ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ক্রিকেট

নফল নামাজ পড়ে রুমানার মায়ের শুকরিয়া আদায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
নফল নামাজ পড়ে রুমানার মায়ের শুকরিয়া আদায় খুলনার বাসায় রুমানার মা ও বোনসহ পুরো পরিবার/ছবি: মানজারুল ইসলাম

খুলনা: এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। দ্বিপক্ষীয় সিরিজের বাইরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটিই বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা। এ ম্যাচে খুলনার মেয়ে রুমানা আহমেদ সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন।

মেয়ের এ সাফল্য ও ক্রিকেটারদের বিজয়ের শুকরিয়া আদায় করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সেজদায় অবনত হয়ে নফল নামাজ পড়েছেন রুমানার মা জাহানারা বেগম।

রোববার (১০ জুন) মহানগরীর খালিশপুরের ১৬/৪ নয়াবাটি ঈদগাহ রোডের জাহানারা কটেজে বসে টেলিভিশনে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জয় উপভোগ করেছেন রুমানার মা।

বিজয় পরবর্তী বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, জয়ের পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে নফল নামাজ পড়েছি। আল্লাহর ইচ্ছা না থাকলে কোন কিছু হয় না। সেজন্য আল্লাহকে কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।

বিজয়ের পর রুমানার সঙ্গে কথা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিজয়ের পর কোন কথা হয়নি। ও খুব ব্যস্ত। ভোরে কথা হয়েছে।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় রুমানার মাঈদে রুমানা বাড়ি আসবে কি-না জানতে চাইলে তার মা বলেন, মনে হয় আসতে পারবে না।

রুমানা আহমেদের ছোট বোন সুমনা আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ইতিহাস গড়া এ বিজয়ে দেশবাসীর মতো আমাদের পরিবার ও খুলনাবাসী গর্বিত-আনন্দে উল্লসিত। খুলনার কৃতী সন্তান আমার বোন রুমানা ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। পরিবারের সদস্য হিসেবে এটা আমাদের খুবই গর্বের।

তিনি বলেন, খেলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে টিভির সামনে বসেছিল পুরো পরিবার। ম্যাচ জয়ের পর মা আনন্দে শুকরিয়া নামাজ আদায় করেন।

সুমনা জানান, রুমানার সাফল্যে তাদের বাবা শেখ হাতেম আহমেদ বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। তিনি বলেন, এশিয়া কাপে ছয়বারের শিরোপা জয়ী ভারতকে তিন উইকেটে হারায় লাল-সবুজ প্রমীলা ক্রিকেট বাহিনী। এ জয়ের একজন অংশীদার আমার বোন রুমানা। এছাড়া এশিয়া কাপে ভারতের সঙ্গে দুই খেলায় ম্যাচ সেরা হয়েছে রুমানা। এ কারণে আনন্দটা একটু বেশি।

সুমানা বলেন, আমার তিন বোন এক ভাই। ছোটবেলা থেকেই ভীষণ ক্রিকেট পাগল ছিলো রুমানা। তার সফলতাও পেয়েছে।

১৯৯১ সালের ২৯ মে রুমানা আহমেদ খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি লেগ স্পিনার তিনি। রুমানা বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অন্যতম অল-রাউন্ডার। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ওডিআই হ্যাট্রিকের বিরল কীর্তিগাথার রচয়িতা তিনি।

রুমানার একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে ২০১২ সালের ২৫ আগস্ট, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট। ২০১৬ সালে আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিকে ঐতিহাসিক হ্যাট্রিক করেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে তার এ হ্যাট্রিকটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম। ওডিআই সিরিজে তিনি ম্যান অব দ্যা সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।
রুমানার টি-টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে ২০১২ সালের ২৮ আগস্ট আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে।

১২ জানুয়ারি, ২০১৭ তারিখে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ৫ ওডিআইয় সিরিজে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন রুমানা আহমেদ।

বাংলাদেশ ২০১০ সালে চীনের গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের মহিলা ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চীন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রৌপ্যপদক লাভ করে। রুমানা ওই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অন্যতম খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি ব্যাট এবং বলে উভয়ই ভালো দক্ষতা দেখাতে সামর্থ্য হন।

এদিকে এশিয়া কাপে শিরোপা জয়ে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে থাকা সালমা খাতুনের বাড়িও খুলনায় হওয়ায় আনন্দে ভাসছেন গোটা খুলনাবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা,  জুন ১০ , ২০১৮
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।