ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

নিজের ক্লাবকে সুবিধা দিতে গিয়ে!

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১১

ঢাকা: নিজের ক্লাবকে সুবিধা দিতে গিয়ে পাইওনিয়ার লিগে অংশগ্রহণকারী সিরাজ স্মৃতি সংসদের পথ রুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে লিগ কমিটির সভাপতি আলীমুজ্জামানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ভুক্তভোগী ক্লাবটির।

নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে মাঠে উপস্থিত হওয়ার দায়ে এবারের প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে টঙ্গীর সিরাজ স্মৃতি সংসদকে। কাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম এই বিষয়ে জানান, ১১ জানুয়ারি বিজি প্রেস মাঠে দলের খেলা ছিলো নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে। তবে ওইদিন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসায় যানজটে আটকা পড়ে নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট পর মাঠে পৌঁছায় তার দল।

অসুবিধার কথা জানিয়ে টুর্নামেন্ট কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন। কিন্তু দেরী করে মাঠে আসার অভিযোগে তাদের বিপক্ষে নবাবপুর ক্রীড়া চক্রকে ওয়াক ওভার দেওয়া হয়। রেফারিরা খেলা পরিচালনায় রাজি থাকলেও লিগ কমিটির সভাপতি আলীমুজ্জামান আলীম ও সহ-সভাপতি শাহজাহান মিয়া তাদেরকে খেলা চালাতে দিতে রাজি হননি। কারণ সভাপতি ও সহ-সভাপতি উভয়েই নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তা।

এর আগে নবাবপুর পাতানো ম্যাচে অংশ নিয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগির আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো। কিন্তু আমরা এতে রাজি না হওয়ায় আমাদের বিপক্ষে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

নজরুল ইসলামের দাবি, প্রতিযোগিতার বাইলজ অনুযায়ী কোনো দল নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিটের মধ্যে মাঠে উপস্থিত না হলে রেফারি ওয়াক ওভার দিতে পারেন। কিন্তু তারা এ সময়ের পূর্বেই মাঠে উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু লিগ কমিটির সভাপতি ও সহ-সভাপতি রেফারিদের ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে খেলা পরিচালনা করতে দেননি। আমরা বিষয়টি মহানগর লিগ কমিটি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। বাফুফে সভাপতি শনিবার আমাকে ডেকেছেন এই বিষয়ে কথা বলার জন্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাফুফের এক কর্মকর্তা জানান, এবারের প্রতিযোগিতা অন্যতম সম্ভাবনাময় দল ছিলো টঙ্গীর সিরাজ স্মৃতি সংসদ। প্রাথমিক পবের্র চারটি ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে তারা। অপর ম্যাচটিতে ড্র করেছে দলটি। নবাবপুরের বিপক্ষে তারা খেলায় হারলেও সুপার লিগে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু ওয়াক ওভার দেওয়ার বাইলজ অনুযায়ী এবারের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়লো দলটি। আগামী মৌসুমেও প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবে না দলটি। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ ফি বাবদ যে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয় সেটাও পাবে না তারা।

কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে লিগ কমিটি তাদেরকে অংশগ্রহণ ফি ও আগামী বছর টুর্নামেন্টে খেলতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এ ব্যাপারে পাইওনিয়ার লিগ কমিটির সভাপতি আলীমুজ্জামান আলিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে অপর প্রান্তে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

লিগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলীম পটু বাংলানিউজকে বলেন,‘‘আইন সবার জন্যই সমান। আইনের মধ্যে থেকে কেউ সুবিধা পেলে আমরা তো তাকে আটকাতে পারবো না। ” কিন্তু সিরাজ সংসদকে অংশগ্রহণ ফি ও আগামী বছর খেলতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া অনিয়মের মধ্যে পড়ে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘‘আমরা মানবিকতার দিকটি বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ ব্যাপারে  রেফারিজ কমিটির ডেপুটি সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন,‘‘পাইওনিয়ার লিগে অনেক অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। পরিবেশ পরিস্থিতি নিজের পক্ষে থাকলেই কেবল কেউ আইনের সুরক্ষা নিতে চায়। কিন্তু ধ্বংসের পথে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এই লিগটি ধরে রাখতে হলে কর্মকর্তাদের অবশ্যই খেলোয়াড়ী মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘন্টা, ১৫ জানুয়ারি ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।