ঢাকা: শামসুর রহমান রাগ পুষে রেখেছিলেন, বহিপ্রকাশ করবেন বলে। শতক হাঁকিয়ে ব্যাট তুলে নির্বাচকদের জবাবটা দিলেন মোহামেডানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কলাবাগান স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে দারুণ একটি ইনিংস খেলেন মোহামেডানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ৯টি চার ও চারটি ছয়ের মার দিয়ে ৮৬ বলে করেন ১০০ রান। প্যাভিলিয়ন এবং গ্যালারির দর্শকদের উদ্দেশ্যে ব্যাটও তোলেন। অনেকটা সময় ধরে ব্যাট উঁচিয়ে রাখেন জাতীয় দলে নির্বাচকদের অফিস কক্ষের দিকে। তখন মুখেছিলো উত্তেজনা, ব্যাটের ভাষা ছিলো অস্বাভাবিক!
প্রধান নির্বাচক রফিকুল ইসলাম, নির্বাচক আকরাম খান এবং জাহিদ রাজ্জাক মাসুম ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের পাশের কক্ষে বসে একজন ব্যাটসম্যানের বার্তা নিশ্চয় পেয়েছেন? কী বার্তা বহন করেছে সেটা বুঝতেও বোধহয় কষ্ট হয়নি তিন নির্বাচকের।
বিশ্বকাপের ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দলে রাখা হয়েছিলো শামসুর রহমানকে। এরপর ছোট হয়ে আসা ২৩ সদস্যের দলে রাখা হয়নি। এরপর থেকেই মোহামেডানের এই ব্যাটসম্যান মনে করছেন তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে,“আশা করেছিলাম ২৩ জনের দলে থাকবো। পত্রিকাতে দেখেছি পারফরমেন্সের কারণে আমাকে নেওয়া হয়নি। লিগে এতটা খারাপ খেলিনি ২৩ জনের দলে থাকার যোগ্যতা রাখি না। আমার মনে হয় বর্তমান স্কোয়াডে এমন অনেকে আছেন যাদের পারফরমেন্স আমার চেয়েও খারাপ। নির্বাচকরা কেন আমাকে রাখেননি জানি না? বলছি না যারা ২৩ জনে আছেন তারা ভালো খেলোয়াড় না। তবে আমি তাদের চেয়ে খারাপ না। ”
বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নিজেকে দেখতে চাননি শামসুর রহমান। চেয়েছিলেন অন্তত অতিরিক্ত তালিকায় জায়গা পেতে। ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে। কিন্তু এবার হয়নি। আবেগের সুরে অনেক কথাই বলছিলেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম পারফরমার,“লিগে আমার পারফরমেন্স খারাপ বলতে পারবেন না। এ দলের হয়ে অনেক রান করেছি। এর আগে জাতীয় দলে নেওয়া হয়েছে কিন্তু ম্যাচ খেলানো হয়নি। আমাকে একটা সুযোগ তো দেওয়া যেতো?”
নির্বাচকদের উদ্দেশ্যে ব্যাট তোলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে শামসুর রহমান বলেন,“আমি আসলে কারো উদ্দেশ্যে ব্যাট তুলিনি। আমাদের ক্রিকেট সভাপতিকে দেখিয়েছি। তিনি বোনাস ঘোষণা করেছেন তো। ”
চলমান লিগে দুটো শতক হাঁকিয়েছেন শামসুর রহমান। প্রথমটি গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে। দ্বিতীয়টি এসেছে বৃহস্পতিবার কলাবাগানের বিপক্ষে। এছাড়া ছোট ছোট কয়েকটি ইনিংস আছে তার।
উচ্ছৃঙ্খল ক্রিকেটার হিসেবে শামসুর রহমানের দুর্নাম আছে। কিন্তু তিনি বলছেন,“একজন উশৃঙ্খল খেলোয়াড় কখনোই ধারাবাহিক হতে পারে না। ব্যক্তিগত জীবনে যদি শৃঙ্খলা না থাকে, তবে ভালো খেলা সম্ভব নয়। কয়েকদিন হয়তো রান পাবে, নিয়মিত না। বিগত লিগগুলোতে আমার পারফরমেন্স দেখেন। উচ্ছৃঙ্খল হলে নিশ্চয় খেলায় প্রভাব থাকতো। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১