ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

ক্রিকেটে পুরস্কার পেলে সবার আগে বাবাকে মনে পড়ে: রুমানা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
ক্রিকেটে পুরস্কার পেলে সবার আগে বাবাকে মনে পড়ে: রুমানা রুমানা আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

‘ছোটবেলায় আমার বোলিং লাইন দেখে বাবা খুব অবাক হতো। তখন থেকেই বাবার আফসোস ছিল, আমি ছেলে হলে অবশ্যই আমাকে ক্রিকেটার বানাতেন। মেয়েদের ক্রিকেটের তখন এদেশে চল নেই বলেই বাবার ভাবনাটা এমন ছিল। আর এখন তো আমি সত্যি ক্রিকেটার।’

সম্প্রতি বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২৭ বছর বয়সী লেগ স্পিনার রুমানা আহমেদ বলছিলেন এমনটি।

জাতীয় ক্রিকেট দলে নাম লেখান ২০০৯ সালে।

এর প্রায় বছরখানেক আগে ২০০৮ সালে হারিয়েছেন বাবাকে। তবে তাতেও দমে না গিয়ে বরং বাবার স্বপ্নটাকেই লালন করে আজ এতটা পথ এসেছেন তিনি। জানালেন, সফলতা আর বড় হবার পেছনে সবচেয়ে বেশি যে মানুষটি ছিলেন, তিনি তার বাবা।

‘আমার আম্মা ব্যক্তিগতভাবে ধর্মীয় দিক থেকে মেয়েদের খেলাধুলা ততটা পছন্দ করেন না। আর এই জায়গাটাতেই আমাকে সবসময় সাপোর্ট দিয়েছে বাবা। আম্মাকে তিনি প্রায়ই বলতেন, দেখো, আমার মেয়ে একদিন অনেক বড় খেলোয়াড় হবে। খুব নাম করবে। সত্যি, বাবার কথাটা মিথ্যা হয়নি’ বলেন রুমানা।

প্রত্যেকটি মেয়ের কাছেই বাবা একজন আদর্শ ব্যক্তি। আর বাবার প্রতি ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ভালোবাসাটা সবসময়ই একটু বেশি। তা থেকে ভিন্ন নয় এই ক্রিকেটারও। বললেন, ‘বাবা প্রত্যেকদিন আমাকে স্কুলে নিয়ে যেতেন এবং স্কুল থেকে নিয়ে আসতেন। অধিকাংশ সময়েই এই কাজটা মায়ের থেকে বাবা বেশি করতেন। মাঝে মাঝে তো বাবার পরিবর্তে আমাকে অন্যকেউ স্কুল থেকে আনতে গেলে আমি কেঁদে দিতাম। ’

সাফল্যের দেখা পেলে যেকোনো সন্তানেরই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে বাবা-মাকে। রুমানারও তাই।  ‘ক্রিকেটে কোনো পুরস্কার পেলে সবার আগে বাবাকে মনে পড়ে। এই ব্যাপারে আম্মাও বলেন, এখন তোর বাবা থাকলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যেত। ’

রুমানা বলেন, ‘প্রথম যখন ডিভিশন লীগে খেলি, সেই টুর্নামেন্টে আমরা অনেক ভালো করেছিলাম। এরপর সেখান থেকে যখন পুরস্কার দিলো, আমি এনে সেটা বাবার হাতে দিয়েছিলাম। বাবা পুরস্কার হাতে এলাকার সবাইকে দেখিয়েছিলেন, আর বলেছেন এটা আমার মেয়ে পেয়েছে। বাবার খুশি দেখে খুব ভালো লেগেছিল সেদিন। ’

‘বর্তমানে শত ব্যস্ততা আর সাফল্যের মাঝেও কোথাও যেন লুকিয়ে থাকেন বাবা। তাইতো ঈদের দিন সকালে বাবাকে খুব মিস করি। ছোটবেলায় প্রত্যেক ঈদে বাবা আমাকে নিজ হাতে গোসল করিয়ে দিতেন। সাবান মাখিয়ে দিতেন, মাথায় পানি ঢেলে দিতেন। এই জিনিসগুলো খুব মনে পড়ে আমার। যার কারণে ঈদের দিন স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য দিনের থেকে বাবাকে অনেক বেশি মিস করি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা; জুন ১০, ২০১৮
এইচএমএস/এমকেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।