ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

শচীনের মাঠে ভারতের ফাইনাল

<img src="http://www.banglanews24.com/images/imgAll/2011March/SM/Sekandar-Ali-sm.jpg" alt="Sikander Ali" width="63" height="76" border="1" />সেকান্দার আলী, মুম্বাই | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১১
শচীনের মাঠে ভারতের ফাইনাল

মুম্বাই: শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ভারতকে ফেভারিট আখ্যা দিলে কেমন শোনায়। সত্যি বলতে কুমার সাঙ্গাকারা বিশ্বকাপের ফাইনালে স্বাগতিক ভারতকে এগিয়ে রাখছেন।

হতে পারে মনস্তাত্বিক গেমস খেলছেন লঙ্কান দলপতি।

“নিঃসন্দেহে ভারত ফেভারিট। বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং প্রতিটি বিভাগে দারুণ করছে। অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দলকে হারিয়েছে ফাইনালে এসেছে। ” সাঙ্গাকারা একেবারে যে ভুল বলেছেন তাও নয়। নকআউট পর্বে শেষ দুটি ম্যাচে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে ভারত। যেভাবে জয় পেয়েছে তাতে ফেভারিটের তকমা তাদের গায়ে লাগতেই পারে। কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে এবং সেমিফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ২৯ রানে হারিয়েছে।

কোয়ার্টার এবং সেমিফাইনালে তুলনামূলক অতটা শক্ত প্রতিপক্ষকে পায়নি শ্রীলঙ্কা। ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে খেলছে। যদিও ফলাফলের বিচারে ভারতের চেয়ে শ্রীলঙ্কা মোটেও পিছিয়ে নেই। কোয়ার্টার ফাইনালে বিশ্বকাপে তিনবারের রানার্সআপ ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে এবং সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে। এরপরেও কথা থেকে যায়। শ্রীলঙ্কার কন্ডিশন এবং ভারতের কন্ডিশনের মধ্যে কিছুটা তফাৎ আছে। কলম্বোর মাঠগুলো শ্রীলঙ্কার জন্য পয়া, যেখানে প্রতিপক্ষ দলগুলো খেলতে গিয়ে হিমশিম খায়।

ভারতের মাঠগুলো প্রতিটি দলের জন্যই উপভোগ্য। শক্তিশালী ব্যাটিং এবং বোলিং লাইন থাকলে জয় তুলে নেওয়া কঠিন নয়। তবে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামের উইকেট কতটা ব্যাটিং সহায়ক হবে বলা মুশকিল। স্লো এবং লো উইকেট হলে শ্রীলঙ্কার জন্য সুবিধা। মুত্তিয়া মুরালিধরণের মতো জগদ্বিখ্যাত স্পিনার আছে। অজন্তা মেন্ডিসের আঙ্গুলের কাজ এবং মালিঙ্কা বলের গতি দিয়ে স্বাগতিক শিবিরকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। ব্যাটিংয়েও মন্দ হচ্ছে না লঙ্কানদের। অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকার, তিলকারতেœ দিলশান টিকে গেলে অনেক বড় স্কোর হয়ে যাবে। দশম বিশ্বকাপে লঙ্কানদের অভিযান তো এই কয়জন ক্রিকেটারের রথে চেপে এগিয়েছে। বিশেষ করে হ্যাট্রিক ম্যান মালিঙ্কা জ্বলে উঠলে তো শেবাগ, শচীন, গৌতম গম্ভীরের নাকমুখ দিয়ে বুদবুদ বের হবে। আরব সাগরে ঝাপ দেওয়া ছাড়া তাদের কোন উপায় থাকবে না।

অবশ্য শচীন রমেশ টেন্ডুলকার আছেন, তিনি ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে গেলে কোথায় পালাবে লঙ্কান বোলিং। বীরেন্দ্র শেবাগ মারমুখো হলে তো কথাই নেই। ওয়ংখেড় স্টেডিয়ামের পাশেই আরব সাগরে জাহাজ ভেড়ে, ওতে চেপে দেশে ফেরা ছাড়া উপায় থাকবে না শ্রীলঙ্কার।

ভারতের খেলোয়াড়দের একটু বেশিই তেজি এবং তাগড়া দেখাচ্ছে। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি মিটি মিটি হাসছিলেন। শরীরের ভাষাও বদলে গেছে। খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স এবং মনের অবস্থার প্রতিফলন হয়েছে নেতার মধ্যদিয়ে। “একক কোন কৃতিত্ব নয়। দলের সবার অবদানে এই পর্যন্ত এসেছি। ভারত শচীনের কাছে কৃতজ্ঞ। দেশকে অনেক দিয়েছেন। ”

২১ বছর ধরে ভারতের হয়ে খেলছেন শচীন তাকে একটি বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দেওয়া কতটা জরুরী তা জানেন ধোনিরা। কিংবদন্তির বিদায়ের আগে ক্রিকেট জীবনে প্রাপ্তিতে এই একটি শিরোপাকে যোগ করে দিতে চেষ্টা থাকবে তাদের। বোঝাই যাচ্ছে ভারত কতটা মরিয়া থাকবে শনিবার ফাইনালে জিততে। শচীনও তো বসে থাকবেন না। শেষটা ভালো করে যেতে চাইবেন বৈকি। এটা যে লিটল মাস্টারের শেষ বিশ্বকাপ। খেলাও হচ্ছে নিজের মাঠে।

এককথায় ভারত একটি দল যাদের যাদের ব্যাটিং বিশ্বসেরা। বোলিংয়ে দুর্দান্ত। জানপ্রাণ দিয়ে ফিল্ডিং দিয়ে ম্যাচ জিতে নিতে জানে।

শ্রীলঙ্কারও কিন্তু প্রেরণার জায়গা আছে। সিংহলিজ রাজা মুত্তিয়া মুরালিধরন যে ঘোষণা দিয়েই রেখেছেন বিশ্বকাপ শেষে ক্রিকেটকে ‘গুডবাই’ জানাবেন। শচীন যেমন ব্যাটিং জিনিয়াস, মুরালি তেমনি বোলিংয়ে। টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেটে সর্বাধিক উইকেট শিকারির বিদায় স্মরণীয় করে রাখতে লঙ্কানদেরও চেষ্টা করবে বিজয়ের কেতন উড়াতে।
ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার পারফরমেন্স তুলনামূলক ভালো। এপর্যন্ত বিশ্বকাপের সাত ম্যাচ খেলে চারটিতে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। দুটিতে ভারত, একটি পরিত্যাক্ত হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার জন্য অন্য কারণেও শনিবারের ফাইনাল প্রেরণার। ১৯৯৬ সালে উপমহাদেশের বিশ্বকাপে শিরোপা জিতেছিলেন অর্জুনা রানাতুঙ্গার দল। এবারও উপমহাদেশে বিশ্বকাপ এবং স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা ফাইনাল খেলছে অন্যএক স্বগতিকের বিপরীতে।

ভারতীয় সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।