ঢাকা: সমালোচনা এবং বিতর্কের অবসান ঘটাতে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং জাতীয় দল নির্বাচকত্রয়ীর মুখোমুখি হয়েছিলেন ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মঞ্জুর আহমেদ। উভয় পক্ষের কথাবার্তা শুনে সমাধানও দিয়েছেন।
আলোচনা শেষে লক্ষী ছেলের মতো হাসি মুখে সিইও’র কক্ষ থেকে বেরিয়েছেন অধিনায়ক। পাশে ছিলেন বন্ধুবর সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল। মঞ্জুর আহমেদ সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান,“আমি আলোচনা করে তেমন কোন সমস্যা পাইনি। ওতো (সাকিব) বলেছে নির্বাচকরা নিজেদের মতো করে দল নির্বাচন করবেন। আমার সঙ্গে আলোচনা করতেও পারে, নাও করতে পারে। ”
মঞ্জুর আহমেদ জানান, ফোনে নির্বাচকরা যে দল নিয়ে কথা বলেছেন তা স্বীকার করেছেন সাকিব। “আসলে সমন্বয়ে ঘাটতি এবং ঘটনার উপস্থানে কিছুটা সমস্যা ছিলো। সাকিব বলেছে সে যে ভাবে এবং যে উদ্দেশে কথাগুলো বলতে চেয়েছে, সেভাবে উপস্থাপনটা করতে পারেনি। ”
ইংল্যান্ড থেকে ফিরে সংবাদমাধ্যমের সামনে সাকিব জাতীয় দল নির্বাচন নিয়ে বলেছিলেন, জাতীয় দল নির্বাচনের পর তাকে জানায় নির্বাচকরা। আগে মতামত নেয়নি। ” যদিও প্রধান নির্বাচক আকরাম খান সাকিবের দাবিকে অমূলক বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ত্রিপাক্ষিক আলোচনার পর সিইও’র কথায় বোঝা গেলো সাকিবের ব্যাপারে নেতিবাচক কোন সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না বিসিবি। বরং ইতিবাচক ভাবে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান করতে চায়। সিইও বলেন,“সাকিব আমাদের এক নম্বর পারফরমার। বয়সটাও কম। তাকে সময় দিতে হবে। ”
অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও বিতর্কের অবসান চেয়েছেন। ত্রিপাক্ষিক আলোচনার বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। বরং সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন,“আসলে আমি অত চিন্তা করে কিছু বলি না। আকরাম ভাইকে আমি অনেক সম্মান করি। আমার বিশ্বাস উনি তা জানেন। ফোনে আকরাম ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমার মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। ”
অনুশীলনে অনুপস্থিত থাকায় পেছনে সাকিব নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন,“আমার সাত দিনের একটা বিশ্রাম দরকার ছিলো। গত দেড় বছর হয় টানা ক্রিকেট খেলছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি বিশ্রামটা আমার দরকার। ক্রিকেট থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে চেয়েছে। মাঠে পর্যন্ত আসার ইচ্ছে ছিলো না। আসলে ইংল্যান্ড থেকে ফোনে বলেছিলাম ছুটির দরকার এবং সরাসরি জিম্বাবুয়েতে যাবো। সেভাবে আমি চলছিলাম। পরিকল্পনা বদলে যাওয়ায় নতুন করে যে ছুটি নেওয়া প্রয়োজন হবে, সেটা ভাবি নি। সেজন্যই একটু সমস্যা হয়েছে। ”
ছুটিতে ঘরে বসে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হয়নি সাকিবের। বিজ্ঞাপনের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। অধিনায়ক অকপটে স্বীকারও করেছেন তিনি শুটিংয়ে ছিলেন। বিসিবি সিইও’কেও আলোচনার টেবিলে ঘটনা অবহিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার আবেদন করে ছুটি নিয়েছেন অধিনায়ক। শুক্রবার সকালে জাতীয় দলের অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন। কোচের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। জিম্বাবুয়ে সফর নিয়ে ছক কষতে কোচের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে বৈঠকও করেছেন সাকিব।
মজার তথ্যটা দেওয়াই হয়নি। সাকিবের উপলব্ধি হয়েছে মাঠের বাইরে আরেকটু পরিপক্ক হতে হবে তাকে। হয়তো এখন থেকে অন্য এক সাকিব আল হাসানকে দেখা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১১