ঢাকা: দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার ল্যান্স ক্লুজনার বোলিং আর ইংল্যান্ডের জুলিয়ান ফন্টেইন ফিল্ডিং কোচ হচ্ছেন খবরটা প্রচার পেয়ে গিয়েছিলো। এখন তা পরিণতি পেয়েছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিটা সেরে নেবে বিসিবি। মঙ্গলবার বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিক থাকলে নিউজিল্যান্ড সফরের আগেই জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দেবেন এই দুই কোচ।
কোচ নিয়োগের বিষয়ে অনেকটা গোপনে সারতে চেষ্টা করেছে বিসিবি। গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে বোর্ড পরিচালকরাও এনিয়ে মুখ খোলেননি। কিন্তু বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজনবোধ করেননি। সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রিয় এক সাংবাদিককে সোমবার জানিয়ে দিয়েছেন কোচ নিয়োগের আদ্যপ্রান্ত।
শুধু কোচ দ্বয়ের চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেই ক্ষান্ত হননি, সঙ্গে চুক্তির অতি গোপনীয় পারিশ্রমিক পর্যন্ত প্রকাশ করেছেন। বিসিবি সভাপতির এমন বৈষম্যমূলক আচরণে মঙ্গলবার দিনভরই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের বোর্ড কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন ক্রিকেট লেখক ও সাংবাদিকরা।
কোচদের পারিশ্রমিকের বিষয়টি প্রকাশ করায় বোর্ড পরিচালকরাও তাদের সভাপতির ওপর অখুশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিচালক বলেন,“এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। এটা আমাদের বোর্ডের জন্য লজ্জার। পছন্দের সাংবাদিক বলেই সব প্রকাশ করে দিতে হবে!”
এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে কোচ নিয়োগের বিষয়টি জানায় বিসিবি। বিষয়টি প্রকাশ করা হয় মূল্যায়ন কমিটির বৈঠক শেষে। জালাল ইউনুস বলেন,“আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনের পর বেশ কয়েকজন কোচ হতে আগ্রহ দেখায়। তাদের মধ্য থেকে বেছে যোগ্য দুইজন কোচ আমরা নিয়োগ দিতে যাচ্ছি। ”
দক্ষিণ আফ্রিকা দলের হয়ে ৪৯ টেস্ট এবং ১৭১টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন ক্লুজনার। ২০০৪ সালে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্লুজনারের কোচিং ক্যারিয়ার খুব বেশি বর্ণীল নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় একটি কাবে কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে ফন্টেইন হাইপ্রফাইল কোচদের একজন। এর আগে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ ছিলেন এ বেসবল খেলোয়াড়।
৪০ বছর বয়সী ফন্টেইন এবং ৩৮ বছর বয়সী ক্লুজনার জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করবেন বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে যার অধীনে তারা প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন সেই প্রধান কোচ জেমি সিডন্সের সঙ্গে এ নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি বোর্ড কর্মকর্তাদের। আলোচনার প্রয়োজনও বোধ করেননি তারা। এর কারণ জানতে চাইলে জালাল ইউনুস বলেন,“এখানে কোচের কোন ভূমিকা থাকবে না। সহকারী নিয়োগের পুরো এখতিয়ার বিসিবির। আমরা যাকে খুশি তাকেই দায়িত্ব দিতে পারি। আমাদের পছন্দের কোচিং স্টাফদের নিয়েই কাজ করতে হবে প্রধান কোচকে। ”
বিশ্বের সব দেশেই নিয়ম আছে প্রধান কোচের সঙ্গে আলোচনা করে কোচিং স্টাফ নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রধান কোচের পছন্দ না হলে সহকারীরাও সুবিধা করতে পারে না। এতে জাতীয় দলের ভালোর চেয়ে খারাপটাই বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশ সময় ২১০০ ঘন্ট, আগস্ট ১০, ২০১০