ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

অচেনা বাংলাদেশের অপরিচিত ব্যাটিং

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১১

ঢাকা: ক্রিকেট খেলা ক্রিকেটাররা ভালো বোঝেন এতে কোন সন্দেহ নেই। খেলার যাবতীয় দায়ভার খেলোয়াড়দের।

ভালো হলে প্রশংসা, খারাপ হলে সমালোচনাও তাদের জন্য। কিন্তু শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে ক্রিকেট খেলেছেন  বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তা কোন মানের; সে ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেননি।

খোদ ক্রিকেটারদের কাছেও ব্যাখ্যা নেই। ভেবে দেখেন বিশ্বকাপ শুরুর আগে কি দারুণ ক্রিকেট খেলছে এই দলটি। এমনকি এই বিশ্বকাপে আগের দুই ম্যাচের দিকে লক্ষ্য করলে মন্দ বলা যাবে না। ভারতের কাছে হেরেছে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে। আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে। অথচ কেমন লেজেগোবরে করে ফেললো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মোকাবেলা করতে গিয়ে।

যে তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপের হিরোদের তালিকায় রাখা হচ্ছে, সেই তামিম উইকেট ছুড়ে দিলেন দুর্বল একটি শট খেলতে গিয়ে। রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট পতন হলে দলের ওপর কতটা প্রভাব পড়ে সেটা বোঝা গেলো খানিক বাদে।

ইমরুল কায়েস, জুনায়েদ সিদ্দিকী, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাঈম ইসলাম, শফিউল ইসলাম, ও রুবেল হোসেন পালা করে আউট হলেন। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ৫৮ রানে। দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন মাত্র দু’জন ব্যাটসম্যান জুনায়েদ (২৫) ও আশরাফুল (১১)। এই হলো বাংলাদেশের ব্যাটিং।

উইকেটে কী এমন মৃত্যু ফাঁদ পেতে রেখেছিলেন কিউরেটর বদিউল আলম খোকন? আসলে উইকেটকে দোষারোপ করে লাভ নেই। অজুহাত দু’এক জনের জন্য খাটে। পুরো দলের জন্য নয়। প্রশ্ন হতে পারে কেমার রোচ, ড্যারেন সামি এবং সোলেমান বেন কী জাদুর ঝাপি খুলে বসেছিলেন। না আগে কখনো দেখা হয়নি এমন বোলিং শিখে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রয়োগ করেছেন উইন্ডিজ বোলাররা? উত্তর জানা নেই। শত বছর চেষ্টা করেও উত্তর পাওয়া যাবে না।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক সামির কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিলো উইকেট থেকে সুবিধা নিয়ে না ক্রিকেটের বেসিক কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছে তারা। সামি উত্তরে বলেছেন, ক্রিকেটের বেসিক কাজে লাগিয়ে জয় পেয়েছেন। ক্রিকেটের বেসিক তো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও জানেন। তাহলে এমন হলো কেন? পার্থক্যটা হলো সামি এবং রোচ উইকেট-টু-উইকেট বল করেছেন। সাকিবরা যা খেলে অভ্যস্ত নয়। কারণ বাংলাদেশের কোন বোলার তো উইকেট-টু-উইকেট বল করেন না। খেলবে কোথা থেকে। অভ্যস্ত হওয়ার ব্যাপার আছে না!

খর্বাকৃতির পেসার বিশ্বকাপে যিনি দ্রুত গতির বোলার হিসেবে পরিচিত সেই কেমার রোচ তিনটি উইকেট নিয়েছেন সোজা সোজা বল করে। অবশ্য বলের গতিও ছিলো। লম্বা গড়নের আরেক পেস বোলার ক্যারিবিয় অধিনায়ক ড্যারেন সামি তো খুব বেশি গতিতে বল করেননি। শুধু লাইন-লেন্থ দিয়ে ফিরিয়েছেন তিনজন ব্যাটসম্যানকে। তাল গাছের মতো লম্বা যে স্পিন বোলার সোলেমান বেন তিনি নিয়েছেন চারটি উইকেট।

যে উইকেটে লুটিয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেখান থেকেই নয় উইকেটে জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ডেভেন স্মিথের উইকেটটি না হারালে উইন্ডিজদের জয়টা হয়তো আরো ভালো দেখাতো। ক্রিস গেইল বোধহয় একটু আপসোসই করেছেন। গেল ৩৭ এবং ব্রাভো ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।

দিবা-রাত্রির খেলা অথচ তা শেষ হয়েছে সূর্য ডোবার আগে। দুই ইনিংস মিলে খেলা হয়েছে ৩১.১ ওভার। যেখানে খেলা হওয়ার কথা ছিলো ১০০ ওভার। অনেক চেষ্টা করে বাংলাদেশ ব্যাট করেছে ১৮.৫ ওভার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের জন্য খেলেছে ১২.২ ওভার পর্যন্ত।
ও ভুলে গেলে চলবে না। যে ইনিংসটি শুক্রবার খেলেছে বাংলাদেশ তা কিন্তু সব ধরণের ক্রিকেটে নিজেদের সবচেয়ে ছোট স্কোর। এর আগে বাংলাদেশের সর্বোনিন্ম স্কোর ছিলো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একদিনের ম্যাচে ৭৪ রান। ২০০৮ সালে ডারউইনে ওই রান হয়েছিলো। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ছোট ইনিংসটি ছিলো ১০৮ রানের। যদিও টেস্ট ইনিংসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছোট ৬৬ রানের একটি স্কোর বাংলাদেশের নামের পাশে লেখা আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১১  


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।