ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

অনির্বাচিত ফেডারেশনের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে বিওএ`র প্রস্তাব

সেকান্দার আলী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১১
অনির্বাচিত ফেডারেশনের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে বিওএ`র প্রস্তাব

ঢাকা: জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের অনির্বাচিত (অ্যাডহক) কমিটির প্রতিনিধিদের কাউন্সিলর পদ না দেওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (আইওসি) অনুমোদন পেলে সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বিওএ’র বার্ষিক সাধারণ সভায়।



যদিও এই মুহূর্তে দেশের বেশির ভাগ ক্রীড়া ফেডারেশনের কার্যক্রম চলছে সরকার মনোনীত কমিটির মাধ্যমে। গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির প্রস্তাবিত নতুন আইন অনুমোদন পেলে বিওএ‘র কাউন্সিলর হতে পারবে ১০ থেকে ১২টি ক্রীড়া ফেডারেশনের নির্বাচিত সদস্যরা। সেক্ষেত্রে বিওএ প্রতিনিধি নির্বাচনেও জটিলতা দেখা দিতে পারে।

বিওএ গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুর মতে,“একটি অনির্বাচিত ফেডারেশন প্রতিনিধি ভোট দিয়ে অলিম্পিক কমিটি নির্বাচন করতে পারে না। ফেডারেশনগুলোতে যাতে নির্বাচন হয় এবং গণতন্ত্র থাকে সেজন্য আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে আইওসিতে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে কোন সুপারিশমালা থাকলে তা সংযোজন করে আমরা বার্ষিক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবো। আগে বার্ষিক সভায় গঠনতন্ত্র উপস্থাপন করলে কাউন্সিলররা আইনটির বিরোধীতা করবেন। সেজন্য আইওসিতে পাঠিয়ে অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি প্রস্তাবিত আইন পাশ হলে ফেডারেশনগুলো নির্বাচন দেবে। ”

১৯৭৪ সালের প্রথম জাতীয় ক্রীড়ানীতি এবং ২০০০ সালের সংশোধিত ক্রীড়ানীতির ২০ ধারার ক এবং খ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন ফেডারেশনের নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করলে বা অক্ষম হলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) আগের কমিটি বাতিল ঘোষণা করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচিত এবং সরকার মনোনীত কমিটি ফেডারেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে আইওসির অনুমোদন নিয়ে একটি নতুন আইন করতে যাচ্ছে বিওএ। বিওএ‘র এই সিদ্ধান্তকে সরকারের ভাবমূর্তি ও নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন বিভিন্ন ফেডারেশনের কর্মকর্তারা।

এবিষয়ে বিওএ মহাপরিচালক কর্নেল (অব:) ওলি উল্লাহ বলেন,“গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি থেকে আইওসিকে জানানো হয়েছে, দেশের বেশিরভাগ ফেডারেশনে মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটি ও অ্যাডহক কমিটি বহাল আছে। নির্ধারিত সময়ে কোন কমিটিই নির্বাচন দিচ্ছে না। অনির্বাচিত কমিটির প্রতিনিধিকে কাউন্সিলর থেকে বাদ দেওয়া হলে আইওসির গঠনতন্ত্রের সংঘে সাংঘর্ষিক হয় কি না তা জানতে চাওয়া হয়। আইওসি অনির্বাচিত প্রতিনিধি ফেডারেশন চালাচ্ছে শুনে অবাক হয়েছে। পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। বিওএ থেকে আন্তর্জাতিক ফেডারেশনে যোগাযোগ করলে তারা বাংলাদেশের ক্রীড়া ফেডাশেনগুলোতে যোগাযোগ করে গঠনতন্ত্র খতিয়ে দেখছে। ”

বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশন থেকে এরইমধ্যে বিওএ সভাপতি সেনাপ্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল মুবীন বরাবর প্রস্তাবিত নতুন আইনের বিরোধীতা করে একটি আবেদন পত্র দিয়েছে ২০ আগস্ট। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে এনওসি বাংলাদেশের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে বিওএ থেকে আন্তর্জাতিক ফেডারেশনকে দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে জানানো হয়েছে। যার জন্য ক্রীড়া ফেডারেশনের কর্মকর্তারা বিব্রত বোধ করছেন বলে লিখেছেন সাইক্লিং ফেডারেশনের সভাপতি মিজানুর রহমান মানু।

মঙ্গলবার এ সম্পর্কে মানুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,“অলিম্পিকের প্রতিনিধি হন ফেডারেশনের কর্মকর্তারা। আমরা আইওসির অনুমোদিত ফেডারেশন। আমাদেরকে বাদ দিয়ে কোন কিছু করতে পারে না বিওএ। কিন্তু তারা বার্ষিক সাধারণ সভা না করে নির্বাহী কমিটির সভায় আইন অনুমোদন নিয়ে আইওসিতে পাঠিয়েছে। বিওএ‘র কমিটি এজিএম পাশকাটাতে চায়। কিন্তু এবার এজিএম না করলে বিওএ‘র সকল কার্যক্রম আমরা বয়কট করবো। যদিও এখন পর্যন্ত বিওএ’র এজিএম হয়নি। তবে এবার হতেই হবে। ”

তিনি বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর কোপেন হেগেনের কংগ্রেসে বিওএর এই হঠকারী সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আলোচনা করবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তার মতে,“আইওসি কোন ফেডারেশনকে উপেক্ষা করবে না। আমরা আইওসির অনুমোদিত। ” তবে বিওএ চাইলে বাংলাদেশের ফেডারেশনগুলোকে গতিশীল করতে যে কোন কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেটা অবশ্যই দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad