ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

খেলা

সানির বলে কুপোকাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ

সেকান্দার আলী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১১
সানির বলে কুপোকাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ

চট্টগ্রাম: অলৌকিক হস্তক্ষেপ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের ফলাফল ওলটপালট হওয়ার নয়। ফলাফল পরিষ্কার, ড্র।

শেষদিন পর্যন্ত খেলাটা তাই নিয়মরক্ষা। নিষ্ফলা ম্যাচেও যে অনেক ব্যক্তিগত অর্জনের সুযোগ থাকে, বাংলাদেশ দল এখন সেদিকেই ঝুঁকছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অল-আউট করা গেলে কোন একজন রেকর্ডের ফাঁকগলে ঢুকেও যেতে পারেন। বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানির সম্ভাবনাই বেশি। অভিষেকে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকারের দারুণ সুযোগ তার সামনে। এরই মধ্যে চার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন। পঞ্চম এবং শেষদিনে আর এক উইকেট পেলেই টেস্ট অভিষেকে পাঁচ উইকেট অর্জনের কৃতিত্ব সানির। এই মঞ্চে দেশের আরো তিন ক্রিকেটার আরোহন করেছেন, প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় (ভারতের বিপক্ষে), পেস বোলার মঞ্জুরুল ইসলাম ও অফ স্পিনার মাহমুদউল্লাহ।  

বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা যেখানে পেয়ে বসেছিলো, সেখানে শেষ দুই দিন খেলা হলেও কিছু অর্জন তো থাকবেই। আর কিছু না হলেও ঢাকা টেস্টের প্রস্তুতি হয়ে যাবে। চতুর্থ দিন সকাল ১০টা যখন ফের খেলা শুরু হয়, তখন চালকের আসনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে থিতু হওয়ার আগেই ফিদেল এডওয়ার্ডসের ওভারের প্রথম বলে আউট করে দেন।

পরে যা হওয়ার তাই হয়েছে শুধু সপ্তম উইকেটে নাসির হোসেন এবং নাঈম ইসলামের মধ্যে ৪৩ রানের জুটি ছাড়া। নাঈম ইসলাম একপ্রান্ত আগলে রেখেছেন, অন্যপ্রান্ত থেকে উইকেট খসে পড়েছে। অবসর থেকে ফেরা শাহরিয়ার নাফিস প্রথম দিনের ২১ রানের সঙ্গে যোগ করেছেন ১১ রান। যার বলে চোট পেয়েছিলেন সেই এডওয়ার্ডসের শিকার তিনি। নাসির ৩৪ রানে আউট। নাঈম ৩৬ রানে অপরাজিত। প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাটিং করে ১৩১ বল খেলেছেন নাঈম ইসলাম।

৯ উইকেটে ৩৫০ রান হওয়ার পর নাঈম এবং রুবেল হোসেনকে সাজঘরে ফিরিয়ে নেন অধিনায়ক। আগে ব্যাট করে ইনিংস ঘোষণার মতো কৃতিত্ব মুশফিকুরই প্রথম দেখালেন। যদিও আগে আরো তিনবার ইনিংস ঘোষণা দেওয়ার মতো সাহস দেখিয়েছেন বাংলাদেশর অধিনায়করা। ২০০৪ সালে সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন হাবিবুল বাশার। ওই টেস্ট ড্র হয়েছিলো। ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন বাশার। প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অধিনায়ক আশরাফুল ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন।  

সে যাই হোক, দলের মোট রান আকর্ষণীয় না হলেও প্রথম আট জনের নামের পাশে দুই অংকের সংখ্যাটা দেখতে বেশ। সংখ্যাগুলো আরেকটু বড় হলে দারুণ হতো।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিনের খেলা শেষ করেছেন পাঁচ উইকেটে ১৪৪ রান নিয়ে। ফলোঅন এড়াতে এখনো ছয় রান বাকি। হাতে পাঁচ উইকেট বর্তমান। ফলোঅন হয়তো হচ্ছে না। কিন্তু খেলার আকর্ষণও থাকছে না। বাকি যে সময়টা খেলা হবে তা ইলিয়াস সানিকে পাঁচ উইকেট নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই।

উইকেট সানির দখলে গেলেও সাকিব, নাসির, রুবেল এবং সাহাদাত প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপ তৈরি করেছেন। যার সুফল পেয়েছেন সানি। সাহাদাত হোসেন তো ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন লেন্ডল সিমন্সকে ক্যাচ আউট করে। কঠিন একটা ক্যাচ ছিলো। তারপরেও ইমরুল কায়েস সেটিকে মিস করেননি। বাকি যে চার ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন তা একা সানির কৃতিত্ব।

বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান ১২ ওভার বল করে ২২ রান খরচে কোন উইকেট না পেলেও তার স্পেলগুলো খুবই ভালো ছিলো। রুবেল হোসেনের বোলিং স্পেলও মন্দ হয়নি। ১১ ওভারে ২২ রান দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।