০০ টাকা, আম্পায়ার কমিটির জন্য বরাদ্দ ১২ লাখ ২৭ হাজার ৩০০ টাকা, ইন্স্যুরেন্সের জন্য ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৫ লাখ টাকা।

সবেচেয়ে বেশি খরচ ধরা হয়েছে লজিস্টিকে। এই খাতে একটু বেশি খরচ হতেই পরে। কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রচারণা এবং সাউন্ড সিস্টেমের জন্য ৫৭ লাখ টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। হোটেল শেরাটনের বলরুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বলতে অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়কদের মঞ্চে ক্যাট ওয়াক। সাদামাটা সান্ধ্যভোজ এবং শোকেসে সাজিয়ে রাখার জন্য একটি করে ছোট কাঠের ব্যাট। ওহ এশিয়াটিকের আয়োজনে দু’একটি নৃত্যও হয়েছে। আর প্রচার-প্রচারণা বলতে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের রাস্তায় এবং বিকেএসপিতে খেলোয়াড়দের কয়েকটি ফেস্টুন। আর সাউন্ড সিস্টেম কি পুজোয় লাগছে বলা যাচ্ছে না।

গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটি ভাগের জন্য যে ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ। তার একটা অংশ বিকেএসপি তিন নম্বর মাঠে অস্থায়ী তাবু, জেনারেটর এবং কার্পেটের পেছনে খরচ হচ্ছে। কিন্তু টুর্নামেন্টের সমন্বয়কারী আলী আহসান বাবু যে ব্যাখ্যা দিলেন তা শুনলে যে কেউ হাসবেন। বাংলানিউজকে তিনি জানিয়েছেন,“উইকেট রক্ষণাবেক্ষণ এবং মাঠ পরিচর্যার কাজে খরচ হচ্ছে ওই টাকা। ” অথচ মাঠের সব কাজ করছে বিসিবির নিজস্ব গ্রাউন্ডসম্যান এবং কিউরেটর।

গেট রক্ষক এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর খাবার সরবরাহ বাবদ একটা খরচ অবশ্যই করছে বিসিবি। কিন্তু টিকিট এবং সিটিং কমিটির জন্য ৫ লাখ ৬ হাজার ২০০ টাকা কোথায় গেছে? অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবি একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, টুর্নামেন্ট সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জন্য কার্ড তৈরির পেছনে ওই খরচ দেখানো হচ্ছে।

বিশাল অঙ্কের খরচের একটা অংশ আসছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) থেকে। বিসিবিকে তারা দিচ্ছে তিন লাখ ১৭ হাজার মার্কিন ডলার। অতিরিক্ত খরচ সম্পর্কে জানার জন্য টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন,“বিসিবি সভাপতি টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান। তিনিই খরচ সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত এক পয়সাও খরচ হচ্ছে না। ওটাই বাজেট। ”

বিসিবি সভাপতির মোবাইলফোনে অনেকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সেলফোন দুটো টানা বেজেছে। তিনি বাটন দাবাননি। সেজন্যই এ সম্পর্কে বিসিবি সভাপতির মতামত দেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।