ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

সাকিবের আত্মসমর্পণ

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১১
সাকিবের আত্মসমর্পণ

ঢাকা: সেই হাসি নেই। মলিন দেখাচ্ছিলো মুখ।

দেখে মনে হচ্ছিলো কে যেন ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মনটাকে। সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে না হলে হয়তো খুশি হতেন।

চেয়ারটা হালকা পেছনে টেনে মাথা নিচু করে বসে প্রশ্নের জন্য অপেক্ষা করেন সাকিব আল হাসান। সাংবাদিকরাও কঠিন সব প্রশ্ন নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। শেষপর্যন্ত তেমন কিছু করা হয়নি। দর্শকদের উদ্দেশে আগে ভাগে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় অন্যরাও দমে যান।

অথচ বাংলাদেশ অধিনায়কের দাপটে প্রায় সংবাদ সম্মেলনে কোন না কোন সাংবাদিককে বোকা বনে যেতে হয়। পাল্টা প্রশ্নের অভ্যাস আছে সাকিবের। এমনকি হেয়ালি করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অনেকটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন অন্য এক সাকিব। অপরিচিত একজন অধিনায়ক মনে হচ্ছিলো। বিপর্যস্ত, হতাশায় ভেঙ্গে পড়া দলপতি।

ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ দিন হিসেবে ৪ মার্চ দিনটিকে অভিহিত করেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান,“এখন পর্যন্ত এটাই আমার সবচেয়ে খারাপ দিন। ভবিষ্যতে এরচেয়ে খারাপ দিন আসতে পারে। ”

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক তখন বিজয়ের হাসি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কক্ষের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় পাল্টা প্রশ্ন করার সুযোগ হয়নি।

সত্যিই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এত বাজে দিন আগে আসেনি। একদিনের ক্রিকেটে ৫৮ রানে অল-আউটের ঘটনা চরম ব্যর্থতাকে তুলে ধরে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটাই সর্বনিন্ম স্কোর। আগের ছোট স্কোর ছিলো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ২০০৮ সালের ৩০ আগস্ট ডারউইনে ৭৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশের ইনিংস। হয়তো চাপে গুলিয়ে ফেলেছেন স্বাগতিক ক্রিকেটাররা। “প্রতি ম্যাচে চাপ থাকে। কিন্তু কিভাবে চাপ সামলাতে হয় আমরা তা জানি। আজ আসলে খুবই খারাপ একটা দিন কেটেছে আমাদের। ”

খেলার আগের দিন অনেক আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ক্রিকেটাররা। অধিনায়ক সাকিবের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সুবিধাজনক স্থানে থাকতে পারবে তার দল। “আমাদের পরিকল্পনা ছিলো আগে ব্যাটিং করে শোভন স্কোর দাঁড় করানো। কিন্তু হয়নি। ”

চেনা মাঠ, দর্শক সমর্থন সবই ছিলো বাংলাদেশের অনুকূলে। তবুও বাজে হার মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। সাকিব নিজেও বিশ্বস করতে পারছেন না। “গত একবছরে আমরা যেভাবে খেলেছি এতটা খারাপ খেলা আশা করা যায় না। তবে আমি মনে করি এখনো ঘুড়ে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। বাকি তিনটি ম্যাচ জিতে পারলে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা সম্ভব। ”

ইতিবাচক কথা শুনতে বেশ লাগে। যদিও বাস্তবতা অনেক কঠিন। ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট পরাশক্তির সঙ্গে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। বিপর্যয় থেকে রাতারাতি ঘুড়ে দাঁড়ানো মুখের কথা নয়। সাকিবও স্বীকার করেছেন,“আমার মনে হয় ফিরে আসা একটু কঠিন হবে। তবে হাতে ছয়দিন সময় আছে আশা করি গুছিয়ে নিতে পারবো। ”

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।