ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

খেলা

ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

ঢাকা: ইউরোপ সেরা বার্সেলোনার বিপক্ষে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠে নামে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন রিভারপ্লেট। মেসি-সুয়ারেজের গোলে গত মৌসুমের ট্রেবল জয়ী বার্সা জয় পেয়েছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে।



জাপানের ইয়োকোহামায় রোববার (২০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৪টায় শুরু হয় ম্যাচটি।

দলের হয়ে প্রথম গোলটি করেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসি। প্রথমার্ধে তার গোলেই এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় কাতালানরা। বিরতির পর আরও দুটো গোল করে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। দু’টি গোলই করেন সুয়ারেজ।

বার্সা কোচ লুইস এনরিক প্রথম একাদশ সাজান ৪-৩-৩ ফরমেশনে। শুরুর একাদশে কাতালানদের হয়ে মাঠে নামেন ক্লদিয়ো ব্রাভো, দানি আলভেজ, জেরার্ড পিকে, হাভিয়ের মাশচেরানো, জরদি আলবা, ইভান রেকিটিচ, সার্জিও বুসকেটস, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ আর নেইমার।

ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিট দুই দলই সমান তালে লড়তে থাকে। ছোট আক্রমণে কাতালানরা বেশ কয়েকবার রিভারপ্লেটের রক্ষণদূর্গ ভেদ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ৩১ মিনিটে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে মেসি দুর্দান্ত শট নিলেও তা জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি।

পরের মিনিটে আবারো ফ্রি-কিক নেন মেসি। তার বাতাসে ভাসিয়ে মারা জোরালো শটটি কর্নারের মধ্যদিয়ে রক্ষা করেন রিভারপ্লেটের গোলরক্ষক বারোভেরো।

৩৬ মিনিটের মাথায় মেসিকে রুখে দিতে পারেননি রিভারপ্লেটের ডিফেন্ডার কিংবা গোলরক্ষক। নেইমারের বাড়ানো বলে গোলবারের ডানদিকে থাকা দানি আলভেজ বল পান। সেখান থেকে আলভেজ প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন নেইমারকে। ব্রাজিল দলপতি লাফিয়ে উঠে হেড করে বলের যোগান দেন মেসিকে। আর্জেন্টাইন তারকা বাম পায়ের আলতো শটে রিভারপ্লেটের জাল কাঁপিয়ে দেন। ফলে, ১-০ গোলের লিড নেয় বার্সা।

প্রথমার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় বার্সা। মেসির বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে রিভারপ্লেটের সীমানায় প্র্রবেশ করেন উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার সুয়ারেজ। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে সামনে একা পেয়েও তিনি যে শটটি নেন সেটি গোলবারের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

প্রথমার্ধের বাকি সময়ে স্কোরে আর কোনো পরিবর্তন না হলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সা।

বিরতির পর ম্যাচের ৪৯ মিনিটে আবারো গোল করে বার্সা। এবারে দলের হয়ে গোলদাতার ভূমিকায় নাম লেখান সুয়ারেজ। সার্জিও বুসকেটসের মাঝমাঠ থেকে তুলে মারা বল নিয়ে রিভারপ্লেটের সীমানায় ঢুকে পড়েন সুয়ারেজ। প্রতিপক্ষের জাল লক্ষ্য করে সুয়ারেজ শট নিলে গোলরক্ষকের পায়ের নিচ দিয়ে বল জালে জড়ায়। ফলে, ২-০ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা।

দুই মিনিট পর আবারো আক্রমণ চালায় বার্সা। নেইমারের থেকে বল পান রিভারপ্লেটের সেন্টারে দাঁড়ানো মেসি। ডিফেন্ডারদের ফাঁক গলে জাল লক্ষ্য করে শট নিলেও এবারে মেসিকে হতাশ করেন রিভারপ্লেটের গোলরক্ষক বারোভেরো। তিন মিনিট একই স্টাইলে গোলবারের বাইরে দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন মেসি।

৬০ মিনিটের মাথায় নেইমার হলুদ কার্ড দেখেন। পরের মিনিটে একটি জোরালো আক্রমণ করে রিভারপ্লেট। তবে, কোনাকুনি সে আক্রমণটি সফল হতে দেননি ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাক দানি আলভেজ। ৬৪ মিনিটেও ভালো ফিনিশারের অভাবে গোলের সুযোগ নষ্ট করে রিভারপ্লেট।

৬৭ মিনিটে রেকিটিকের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন সার্জি রবার্তো।

৬৮ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় আর দলের তৃতীয় গোল করেন সুয়ারেজ। গত ম্যাচের হ্যাটট্রিক হিরো এ স্ট্রাইকারকে বল বানিয়ে দেন নেইমার। ব্রাজিল দলপতির তুলে দেওয়া বলে লাফিয়ে উঠে হেড করে রিভারপ্লেটের জালে বল জড়িয়ে দেন সুয়ারেজ। ফলে, ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় এনরিকের শিষ্যরা।

৭৬ মিনিটে গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে রিভারপ্লেট। আলারিওর অসাধারণ একটি হেড রুখে দেন বার্সার চিলিয়ান গোলরক্ষক ব্রাভো। সঙ্গে গোলের লজ্জা থেকে বাঁচিয়ে দেন বার্সাকেও।

সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে এ ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন মাশচেরানো। ম্যাচের ৮১ মিনিট পর্যন্ত প্রিয় ক্লাবের প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলেছেন তিনি। ৮১ মিনিটের মাথায় তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন থমাস ভারমায়েলন।

৮৩ মিনিটে আবারো বার্সার রক্ষণভেদ করে শট নেন আলারিও। তার বামপায়ের দুরন্ত শট বার্সার গোলরক্ষকের হাতে লেগে বাধা পায় গোলবারে। নয়তো ব্যবধান কমাতে পারতো রিভারপ্লেট। ৮৮ মিনিটে নেইমার বল নিয়ে দুর্দান্ত গতিতে প্রতিপক্ষের সীমানায় প্রবেশ করলেও নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে না পারলে বল চলে যায় বারোভেরোর নিয়ন্ত্রণে।

ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে গত মৌসুমের ট্রেবল জয়ী বার্সা।

এর আগে চীনের দল গুয়াংজো এভারগ্রান্দেকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বার্সা। সে ম্যাচে তলপেটের ব্যথার কারণে খেরা হয়নি মেসির আর কুঁচকির চোটের জন্য খেলেননি নেইমার। তবে, অসাধারণ এক হ্যাটট্রিক করে দলকে ফাইনালে তোলেন সুয়ারেস।

২০০৯ ও ২০১১ ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফি ঘরে তোলে বার্সা। এ ম্যাচটি জিতে ইতিহাস গড়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম ক্লাব হিসেবে তিনবার ক্লাব বিশ্বকাপ জেতা হলো কাতালানদের। তৃতীয়বারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপায় হাত বোলালেন মেসি, দানি আলভেস, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জেরার্ড পিকে ও সার্জিও বুসকেটস।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।