ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বিসিবির আলোচনা ফলপ্রসূ, বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়!

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১১
বিসিবির আলোচনা ফলপ্রসূ, বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়!

ঢাকা: দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে জাতীয় দলের অধিনায়কদের নিয়ে যে মতবিনিময় সভায় বসেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (সিবিবি) সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল, ওই বৈঠক শেষে অধিনায়কদের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কেউ বলছেন আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলো বাস্তবায়ন জরুরি।

কারো অভিমত আলোচনায় অংশ নেওয়াও ইতিবচাক, বাস্তবায়ন দেরিতে হলেও অসুবিধা নেই। তবে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে অধিনায়কদের আলোচনা যে ফলপ্রসু হয়েছে, এনিয়ে কারো দ্বিমত নেই।

আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মধ্যে জাতীয় লিগকে প্রকৃত অর্থেই প্রথম শ্রেণীর মানে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন ক্রিকেট বিজ্ঞরা। প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কথা হলো,“আলোচনা অনেক হয়, ভালো ভালো কথা শোনা যায়। সেগুলো যতক্ষণপর্যন্ত না বাস্তবায়ন হচ্ছে, তার কোন মূল্য থাকছে না। ফলপ্রসু আলোচনা মূল্যহীন হয়ে যায়। বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আমাদের আজকের (সোমবার) আলোচনাও ফলপ্রসু হয়েছে বলবো। অনেক ভালো ভালো দিক নির্দেশনা পাওয়া গেছে। আশা করবো বিসিবি সেগুলোর বাস্তবায়ন করবে। ”

প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলা এবং খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানো, খেলোয়াড় নির্বাচন বিভাগীয় কমিটির কাছে না ছেড়ে নির্বাচকদের হাতে ন্যস্ত করা হলে মঙ্গল হবে বলে মনে করেন অধিনায়করা। বিশেষ করে বর্তমান মৌসুমে দল নির্বাচনে এলোমেলো সিদ্ধান্তের অভিযোগ পাওয়ার পর নেতাদের এই অনুরোধ। একচুলও মিথ্যে কথা নয়। অনেক ভালো খেলোয়াড়ও জাতীয় লিগে খেলার সুযোগ পাননি বর্তমান মৌসুমে। দু’একটি বিভাগ তো অন্য বিভাগের ক্রিকেটারদের নিতে আপত্তিই করেছে। শেষপর্যন্ত নেয়নি।

এছাড়া জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জাতীয় লিগে নুন্যতম ম্যাচ খেলার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা থাকা জরুরি বলে মত দিয়েছেন অধিনায়করা। আগে এই নিয়ম থাকলেও এখন সেটা অনেক শিথিল হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক খেলায় ব্যস্ত থাকলে এবং খেলা শেষে ক্রিকেটাররা জাতীয় লিগের ম্যাচে অংশ না নিলেও সমস্যা নেই। দুর্জয় মনে করেন,“নিয়ম করে দিতে হবে জাতীয় লিগের খেলায় অংশ না নিলে জাতীয় দলে খেলা যাবে না। তাহলে খেলায় ভারসাম্য আসবে। জাতীয় লিগে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। অথচ ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটে খেলার জন্য প্রত্যেকে মুখিয়ে থাকে। আমার মনে হয় দুই ধরণের ক্রিকেটে বৈষম্য কমিয়ে আনলে ভালো হবে। ”

সাবেক অধিনায়কদের নিয়ে বিসিবির মতবিনিময়কে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন হাবিবুল বাশার। তিনি বলছিলেন,“আগে কখনোই এমনটা দেখা যায়নি। বিসিবির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। একবার সিইও’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আজ হলো সভাপতির সঙ্গে। এককথায় বলবো ফলপ্রসু একটা সভা হয়েছে। যদিও সব কিছুর বাস্তবায়ন করা সময়ের ব্যাপার। তবে একটা কথা বলবো বাস্তবায়ন দেরিতে হলেও অসুবিধা নেই। ”

অধিনায়কদের মতামত নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতির কথা শুনিয়েছেন বিসিবি সভাপতি মোস্তফা কামাল। এক: জাতীয় দলে খেলার সমমানের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে জাতীয় লিগের ম্যাচে। দুই: জাতীয় লিগের জন্য দুটি মাঠ আলাদা করে দেওয়া হবে। তিন: জাতীয় লিগের জন্য সিমিং উইকেট বানাতে বিদেশ থেকে মাটি এবং কিউরেটর আনা। চার: রাজশাহীতে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট অবকাঠামো গড়ে তোলা। পাঁচ: ২০১১-২০১২ মৌসুমে বিপিএল শুরু। ছয়: সর্বপরি জাতীয় দলের অধিনায়কদের পালা করে ক্রিকেট উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা।

এরই মধ্যে তিনজন অধিনায়ককে নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করা সম্ভব। শুধু বিসিবির সদ ইচ্ছা থাকলেই হয়।

বিসিবি সভাপতি একদিকে বলছেন ক্রিকেট উন্নয়নে সাবেক ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ থাকবে। সেখানে গঠনতন্ত্র প্রতিবন্ধকতা হিসেবে সাবেকদের পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ক্রিকেট খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি দুর্জয় বলেন,“বিসিবির গঠনতন্ত্রে আছে খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে একজন মাত্র পরিচালক করা হয়েছে। বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থাতেও একজনের বিধান রেখে গঠনতন্ত্র করা হচ্ছে। এতে সাবেক ক্রিকেটারদের অন্তর্ভুক্তি বাড়ছে না। বরং খেলোয়াড়দের হয়ে কোন কিছুই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। আমি মনে করি প্রতিটি জায়গায় অন্তত তিনজন করে খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি থাকা জরুরি। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।