ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

জাতীয় দল নির্বাচকদের নন্দিত যাত্রা

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১১
জাতীয় দল নির্বাচকদের নন্দিত যাত্রা

ঢাকা: “এসোহে গুণি পুষ্পস্তবকে বরণ করিয়া লই তোমায়”। ফুলেল শুভেচ্ছা এবং কেক কেটে ক্রিকেটাররা অগ্রজ ত্রয়ীকে শনিবার বরণ করে নিয়েছেন।

উনারা একসময় মাঠে আলো ছড়িয়েছেন। এখন নক্ষত্র নির্বাচনের গুরুদায়িত্ব পেয়েছেন। সেই তিন গুণি আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এবং হাবিবুল বাশারের আনুষ্ঠানিক যাত্রাকে সুখোময় করে তুলতে অকৃপণ ছিলেন ক্রিকেটাররা।

এই নিয়মটা একেবারেই নতুন, দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে হয়তো তা চর্চায় রূপ নেবে। প্রধান নির্বাচক আকরাম খান বাংলানিউজকে বলছিলেন,“আমরা তিনজন অধিনায়ক থেকে নির্বাচক হয়েছি বলে হয়তো ক্রিকেটাররা আমাদেরকে আনুষ্ঠানিক বরণ করে নিয়েছে। আমাদের জন্য অনেক বড় সম্মানের। ”

নিজেদের বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সম্মানিত হওয়ার পর আকরাম খান মৌলিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। “আমরা তিনজনেই আগে থেকে একমত হয়েছি, শৃঙ্খলা, একাগ্রতা এবং পরীশ্রমকে প্রধান্য দেব। দেশের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। ক্লাব ক্রিকেট, ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং নিয়ে আলোচনা করেছি খেলোয়াড়দের সঙ্গে, ১৫ মিনিটের সেশনে। ”

আগেও নির্বাচকের ভূমিকায় ছিলেন আইসিসি ট্রফি জয়ী দলের অধিনায়ক আকরাম। দায়িত্বটা আগের চেয়ে বেড়েছে। এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্য ব্যর্থতার দায়ভার তাকেও নিতে হবে। “আমি সৌভাগ্যবান, আমার সঙ্গে আরো দু’জন অধিনায়ক আছেন। নান্নু ভাইয়ের অনেক বছরের কোচিং অভিজ্ঞতা আছে। সুমন সম্প্রতি খেলা ছেড়েছে। আমি মনে করি যে কোন কঠিন কাজ সম্পন্ন করতে আমাদের জন্য সহজ হবে। সেটা মাঠে এবং মাঠের বাইরে সব জয়গাতেই। ”

নির্বাচকদের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ বরাবর শোনা যায়, কেউ জাতীয় দল থেকে বাদ গেলে তার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করে না। এথেকে দুই পক্ষের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায়। বর্তমান নির্বাচক কমিটি খেলোয়াড়দের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করতে চায়। প্রধান নির্বাচক শোনালেন,“আমরা ভবিষ্যতে মাসে একবার দু’বার করে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেষ্টা করবো। আসলে নির্বাচক এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আমরা মনে করি নির্বাচক এবং খেলোয়াড় একটি পরিবার। ”

অভিজ্ঞতার মূল্য অনেক। আকরাম খান যা শোনালেন তা বাস্তবায়ন করা গেলে, ক্রিকেটারদের মধ্যে যে হতাশা দেখা যায়, সেটা খানিকটা হলেও লাঘব হবে। “আমরা ঘনঘন পরিবর্তনে বিশ্বাসী নই। দলে ঢোকা অত সহজ হবে না। যারা সুযোগ পাবেন তাদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। আগে হয়তো পরিবর্তনটা বেশি হয়েছে। এখন অভিজ্ঞতা এবং পারফরমেন্সকে মূল্যায়ন করা হবে। ”

দায়িত্ব নেওয়ার পর পূর্বসুরীদের ভুলে যাননি আকরাম খান। “আমাদের আগে যারা নির্বাচক ছিলেন, উনারা না থাকলে হয়তো বাংলাদেশের ক্রিকেট এত দূর আসতে পারতো না। উনাদের প্রতি আমরা সম্মান রাখছি। এই প্রথম তিন অধিনায়ক নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছে। একটু বেশি প্রত্যাশা তো থাকবেই। ”

আগের কমিটি যেখানে শেষ করেছে সেখান থেকে শুরু হচ্ছে বর্তমান কমিটির কাজ। বাড়তি কিছু তো থাকছেই,“আমার মনে হয় বাংলাদেশে ব্যাকআপ প্লেয়ার খুবই কম। চেষ্টা করবো ব্যাক-আপ প্লেয়ার বের করার। এজন্য অনূর্ধ্ব-১৯, একাডেমি এবং ‘এ‘ দল নিয়ে কাজ করছি। ”

মিনহাজুল আবেদীন কোচ হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন। এখন থেকে নির্বাচক। খেলোয়াড় বাছাইয়ের প্রকৃয়া হিসেবে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক,“নির্বাচকের কাজটা চ্যালেঞ্জিং। কোচিংয়ের সঙ্গে অনেকদিন ছিলাম। ভালো একটা অভিজ্ঞতা আছে। আমার মনে হয় আমাদের কাজটা ভালো হবে। এছাড়া আমরা তিনজনে একসঙ্গে খেলেছি। যখন মাঠে কাজ করবো তখন তিনজনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবো। ”

হাবিবুল বাশারের ভাষায়,“আমি খেলা ছেড়েছি বেশি দিন হয়নি। বর্তমান দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় সম্পর্কে আমার জানাশোনা আছে। গড় দেখে দল নির্বাচন করতে হবে না। অভিজ্ঞতা থেকে বলে দিতে পারবো কাকে প্রয়োজন। ”

বাশারদের প্রথম অভিযান হবে জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য দল নির্বাচন করা। কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে নতুন কমিটির সামনে। তিনি বলছিলেন,“আমি যতটা জানি ১৪ মাস হলো টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে আমরা। আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে যাচ্ছি। সেখানে অনেক বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দল নির্বাচন করতে হবে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১১  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।