ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধনী ঢাকায়

তুহিন শুভ্র অধিকারী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১১
বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধনী ঢাকায়

ঢাকা: আলোর ছটায়, সুরের ঝংকারে, পরিবেশনার নিপুনতায় ভরা এক অনুপম অনুষ্ঠান বিশ্ববাসীকে উপহার দিলো বাংলাদেশ। আর উচ্ছাসে, আনন্দে তা উপভোগ করলেন মানুষ।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যাটি ছিলো অসাধারণ।

এ ছিলো বিশ্বকাপ ২০১১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। জমকালো, নিখুঁত আয়োজন।

সন্ধ্যা সোয়া ৬ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে আসনগ্রহণ করেন। এর পরপরই আইসিসি’র প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ারকে স্বাগত জানানো হয়। আরও আসন গ্রহণ করেন শত শত দেশি বিদেশি অতিথি। আর গ্যালারি ভর্তি হয়ে ছিলেন হাজার হাজার দর্শক।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা। বাঙালির প্রাণের গানে নিমেষেই জমে উঠলো পরিবেশ।

এরপর পরিবেশিত হলো ‘ও পৃথিবী এবার  এসে বাংলাদেশ নাও চিনে, ও পৃথিবী তোমায় জানাই স্বাগত এ দিনে’ গানটি। পরিবেশন করেন টিপু, মিলা, বালাম, অর্নব ও অন্যান্যরা।

এরপরই দেশের ঐতিহ্যবাহী ভ্যানগাড়িতে করে আনা হয় বিশ্বকাপের মাসকট ‘স্ট্যাম্পিকে’।  

এরপর রিক্সায় চড়ে একে একে মাঠে প্রবেশ করের প্রতিটি দলের অধিনায়ক। প্রথমেই আসেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক রিকি পন্টিং। সবশেয়ে সাকিব আল-হাসান মাঠে প্রবেশ করেন।

এসময় প্রত্যেকের অধিনায়কের সঙ্গী ছিলো স্ব-স্ব দলের জার্সি গায়ে আগামী দিনের প্রতিনিধি শিশুরা।

আবার গান। গাইলেন ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পী সনু নিগম।

এরপরই শুরু হয় বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর্ব। মাইক্রোফোন হাতে প্রথমেই মঞ্চে আসেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল। তারপর একে  একে বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আইসিসি সভাপতি শরদ পাওয়ার। এরপরই মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। সাথে সাথে আশা প্রকাশ করেন এ আয়োজন বিশ্বভাতৃত্বকে আরো সুদৃঢ় করবে।

তার উদ্বোধনের পর ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদ্বোধন দেখানো হয়।

এরপরই শুরু হয় আয়োজক তিনটি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার পালা। দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পরিবেশনা নিয়ে প্রথমেই আসেন ভারতীয় পারফর্মাররা। তারা ভারতীয় বিভিন্ন প্রদেশের লোকজ সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলেন।

এরপরই মাঠে আসে শ্রীলংকার পারফর্মাররা। ভারত মহাসাগরের এ দ্বীপ রাষ্ট্রটি তাদের পরিবেশনার মাধ্যমে দেশকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন।

এরপরই দেশীয় আদিবাসী সংস্কৃতি নিয়ে মাঠে আসে বাংলাদেশের পারফর্মাররা।   দেশীয় আদিবাসী সংস্কৃতি নিয়ে শুরু হয় এপর্ব। এরপরই একে একে গান পরিবেশন করে দেশের তিন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, মমতাজ এবং রুনা লায়লা। দেশের গান, আধুনিক গান, লোকসঙ্গীত আর শেষে দমাদম মাস্্ত কালান্দর গেয়ে পুরো স্টেডিয়াম মাতিয়ে তুললেন দেশের সঙ্গীত জগতের জীবন্ত কিংবদন্তী রুনা লায়লা।

তারপরই মাঠ পরিণত হয় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের উত্তাল মূহুর্তে। মাতৃভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করতে বাঙালীর প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে হয় পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। এরপর পরিবেশনার মধ্যদিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ঘটনা। এরই মাঝে দেখানো হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ভাষণ। ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা। ’ এর পরিবেশনার পুরোভাগে ছিলেন নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নিপা ও শিবলি মহাম্মদ।

এরপরই মঞ্চ কাপাতে আসেন কানাডার জনপ্রিয় শিল্পী ব্রায়ান এডামস। তার মঞ্চকাপানো পরিবেশনার পরই বিশ্বকাপের থিম সং নিয়ে আসেন ভারতীয় শিল্পী শংকর। গাইলেন ‘জিতবে এবার জিতবে ক্রিকেট’ এরপরই শুরু হয় আতসবাজির বর্ণিল আলোর বিচ্ছুরণ। রাত পোনে ৯টায় শেষ হয় উদ্বোধনী আয়োজন।

বাংলাদেশ সময় ২১২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।