ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

এবার তীরে ডুবলো না তরি, ভিড়লো জয়ের বন্দরে

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
এবার তীরে ডুবলো না তরি, ভিড়লো জয়ের বন্দরে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিযোগিতামূলক কোনো টুর্নামেন্টের বড় বা হাইভোল্টেজ ম্যাচ মানেই যেন শেষ মুহূর্তে এসে অসহায় আত্মসমর্পণ। দুই রানে হার তো বটেই, এক রানে হারার মতো পরিস্থিতিতে পর্যন্ত পড়তে হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের। বিশেষ করে ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে হারের পর সাকিব-মুশফিকদের কান্না বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তরা আজও ভুলতে পারেননি।

এমনভাবে হারতে হারতে ‘তীরে এসে তরি ডোবানোর’ কথাটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘সমার্থক’ হয়ে যাচ্ছিল। রোববার (১০ জুন) সেই কথাটাকে উড়িয়ে দিলেন সালমা খাতুন- রুমানা আহমেদরা।

তীরে এসে তারা খেই হারাননি, কুয়ালালামপুরে মেয়েদের এশিয়া কাপের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে জয়ের বন্দরেই ভিড়িয়েছেন তরি। বাংলাদেশের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে ‘এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন’ খেতাব।

দেশবাসীর ঈদ উপহার এশিয়া কাপ

কুয়ালালামপুরের কিনরারা একাডেমিতে জয়ের জন্য ১১৩ রানের টার্গেট ছুঁতে শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিলো ৯ রান। তখন হাতে ৫ উইকেট। হারমানপ্রিত কৌরের প্রথম বলে ১ রান নেওয়ার পর টাইগ্রেসদের দরকার হয় ৫ বলে ৮। দ্বিতীয় বলে রুমানা চার হাঁকালে ব্যবধান কমে এসে দাঁড়ায় ৪ বলে ৪ রানের। তৃতীয় বলে এক রান নেওয়ার পর কিন্তু চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পর পর দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।  

রুমানা রান আউট হওয়ার আগে পঞ্চম বলটিতে আসে আরও ১। শেষ বলে পরিসংখ্যানটা দাঁড়ায় ১ বলে ২। জাহানারা আলম বলটা উড়িয়ে মেরেই দৌঁড়াতে থাকেন। তার সঙ্গে অধিনায়ক সালমা ইসলাম দুই দফায় দৌঁড়ে লাল-সবুজের দলকে ভাসায় আনন্দের জোয়ারে।

অথচ ২০১২ সালের এশিয়া কাপেও এভাবেই শেষ ওভারে ৯ রানের সামনে ছিলো বাংলাদেশ। ক্রিজে ছিলেন অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ ও শাহাদাত হোসেন। পারেননি তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র দুই রানে হেরে গিয়ে নিজেরাও কেঁদেছিলেন, কাঁদিয়েছিলেন গ্যালারিকেও।
 
২০১৪ সালে আবারও সেই দুই রানের হার। ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে  দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচের শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৭ রান। প্রথম ৫ বল থেকে এসেছিলও ১৪ রান। শেষ বলে যখন ৩ রান দরকার, থিসারা পেরেরার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান দারুণ খেলতে থাকা আনামুল হক বিজয়। বাংলাদেশ হেরে যায় দুই রানে।

২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপে দুরন্ত খেলেও ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে একেবারে উড়ে যাওয়ার দুঃখ এখনও পোড়ায় মাশরাফিদের। এই দুঃখ আরও বেড়ে যায় সে বছর ভারতের বেঙ্গালুরুতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১ রানের হারে।

সেদিন জয়ের একেবারে কাছে গিয়েও হারের বেদনায় পুড়তে হয় বাংলাদেশকে। মাহমুদুল্লাহ-মুশফিকুর রহিমদের উচ্চাভিলাষী শটে ভেসে যায় ভারতকে তাদের মাটিতে হারিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন।

সেই পুরনো দুঃখই সম্প্রতি মনে করিয়ে দেয় আফগানিস্তান। দেরাদুনে সদ্য শেষ হওয়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে আবারও বাংলাদেশকে মেনে নিতে হয় ১ রানের হার।

বাংলাদেশের ঘরে ‘প্রথম’ এশিয়া কাপের শিরোপা এলেও ভারতের ক্রিকেটে লেগে গেছে এমন ‘প্রথম’ এক কালো ছাপ। এবারের আগে কোনো এশিয়া কাপে ভারতীয় নারী দল শিরোপা হারেনি। টানা ছয় আসর শিরোপা ধরে রাখার পর সপ্তম আসরে এসে বাংলাদেশের কাছেই হারতে হলো তাদের।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
এমকেএম/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।