ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

খেলা

অজেয় ইংল্যান্ডকেও জয় করলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১০
অজেয় ইংল্যান্ডকেও জয় করলো বাংলাদেশ

ব্রিস্টল: অবশেষে কাঙ্ক্ষিত জয় পেলো বাংলাদেশ। অজেয় ইংল্যান্ডকেও জয় করে নিলো।

টান টান উত্তেজনার ম্যাচে শনিবার স্বাগতিকদের ৫ রানে হারিয়েছে টাইগাররা।

এ জয়ে তিন ম্যাচ একদিনের সিরিজে ১-১ এ সমতা পেলো বাংলাদেশ।

বাঘা ইংল্যান্ড সবসময়ই ভয়ংকর প্রতিপক্ষ। সিরিজের শুরুতেও আধিপত্য দেখিয়েছে। কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। মনে জোর রেখে ইংলিশদের হুংকার দিয়েছিলেন ঘুরে দাঁড়াবেন বলে। চব্বিশ ঘন্টাও পাড় হয়নি। জবাব পেয়ে গেছে ইংল্যান্ড।

সবধরণের ক্রিকেটে টানা ২৪ ম্যাচ হেরে শেষে অমৃতের স্বাদ পেলো টাইগাররা। শুধু ক্রিকেটাররাই নয় পুরো জাতির জয় হয়েছে উন্নাসিক ইংলিশদের বিপক্ষে। এরপর আর কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশ গর্ব করে বলতে পারবে না, বাংলাদেশের কাছে হারেনি। জেফ্রি বয়কটরা ধারাভাষ্য বা টিভি টকশোতে বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে কটুক্তি করার আগে একবার অন্তত ভাববেন।

অপেক্ষার ফল মধুর হয়। ইংল্যান্ডকে ২১তম ম্যাচে এসে হারাতে পেরেছে মাশরাফি বাহিনী। তা আবার ইংল্যান্ডের মাটিতে। গা জ্বলে যাওয়ার কথা অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসদের।

ব্রিস্টলের কাউন্ট্রি মাঠে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ যে স্কোর করেছে তা দেখার পর ইংলিশদের বিপক্ষে জয় আশা করা খুবই কঠিন ছিলো। ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ২৩৬ রান করতে পেরেছিলেন মাশরাফিরা। নিজেদের মাঠ। চেনা দর্শক। কন্ডিশন সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়ার কথা সফরকারী বোলারদের। কিন্তু বোলাররাই জেতালেন বাংলাদেশকে।

সিমিং কন্ডিশনে বোলিংটা দারুণ হয় রুবেল হোসেনের। প্রথম দুই উইকেটই তাঁর। আউট করেছেন লড়াকু দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যান্ড্রু স্টাউস (৩৩) ও ক্রেগ কিজওয়েটারকে (২০)। তাঁরা দুজনই ফিরেছেন ক্যাচ তুলে। স্বাগতিকদের সংগ্রহে তখন ৫৮ রান। এরপরই ভেল্কি বাজি দেখান আব্দুর রাজ্জাক। তিনিও শিকার করেন পল কলিংউড এবং ইয়ন মর্গানের উইকটে। কলিংউডকে ১০ রানে এবং মর্গানকে ১ রানে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন রাজ্জাক।

মাঝে বাঁহাতি স্পিনার সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন মাইকেল ইয়ার্ডিকে। এভাবে চাপের মুখে ৪০তম ওভারে গিয়ে ১৬৬ রানে ৭ উইকটে হারিয়ে বসে স্বাগতিক দল। বলার মতো বড় স্কোর পাচ্ছিলেন না কেউই। কেবল ব্যতিক্রম একজন, জোনাথন ট্রট। একাই টেনে নিচ্ছিলেন দলকে। তার ব্যাটে ভর করেই জয়ের কাছাকাছিও চলে গিয়েছিলো ইংল্যান্ড। ভাগ্যিস অধিনায়ক মাশরাফি অষ্টম এবং নবম উইকেট দুটো নিয়েছিলেন। ট্রটের সঙ্গী ব্রডকে ব্যক্তিগত ২১ রানে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অ্যান্ডারসন তো এসেই চলে গেছেন।

শেষ দিকে এসে ম্যাচের মোড় নেয় নাটকীয়তায়। এই বুঝি জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ইংল্যান্ডের। বাংলাদেশের প্রয়োজন একটি উইকেট। নার্ভাস ওভারে বল তুলে দেওয়া হয় শফিউলের হাতে। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত ভুল হয়নি। প্রথম দুই বলে ৪ রান তুলে নেয় ইংল্যান্ড। তৃতীয় বলেই ট্রট জহুরুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। বিজয় উল্লাসে মেতে উঠে টাইগাররা। ১৩০ বল খেলে ৯৪ রান করেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান ট্রট।

মাশরাফি, আব্দুর রাজ্জাক, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান প্রত্যেকেই দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।        

এরআগে ইংলিশদের কড়া নজরে থাকায় এ ম্যাচেও হাত খুলে খেলতে পারেনি তামিম ইকবাল। ব্যক্তিগত ১৮ রানে সাজঘরে ফেরেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

প্রথম দিকে উইকেট হারিয়ে একটু বেশি সতর্ক হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। কাউন্ট্রি মাঠের বাউন্সি উইকেটে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন ব্যাটসম্যানরা। এতে করে রানের চেয়ে বলের খরচটা বেশি হতে থাকে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস তার ৭৬ রান তুলতে প্রায় দ্বিগুণ বল খেলেন। বাকিদের অবস্থাও একই। শুধু ব্যতিক্রম মাশরাফি। ২৫ বলে ২২ রান তুলে রানআউটের শিকার হন অধিনায়ক।

জহুরুল ইসলাম অমি ৪০ রান করেছেন ৫৩ বলে। মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত থাকেন ২৪ রান নিয়ে। ইংলিশ পেসার আজমল শাহজাদ তিনটি উইকেট নিয়েছেন।

অধিনায়ক মাশরাফি সত্যিই ভাগ্যবান। নেতৃত্ব ফিরে পেয়েই সাফল্য তুলে নিলেন।

সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৬ উইকেটে হেরেছিলো বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে সমতা আসায় এখন সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখতে পারে সফরকারী দল।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২২ ঘন্টা, জুলাই ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।