ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

নাজমুলের ক্যারিয়ার প্র্যাকটিস ম্যাচে সমৃদ্ধ!

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১১
নাজমুলের ক্যারিয়ার প্র্যাকটিস ম্যাচে সমৃদ্ধ!

ঢাকা: জাতীয় দলের হয়ে খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি দ্রুতগতির বোলার নাজমুল হোসেনের। সাড়ে সাত বছরে ৩৪টি একদিনের, দুটি টি-টোয়েন্টি এবং একটি টেস্ট খেলেছেন।

সেখানে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছেন একশ’রও বেশি। বন্ধুদের অনেকে ঠাট্টা করে তাকে প্র্যাকটিস ম্যাচের নাজমুলকে বলে ডাকেন। জাতীয় দলের এই দ্রুতগতির বোলারের ক্রিকেট ক্যারিয়ার এবং ভবিষ্যৎ বিষয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সেকান্দার আলী।

প্রশ্ন: অনেকে ঠাট্টা করে আপনাকে প্র্যাকটিস ম্যাচের ক্রিকেটার বলে। কেন বলেন তো?

নাজমুল: প্র্যাকটিস ম্যাচে আমাকে বেশি বেশি খেলানো হয়। তাই বন্ধুরা দুষ্টুমি করে। ওদের কথায় আমি কিছু মনে করি না।

প্রশ্ন: পাঠকদের উদ্দেশে আপনার ক্রিকেট অভিজ্ঞতা সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করবেন?

নাজমুল: অবশ্যই। এই ধরেন সাড়ে সাতবছর আগে জাতীয় দলে অভিষেক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত খেলার সুযোগ হয়নি। তবে প্র্যাকটিস ম্যাচে নিয়মিত ছিলাম। অভিষেক থেকে এপর্যন্ত ৩৫টি একদিনের ম্যাচ খেলেছি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লেও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পুল থেকে একবারও বাদ যাইনি। হা হা...হাসি।

প্রশ্ন: এই আসা যাওয়ার মধ্যে কেমন লাগে?

নাজমুল: জাতীয় দলে থাকলে ভালো লাগে। যখন বাদ পড়ি তখন অনেক ক্ষতি হয়। আর্থিক, মানসিক সবদিক থেকেই ক্ষতি হয়। তারওপর পুলের খেলোয়াড় হওয়ায় প্রিমিয়ার লিগেও ক্লাবগুলো আমাকে বাটে (সুযোগ নেওয়া) ফেলার চেষ্টা করে। মনে মনে খুব কষ্ট পাই। শেষপর্যন্ত বাস্তবতা মেনে নিয়ে ক্রিকেট খেলি।

প্রশ্ন: আপনার কি কখনো মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক ম্যাচে সুযোগ কম পেয়েছেন?

নাজমুল: আমি নিউজিল্যান্ড সিরিজে ভালো খেলেছি। দুর্ভাগ্য আঙ্গুলে ব্যথা পেয়ে সবগুলো ম্যাচে খেলতে পারিনি। পরের সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ম্যাচও খেলানো হয়নি। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট লাগে। মনে হয় আমি কি একটি ম্যাচ খেলারও যোগ্য না! বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ছিলাম। অথচ একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাইনি। আমি ছাড়া সবাই খেলেছে। খারাপ লাগার কথা না? সতীর্থরা হতাশ না হওয়ার জন্য বলে। ওদের কথা হলো পেশাদার ক্রিকেটারদের হাতাশ হলে চলে না। অনেক কিছুই মেনে নিয়ে খেলতে হয়।

প্রশ্ন: হতাশা গ্রাস করলে আপনি কি করেন?

নাজমুল: মাঝে মাঝে মনে হয় ক্রিকেট ছেড়ে দেই। পারফরমেন্স করতে পারছি না। নিয়মিত জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয় না। মনে মনে ভাবি সবে তো আমার ক্রিকেট খেলার বয়স হয়েছে। আসছে অক্টোবরে আমার বয়স হবে ২৬ বছর। ভালো খেলার উপযুক্ত সময়। অল্প বয়সে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাওয়ায় ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি চেষ্টা করবো পাঁচ থেকে ছয় বছর জাতীয় দলে নিয়মিত খেলার।

প্রশ্ন: জাতীয় দলে নিয়মিত না হলেও আপনি তো অনেক সাফল্যের অংশিদার। সেদিক থেকে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয় না?

নাজমুল: সত্যি কথা বলেছেন। আমি ৩৫টি ম্যাচ খেললেও বেশিরভাগই দল সফল হয়েছে। বলতে পারেন জেতা ম্যাচগুলো আমি খেলেছি। ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয়ের ম্যাচে আমি ছিলাম। নিউজিল্যান্ডকে ধবলধোলাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজে জয় এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ম্যাচে খেলেছি। এছাড়া ক্রিকেটে এশিয়ান গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী দলের সদস্য আমি। এসব ভেবেই তো ক্রিকেট খেলায় এখনো আনন্দ পাই।

প্রশ্ন: ক্রিকেট খেলে এখন অনেক উপার্জন করা যায়। আপনি কি নিজের আয়ে খুশি?

নাজমুল: সাকিব, তামিমদের সঙ্গে তুলনা করলে আমার আয় অনেক কম। তাদের সঙ্গে তুলনা করা চলেও না। তবে আমার যা আয় হয়, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেষ্টা করি।

প্রশ্ন: অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ কিভাবে নিশ্চিত করছেন?

নাজমুল: পরিবারের সবাই আমাকে নিয়ে ভাবে। সবাই জানেন চোট পেলে আমার খেলা শেষ হয়ে যেতে পারে। সেজন্য বাবা-মা এবং বড় ভাই আমার টাকা ভালো কাজে লাগান। আমার জন্যই উনারা সঞ্চয় করেন। আমি এপর্যন্ত কত টাকা উপার্জন করেছি তা আমার বাবা ছাড়া কেউ জানেন না। বাবাকে সব বলি এবং আমার খরচের একটা অংশ রেখে সব টাকা বাবাকে দিয়ে দেই। বাবাই আমার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করছেন।

নাজমুল আপনাকে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।