ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

আবাহনীর সামনে শ্রীহীন মোহামেডান

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১১
আবাহনীর সামনে শ্রীহীন মোহামেডান

ঢাকা: অনেক নাটক করেও লাভ হয়নি মোহামেডানের। পরাজয় এড়াতে পারেনি।

রজত ভাটিয়াকে একাদশের বাইরে রেখেও বিশাল জয় পেয়েছে আবাহনী। মোহামেডানকে ১০ উইকেট হারিয়ে একেবারে নাকাল করে ছেড়েছে।

গঠনতন্ত্রে সংশোধন নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয় শনিবার বিকেল থেকে। এনিয়ে খেলা বয়কটের হুমকিও দিয়ে রাখে সাদাকালো শিবির। রীতিমতো কাবে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়; নতুন করে নিবন্ধন নেওয়া ভারতের ক্রিকেটার রজত ভাটিয়াকে একাদশে রাখলে ম্যাচ বয়কট করবে। সকালে গোধরে বসে থাকে মোহামেডান। শেষে আবাহনী ঝক্কি নেয়নি। রজতকে তালিকায় না দেখে খুশি মনে খেলতে রাজি হয় মোহামেডান।

ভাগ্য বলে কথা। টসে জিতে আগে ব্যাটিং নেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সকালের শিশির ভেজা মাঠে সাকিবের সিদ্ধান্ত সাপেবর হয় আবাহনীর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য। একেবারে তোপদাগানো বোলিং দিয়ে বিপর্যস্ত করে তোলে তামিমদের।

আবাহনীর বোলিংয়ে খুবএকটা পরিবর্তনও আনতে হয়নি। তিন পেসার গুঁড়িয়ে দেন সাত ব্যাটসম্যানের উইকেট। বাকি তিনটির দখল নেন জাতীয় দলের সাবেক স্পিনার মো. রফিক। বিশেষ করে আবুল হাসানের প্রশংসা না করলে অন্যায় হবে। ৬.৩ ওভারে ২৮ রান দিয়ে চার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন তিনি। রফিক পাঁচ ওভারে খরচ করেন ১৫ রান। পিচ্ছিল পথ পাড়ি দিয়ে শেষপর্যন্ত ৯৩ রান তুলতে সমর্থ্য হয় মোহামেডান। নাজিমউদ্দিন ২৫, খালেদ মাসুদ ২১ এবং আজহার মাহমুদ ১৬ রান করেন।

মোহামেডান যেখানে মুড়িমুড়কির মতো উইকেট হারিয়েছে, সেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন আনামুল হক বিজয়। আটটি চার ও একটি ছয়ের মার মিলিয়ে ৫৪ বলে ৫৪ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। জাতীয় দলের ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস খেলেছেন ৩৮ রানের হার না মানা ইনিংস।

এর আগে আবাহনীর কাছে এতটা বাজেভাবে হারেনি মোহামেডান। সবচেয়ে ছোট স্কোর ছিলো ১৬৩ রান। এবার জাতীয় দলের অধিনায়ক এবং সহ-অধিনায়ককে নিয়েও রেকর্ড ব্যবধানে হারতে হয়েছে। অধিনায়ক সাকিব অবশ্য এখানেই হাল ছাড়াতে রাজি না,“এখনো মোহামেডানের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। সুপার লিগে সবগুলো ম্যাচ জিতলে এবং আবাহনী কোন ম্যাচ হারলে চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখতে পারবো। ”

তবে মাঠের বাইরের আলোচনা নিয়ে খেলায় কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানান সাকিব,“গঠনতন্ত্র সংশোধন নিয়ে যে সমস্যা হয়েছে সেবিষয়ে দলের কেউ কিছু জানতে পারেনি। আমাকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিলো। শেষপর্যন্ত সেগুলো নিয়ে কিছু হয়নি। উইকেটও ভালো ছিলো। কিন্তু আমরা খেলতে পারিনি। ব্যর্থতা আমাদের। ”

অধিনায়ক অস্বীকার করলেও উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল জানিয়েছেন অন্যকথা। আগের দিনের ঝামেলার রেশ বয়ে বেড়াতে হয় রোববার সকাল পর্যন্ত। তামিমের মুখেই শোনাযাক,“কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে প্রায় আধাঘন্টা পরে খেলা শুরু হয়। এতে যে খেলায় প্রভাব পড়েছে তা কিন্তু নয়। দিনটি আমাদের পক্ষেছিলো না। ”

এদিকে আবাহনী কোচ সাংবাদিকদের জানান, কোন চাপে নয়, রজতকে ইচ্ছে করেই খেলায়নি। যদিও ভেতরের কথা অন্য, সংঘাত এড়াতে রজতকে ছাড়াই খেলার সিদ্ধান্ত নেয় আবাহনী।

অনেকটা জেদ থেকে বেশি ভালো খেলে ফেলেছেন আবাহনীর বোলাররা। রোববারের জয়ের পুরো কৃতিত্ব বোলারদেরকেই দিতে হয়। খালেদ মাহমুদও বোলারদের কৃতিত্বকে খাটো করে দেখেনি,“আবুল হাসান তরুণ পেসার। পেস আছে এবং শট বল ভালো করতে পারে। ও খুবই ভালো বোলিং করেছে আজ। এছাড়া রফিক তো আন্তর্জাতিক বোলার। সে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে। দলের পারফরমেন্সে আমি খুশি। ”

লিগে ১০ ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে হেরেছে আবাহনী। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এখন সবার ওপরে অবস্থান করছে আকাশী-নীল শিবির। আবাহনী একমাত্র ম্যাচটি হেরেছে কলাবাগান স্পোর্টিংয়ের কাছে। সেখানে মোহামেডান একটি টাই এবং দুটি ম্যাচ হেরেছে। তাদের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। একপয়েন্ট কম নিয়ে মোহামেডানকে পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছে গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্স।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।