ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

আফ্রিদির স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১১
আফ্রিদির স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত বাংলাদেশ

ঢাকা: শহীদ আফ্রিদির স্পিন ঘূর্ণির ফাঁদে পড়ে একশ রানের ঘরও পার হতে পারেনি বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও সাফল্য পেয়েছেন বোলাররা।

তাই ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে পাকিস্তান। মিসবাহ উল হকের দল ৫ উইকেটে হারিয়েছে টাইগারদের।

বাংলাদেশ: ৯১ (ওভার ৩০.৩)
পাকিস্তান: ৯৩/৫ (ওভার ২৫.৪)
ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী

৯১ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বাগতিক বোলারদের তোপের মুখে পড়ে পাকিস্তান। দলীয় ৪৪ রানের মধ্যে সফরকারীদের চারজন ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরায় বাংলাদেশ। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরান ফরহাতকে (১৬) দিয়ে শুরুটা করেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন।

দুই উইকেট শিকার করে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে কাঁপন ধরিয়ে দেন পেসার রুবেল হোসেন! তার বলে মোহাম্মদ হাফিজ (২২) ক্যাচ আউট আর সরফরাজ আহমেদ (২) ধরা পড়েন মুশফিকুর রহিমের গ্ল্যাভসে। অবশ্য এর আগে অভিজ্ঞ ইউনিস খানকে (২) আউট করেন সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশের সুখস্মৃতি বলতে এই চার উইকেট শিকারই! এরপর আরও এক উইকেট হারায় পাকিস্তান। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছতে সমস্যা হয়নি তাদের। শেষপর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে পাকিস্তান। একই সঙ্গে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় পাকিস্তান।

শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া পাকিস্তান পরিস্থিতির মোকাবেলা করে দ্রুতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়। অথচ এর আগে টস জিতে ব্যাট করে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ৯১ রানে। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন তামিম। মোহাম্মদ হাফিজের বলে এলবিডাব্লু’র ফাঁদে পড়েন চোটের জন্য সফরকারীদের বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে না খেলা বাঁহাতি এই ক্রিকেটার। দলের রান তখন শূন্য।

দলীয় স্কোরের খাতা খোলার আগে এক উইকেট হারিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতি অনুসরণ করছিলেন নাফিস ও নাঈম। তাই ৫ ওভারে দলের স্কোর ২ রান। বেশিক্ষণ নীতিতে অটল থাকতে পারেননি নাঈম। উমর গুলের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে সিøপে মিসবাহ উল হকের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৫ রান করেন এই অলরাউন্ডার।

বিপদে জ্বলে উঠে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। পারফরমেন্স দিয়ে গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে নিজেকে নুতন ভাবেই চিনিয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। কিন্তু পাকিস্তানের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি তিনি। দলের বিপর্যয়ে সাহায্য তো করতে পারলেন না। উল্টো ঠেলে দিলেন বিপদের মুখে!

শোয়েব মালিকের বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিম (১১)। আসলে ম্যাচে বাংলাদেশকে আরও পিছিয়ে দেন অধিনায়ক! এরপরই অসবর ভেঙ্গে পাকিস্তানের জাতীয় দলে ফেরা শহীদ আফ্রিদির রোষানলে পড়ে বাংলাদেশ। ঢাকায় আসার আগে তার স্পিন ঘূর্ণিতে নাকাল হয়েছে শ্রীলঙ্কার মতো দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের নিরপেক্ষ ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জিততে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন এই অলরাউন্ডার।

সতীর্থদের আউট হওয়ার দৃশ্য একপাশে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস। এই দৃশ্য তাকে বেশিক্ষণ দেখার সুযোগ দেননি আফ্রিদি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে (৭) ক্যাচ আউট করেন তিনি। আর নাফিসের পরই আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১)। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় খেলতে পারেননি ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে। তাই সুস্থ হয়ে ছন্দে ফিরতে পারছেন না সফরকারীদের বিপক্ষে!

টপ অর্ডার ও মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দলীয় স্কোর বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। গুটিয়ে গেছে ৯১ রানে। চমক দেখাতে পারেনি লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরাও। সবচেয়ে বেশি ২১ রান করেন নাসির হোসেন। এছাড়া সাকিব আল হাসান ১৫, রুবেল হোসেন ১৫ (অপ:) ও মুশফিক ১১ রান করেন। বাকি ব্যাটম্যানদের কেউই পৌঁছাতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে।  

একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে ধ্বস নামান আফ্রিদি। এজন্য তার খরচ হয় ২৩ রান। এছাড়া মোহাম্মাদ হাফিজ, উমর গুল, আইজাজ চিমা, শোয়েব মালিক ও সাঈদ আজমল নেন একটি করে উইকেট।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।