ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

কে ঠিক বলছেন, মুন্না, স্টুয়ার্ট ল, না সাকিব?

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১১
কে ঠিক বলছেন, মুন্না, স্টুয়ার্ট ল, না সাকিব?

ঢাকা: জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ফিরে পর্যবেক্ষক শফিকুর রহমান মুন্না একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল’র সঙ্গে কয়েকজন ক্রিকেটার বিবাদে জড়িয়েছেন। খেলোয়াড়দের অনুরোধে পরিচালক মুন্না এবং নির্বাচক হাবিবুল বাশারকে সাজঘরে যেতে বারণ করেন স্টুয়ার্ট ল।

জাতীয় দলের ব্যর্থতার পেছনের ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিকোণ থেকে।

পর্যবেক্ষক, কোচ এবং নির্বাচকের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ৫ সেপ্টেম্বর অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবালকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)‘র নির্বাহী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ওইদিন (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে জানান বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।

পরের দিন (৬ সেপ্টেম্বর) থেকেই ঘটনাগুলো অন্যদিকে মোড় নিতে থাকে। সাকিব প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের জানান, “জিম্বাবুয়ে সফরে কোচের সঙ্গে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচককে সাজঘরে আসতে বারণ করতে কোচকে অনুরোধ করেননি তিনি। বলেছেন,“অন্যকেউ বললেও বলতে পারে, আমার জানা নেই। তবে ব্যাটসম্যানদের মিটিংয়ে আমি ছিলাম সেখানেও কেউ বলেনি। মুন্না ভাই এবং বাশার ভাইকে নিষেধ করার পর আমাকে জানায় কোচ। তখন আমি তাকে বলেছি কর্মকর্তাদের সাজঘরে দেখে অভ্যস্থ আমরা। তুমি (কোচ) মনে করলে উনাদেরকে বলতেই পারো। ”

জাতীয় দলের প্রথম অনুশীলন শেষে প্রধান কোচ ল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানালেন,“আমি খেলোয়াড়দের কাছে জানতে চেয়েছি সাজঘরে কর্মকর্তারা থাকলে অসুবিধা হয় কি না। ক্রিকেটাররা বলেছে তাদের ‘আন-ইজি’ লাগে। সেজন্য আমি তাদেরকে অনুরোধ করেছি সাজঘরে সর্বক্ষণিক না থাকার জন্য। আমি কোথাও দেখিনি সাজঘরে বোর্ড কর্মকর্তারা প্রতিটি মুহূর্ত অবস্থান করে। ক্রিকেটারদের স্বস্তির একটি জায়গা লাগে, সাজঘর সেই জায়গা। সার্বক্ষণিক তারা সেখানে থাকলে খেলোয়াড়দের অস্বস্তি লাগারই কথা। ”

এ সম্পর্কে পরিচালক মুন্না দিনক্ষণ তুলে ধরে প্রতিবেদনে লিখেছেন,“১৩ আগস্ট ১১.৩০ ঘটিকায় স্টুয়ার্ট ল অনুশীলনের ফাঁকে আমার এবং হাবিবুল বাশারের কাছে এসে বলেন খেলোয়াড়রা বলেছে যে, ‘হেড অব ডেলিগেট’ এবং নির্বাচকের উপস্থিতিতে অস্বস্তি বোধ করে তারা। লন্ডনের সাজঘরে বোর্ড সভাপতি, হেড অব ডেলিগেট এবং নির্বাচক যাওয়ায় তাদের পারফরমেন্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিলো বলেও উল্লেখ করেন কোচ। ”

এরপর তিনি (শফিকুর রাহমান মুন্না) মন্তব্য খেলেন,“ক্রিকেটারদের এই আচরণ শুধু আমাকে বা হাবিবুল বাশারকে নয়, বোর্ডের সব পরিচালককে অবজ্ঞা করা হয়েছে। ” বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন থেকে এই বিশেষ অংশটুকু পড়ে শোনান জিম্বাবুয়ে সফরের পর্যবেক্ষক মুন্না। আলোচনার সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি তথ্য দেন,“জিম্বাবুয়েতে ওই ঘটনা ঘটার পরই আমি দক্ষিণ আফ্রিকায় লিপুকে জানিয়েছি। ঢাকায় জালাল ইউনুসকে জানিয়েছি। তারা বলেছে ঠিক আছে আপনি সাজঘরে যাবেন না। ” উল্লেখ্য, গাজী আশরাফ হোসেন লিপু তখন জিপি-বিসিবি একাডেমি দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন।  

এখানেই শেষ নয়, প্রতিবেদনে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচের বিবাদের বিষয় নিয়ে খেলা হলেও স্টুয়ার্ট ল বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার প্রধান কোচকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো,“খেলোয়াড়রা তার সঙ্গে জিম্বাবুয়েতে অনুশীলনের সময়ে অশোভন আচরণ করেছে কি না। যে জন্য খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে? উত্তরে ল বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন,“বল কি তুমি। আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি না। আমাদের মধ্যে এমন কোন কিছু হয়নি। ”

এবিষয়ে শফিকুর রহমান মুন্নার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,“ল’র দেশে এটা কোন ঘটনা না হতে পারে। আমরা বাঙ্গালী, আমাদের সংস্কৃতিতে কথা কাটাকাটিকে অশালীন আচরণ হিসেবে দেখা হয়। ”

আলোচনার একপর্যায়ে মুন্না বলেন,“কোচ মিথ্যা কথা বলেছেন। আমি একা নই হাবিবুল বাশার আমার সঙ্গে ছিলো। কোচ বলেছে খেলোয়াড়রা তাকে বলেছে আমাদেরকে সাজঘরে না যাওয়ার জন্য। ”

এদিকে হাবিবুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,“আমি সবকিছু প্রতিবেদনে লিখে দিয়েছি। এখন কিছু বলতে পারবো না। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad