ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন স্পেন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১০
বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন স্পেন

জোহানেসবার্গ: প্রথমবার ফাইনালে উঠেই স্পেনের বাজিমাত। নেদারল্যান্ডসকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে নিয়েছে লা রোজারা।

ফাইনালে ডাচদের ১-০ গোলে হারিয়েছে তারা। ইয়োহান ক্রুইফদের ভাগ্যই মেনে নিতে হলো উত্তরসূরিদের। তৃতীয়বারের মতো রানার্সআপেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো নেদারল্যান্ডসকে।

অতিরিক্ত সময়ের ২৬ মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।

১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানির কাছে এবং ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার কাছে ফাইনালে হেরেছিলো নেদারল্যান্ডস।

খেলার প্রথম মিনিট থেকেই স্পেন চেপে ধরে নেদারল্যান্ডসকে। চার মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো লা রোজা বাহিনী। সার্জিও রামোসের হেড থামিয়ে দেন নেদারল্যান্ডসের গোলরক্ষক মার্টেন স্টেকেনবার্গ।

টোটাল ফুটবল মন্ত্র কাজে লাগাতে পারছিলো না নেদারল্যান্ডস। এর মধ্যেও সপ্তম মিনিটে ডির্ক কুইট গোলে শট নিয়েছিলেন। বিধিবাম ইকার ক্যাসিয়াসের জন্য গোলবারের মুখ উন্মুক্ত করতে পারেননি।    

রামোস খেলার ১০ মিনিটের ডান প্রান্ত দিয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপদ সীমায় ঢুকে পড়েন। কিন্তু বলের গতি ঠিক রাখতে না পারায় ভেস্তে যায় তাঁর সব চেষ্টা। এর সামান্য পরই সুযোগ সন্ধানী ডেভিড ভিয়া গোলবার লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন।

গুছিয়ে নিতে পারছিলো না নেদারল্যান্ডস। যার প্রভাব পড়ে খেলায়। প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামাতে অবৈধভাবে বাঁধা দিতেও কুণ্ঠা বোধ করেনি ডাচ খেলোয়াড়রা। হুয়ান ক্যাপদেভিয়াকে অবৈধভাবে চার্জ করায় হলুদ কার্ড দেখতে হয় রবিন ফন পার্সিকে।

স্পেনের সেমিফাইনাল জয়ের নায়ক কার্লেস পুয়োলকেও কিছুটা চাপে থাকতে হয় ১৬ মিনিটের সময় হলুদ কার্ড দেখায়। আরিয়ান রোবেনকে ফেলে দেওয়ায় এ শাস্তি দেন রেফারি। সেই সঙ্গে ফ্রি কিক দেওয়া হয় নেদারল্যান্ডসকে। কিন্তু  স্পট কিক থেকে এগিয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই তৈরি করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস।

ফাইনালের উত্তেজনায় ফুটবলাররা বোধহয় পরিচ্ছন্ন খেলার কথা ভুলে গিয়েছিলেন। একের পর এক ফাউল করে বসেন উভয় দলের খেলোয়াড়রা। মাঠে শৃঙ্খলা ধরে রাখার স্বার্থে কার্ড দেখি যান রেফারি। বিরতির আগে নেদারল্যান্ডসের আরো দু’জন মার্ক ফন বোমেল ও নিগেল ডি জং হলুদ কার্ড দেখেন। স্পেনও কম যায়নি। পুয়োলের পর সার্গিও রামোস হলুদ কর্ড পান।

৩৩ মিনিটে জন হেইটিঙ্গার দূরপাল্লার শট প্রায় স্পেনের গোলবারে পৌঁছে যাচ্ছিলো। ইকার ক্যাসিয়াস শূন্যে ভেসে বলে নিচে আঙ্গুল ছুইয়ে বিপদ মুক্ত হন।
   
অতিরিক্ত সময়ে আরিয়ান রোবেন বক্সের ডান দিক থেকে গোলে কিক নিয়েছিলেন। গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী ইকার ক্যাসিয়াস এবারও বাঁচিয়ে দেন স্পেনকে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা একটু পরিচ্ছন্ন ছিলো। কিন্তু অষ্টম মিনিটেই হলুদ কার্ড দেখেন গিয়োভান্নি ব্রঙ্কহর্স্ট। খানিক বাদেই হেইতিঙ্গা পঞ্চম ডাচ খেলোয়াড় হিসেবে হলুদ কার্ডের শিকার হন।

অতিমাত্রায় শরীর দিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করে ওলন্দাজরা। বিশ্বকাপের আগের ছয় ম্যাচের নেদারল্যান্ডসকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিলো না খেলায়।

৬২ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ নষ্ট হয় ডাচদের। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে একাই গোলপোস্টের দিকে এগিয়ে যান আরিয়ান রোবেন। বক্সের ওপর থেকে বাঁ পায়ের প্লেসিং শট নিলে ইকার ক্যাসিয়াসের পায়ে লেগে বল চলে যায় সীমানার বাইরে।

৬৭ মিনিটে ডানদিক দিয়ে এগোচ্ছিলেন রবিন ফন পার্সি। কিন্তু তাকে অবৈধভাবে ফেলে দেওয়ায় হলুদ কার্ড দেখেন স্পেনের ক্যাপদেভিয়া।

বদলি খেলোয়াড় নাভাসের মাইনাস বল থামাতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন ডাচ ডিফেন্ডার। সুযোগে শট নেন ডেভিড ভিয়া। কিন্তু গোলরক্ষক বাঁচিয়ে দেন।

৭৬ মিনিটে জাভির কর্নার কিক থেকে সার্গিও রামোস লাফিয়ে হেড নিলে বল চলে যায় ক্রস বারের ওপর দিয়ে।

আরিয়ান  রোবেন দুর্বার গতিতে ছুটে যান স্পেনের গোলপোস্টের দিকে। দুইজনকে পরাস্ত করে শেষে বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হার মানেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের কাছে। সঙ্গে হলুদ কার্ড জোটে রোবেনের ভাগ্যে। নেদারল্যান্ডসের এটি ষষ্ঠ কার্ড।

খেলার তখনো সাত মিনিট বাকি। শেষপর্যন্ত গোল হলো না। অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। টানা আক্রমণ কোনভাবেই গোল  আগে

অতিরক্ত সময়ের ১১ মিনিটে জেসাস নাভাস ডান দিক থেকে শট নিলে ব্রঙ্কহর্স্টের পায়ে গেলে বল চলে যায় সীমানার বাইরে।

১৪ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় নিশানায় বল পাঠানো চেষ্টা করেছিলেন সেস ফ্যাব্রেগাস।

১৯ মিনিটের সময় ১০ জনের দলে পরিণত হয় নেদারল্যান্ডস। হেইতিঙ্গা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। দুই হলুদ কার্ড থেকে লাল কার্ড পেয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৬ ঘন্টা, জুলাই ১২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।