ঢাকা: একটি বিষয় ঘুরে ফিরে আলোচনায়; উইকেট কেমন হবে? প্রত্যেক ক্রিকেটারের একই উত্তর ‘উইকেটের ওপর তো আমাদের হাত নেই’। আসলে চট্টগ্রামের উইকেট থেকে বাংলাদেশ দল যতটা সহায়তা পেয়েছে এরপর উইকেট নিয়ে আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রধান কিউরেটর বদিউল আলমের ওপর তাই পাহাড় সমান চাপ। অস্থির অস্থির দেখাচ্ছিলো তাকে। দেখে মনে হয়েছে হাঁটতে-চলতে পায়ে জোর পাচ্ছিলেন না। অদৃশ্য কোন শক্তি ভয় দেখিয়ে গেছে। কেউ তাকে ভয় দেখায়নি, এমনিতেই চাপে। বিশেষ করে ওয়ানডের উইকেট যুতসই না হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে। তবুও বদিঊল আলমের কাছে উইকেটের সম্ভাব্য আচরণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে মুখ ভার করে শুধু বললেন,“উইকেট কেমন হবে আমিও বলতে পারবো না। চেষ্টা তো করেছি ভালো উইকেট গড়তে। ”
অন্য দুই কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু এবং গামিনী ডি সিলভার অনুমান উইকেট থেকে সুবিধা নাও পেতে পারে বাংলাদেশ দল। পিচের ওপরের সার্ফেসের সঙ্গে ভেতরের মশলা ভালো ভাবে মেশেনি। বাইরে থেকে ঘুমটা টানা। ভেতরে উথালপাথাল অবস্থা। অতএব উইকেটের ওপর ক্রিকেটারদের নির্ভরতা কম হলেই ভালো। জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তো আগের দিনই (বৃহস্পতিবার) বলে রেখেছেন,“দেশের মাঠে উইকেটের একটা ভূমিকা তো থাকেই। তবে আমার মনে হয়, উইকেট নিয়ে বেশি চিন্তা করলে আমাদের জন্য ভালো হবে না। কারণ সেটি তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। আমরা উইকেট থেকে যতোটা সুবিধা আশা করি, ততটা না পেলে হাত গুটিয়ে বসেও থাকতে পারব না। আমরা অনেক পরিশ্রম করছি, আমার মনে হয় ওই পরিশ্রমের ওপর এবং স্কিলের ওপর বিশ্বাস রাখলে ভালো হবে। ”
অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও সাকিবের অভিজ্ঞার মূল্যায়ন করেছেন। তিনিও মনে করেন মিরপুরে উইকেট আর যাই হোক চট্টগ্রামের মতো হবে না। তার ভাষায়,“এখানকার উইকেটে অনেক রান হয়। বড় বড় স্কোরও আছে। কিন্তু চট্টগ্রামে তা হয় না। পেস বোলারদের জন্য সুবিধা থাকে এখানে। আমরা রুবেলকে এই উইকেটে অনেক ভালো বল করতে দেখেছি। কিন্তু স্পিনারদের জন্য তেমন সুবিধা থাকে না। একেবারে যে সুবিধা পায় না তাও না। একটু টার্ন থাকলেও থাকতে পারে। ”
যে দলের বোলিংয়ের শক্তি স্পিনে, তাদের বোলাররা টার্ন না পেলে তো বিপদেরই কথা। অবশ্য জাতীয় কিউরেটর গামিনী ডি সিলভা শেষপর্যন্তত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন বদিউল আলমের নির্দেশনায় তৈরি উইকেটকে ঘষামাজা করে একটা ফর্মে নিয়ে আসার জন্য। চট্টগ্রামের মতো না হলেও কাছা কাছি আচরণের উইকেট যাতে হয়।
যদিও মিরপুরের কালো পিচ অনেক সময় ভৌতিক আচরণ করে থাকে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তা ভালোই টের পেয়েছে বাংলাদেশ দল। ওই ম্যাচগুলো ওয়ানডের। শনিবার থেকে যে খেলা হবে তা টেস্ট ক্রিকেট। অন্তত পাঁচটি দিন খেলার রসদ নিয়ে নামতে হবে বাংলাদেশ দলকে। এরপর ফল যাই হোক মেনে নেওয়া ছাড়া কিছু করার নেই।
উইকেটের রহস্য বোঝার জন্য শুক্রবার উভয় দলের খেলোয়াড়, কোচ কর্মকর্তারা একবার করে তিন নম্বর পিচের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শেষপর্যন্ত তারা কি বুঝেছেন তা বোঝার উপায় ছিলো না। আসলেই কি তারা কিছু বুঝেছেন?
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১১