ঢাকা: জিম্বাবুয়ে সফরে অনেক বিতর্কের জের ধরে অধিনায়ক এবং সহ-অধিনায়কের পদ থেকে সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো প্রধান পর্যবেক্ষক শফিকুর রহমান মুন্না এবং নির্বাচক হাবিবুল বাশারকে সাজঘরে (ড্রেসিং রুমে) আসতে বারণ করেছিলেন নেতা- উপনেতা।
প্রশ্ন: বিসিবির সিদ্ধান্তে আপনার প্রতিক্রিয়া কি?
সাকিব: ক্রিকেটের প্রয়োজনে বোর্ড যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে। আমার কোন মন্তব্য নেই। কোন সমস্যাও নেই। বোর্ড যেটা ক্রিকেটের জন্য ভালো মনে করে, সেটা সবার জন্য ভালো হবে।
প্রশ্ন: বিসিবির সিদ্ধান্তটা একপাক্ষিক হয়ে গেলো না?
সাকিব: আলোচনা হয়তো করতে পারতো। কিন্তু তারা যেহেতু প্রয়োজনবোধ করেনি, এখন কিছু বলার নেই।
প্রশ্ন: প্রধান পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচক সাজঘরে যাওয়ায় আপনারা আপত্তি করেছিলেন বলে পর্যবেক্ষক অভিযোগ করেছেন। এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি?
সাকিব: আমি বলিনি। আন্যকেউ বলে থাকলে বলতে পারে। কোচ আমাকে এসে বলেছেন, পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচককে সাজঘরে না আসার জন্য অনুরোধ করেছেন। আমি কোচকে বলেছি আমরা তো দলনেতা এবং নির্বাচককে সাজঘলে দেখে অভ্যস্থ। কোচের কথা হলো ‘আমার কাছে মনে হয়েছে সাজঘরে প্রতিক্রিয়া দেখালে ছেলেদের একটু সমস্যা হতে পারে। সে কারণে আমি বলেছি। ঠিক আছে তোমার ইচ্ছা তুমি বলেছ।
প্রশ্ন: অন্য কে। ব্যাটসম্যানরা বলেছে?
সাকিব: আমি নিশ্চিত ব্যাটসম্যানদের কেউ এ কথা বলেনি। তাদের সভায় আমিও উপস্থিত ছিলাম।
প্রশ্ন: প্র্যাকটিসে কোচের সঙ্গে বিদাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন এমন অভিযোগও পর্যবেক্ষকের প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে। ঘটনা কতটা সত্য?
সাকিব: আমরা অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। কোচের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেটা এমন নয় যে ঝগড়ার পর্যায়ে। একজনের একটা জিনিস পছন্দ নাই হতে পারে। ওখানে তো মুন্না ভাই ছিলেন। রিপোর্টে তিনি কি উল্লেখ করেছেন সেটা উনিই ভালো বলতে পারবেন। আমি তো উনার রিপোর্ট সম্পর্কে জানি না।
প্রশ্ন: অন্য সফরগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে জিম্বাবুয়ে সফরে কোন পার্থক্য দেখেছেন?
সাকিব: ব্যক্তিগত পারফরমেন্স ছাড়া আমার কাছে আলাদা কোন সমস্যা মনে হয়নি। বাকি সবকিছুই ঠিক মতো ছিলো। আমার কাছে আলোদা করে অন্য কিছু ধরা পড়েনি।
প্রশ্ন: আচমকা এমন সিদ্ধান্তে জাতীয় দলের সমস্যা হবে না?
সাকিব: আমি তো আসলে দল নিয়ে পরিকল্পনা করি। ক্রিকেট বোর্ড পুরো ক্রিকেট নিয়ে পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অন্যরকম। সে কারণেই হয়তো এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রশ্ন: অধিনায়কের পদ থেকে বরখাস্ত করায় আপনার কতটা ক্ষতি হবে?
সাকিব: স্বাভাবিক, নেতিবাচক প্রভাব আমার ওপর পড়বে। আমার কাছে মনে হয় সেগুলো সামাল দেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে। খুব একটা সমস্যা হবে না।
প্রশ্ন: আপনার আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বোর্ড। সে সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?
সাকিব: নির্দিষ্ট করে বলতে হবে। আমাকে আসলে জানতে হবে কোন কারণে আচরণ লঙ্ঘনের কথা বলা হচ্ছে। আমি খেলা ছেড়ে অন্য জায়গায় গিয়েছি না দলের সভায় যোগ দেইনি। তা হলে বলতে পারতো, তেমন কিছু তো হয়নি। যদি বলেন কাউকে সালাম না দিলে আচরণ খারাপ, তা হলে অন্য কথা। আগে কখন কি হয়েছে আমার মনে নাই। এই সিরিজে আসলে আমি এমন কিছু করিনি যাতে আচরণ লঙ্খন হয়েছে।
প্রশ্ন: আশরাফুলকে টেস্টে খেলাতে চাননি আপনি। সেটাও তো আপনাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করছে?
সাকিব: আশরাফুলের বিষয়টি আমরা চারজনে আলোচনা করেছি। বিষয়টা যে ফাঁস করে দিয়েছে সে আসল কালপ্রিট। আমাদের ওখানে আলোচনা হবে যেহেতু আমরা একটা পরিবার। আমাদের চারজনের চাররকম পছন্দ থাকতে পারে। আলোচনার পরে সেরা পছন্দ বেছে নেওয়া হয়। তাই হয়েছে। এই খবরটা সংবাদমাধ্যমকে যে দিয়েছে, আমার মনে হয় সমস্যাটা সেখানে।
প্রশ্ন: দলের ভেতরে দলাদলির খবর রটেছে। ঘটনা কি সত্য?
সাকিব: ধোনি একবার পুরো দল নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গিয়েছিলেন। আমাকেও তাই করতে হবে, পুরো দল নিয়ে এসে বলতে হবে ভাই জিজ্ঞেস করেন কারো কোন সমস্যা আছে কি না। ওখানেই তারা বলতে পারবে মন খুলে। আমি বললাম নাই। একজন ভেতর থেকে গোপনে বললো না আছে। সেখানে আমার তো কিছু বলার থাকে না।
প্রশ্ন: একটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাকিব তামিম পরবর্তী অধিনায়ককে সহযোগিতা করবে কি না?
সাকিব: দলের চেয়ে বড় কিছু নেই। অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক একটা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছিলাম। কিন্তু আমরা সবার আগে খেলোয়াড়। দলের ভালোর জন্য যে কোন কাজ করা আমাদের জন্য ভালো হবে। আমার কাছে মনে হয় না কোন সমস্যা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১১