ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

চট্টগ্রামের মাঠ নিয়ে বিসিবি কর্তাদের উদাসীনতা

সেকান্দার আলী, চট্টগ্রাম থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১০
চট্টগ্রামের মাঠ নিয়ে বিসিবি কর্তাদের উদাসীনতা

চট্টগ্রাম: পানি অপসারণের সুব্যবস্থা না থাকায় অগত্যা ঘাসের আড়ালে জমে থাকে। পা ফেলতেই চ্যাপ চ্যাপ শব্দ হয়।

বৃষ্টি শেষে অন্তত আট থেকে ১০ ঘন্টার মধ্যে খেলা চালানো সম্ভব হয় না। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামের এই দুরাবস্থা বছরের পর বছর ধরে। ক্রিকেট বোর্ড থেকে সমাধানের চেষ্টাও হয়নি।

অথচ বিশ্বকাপের মূল ভেন্যুর মর্যাদা পেয়েছে চট্টগ্রামের এই মাঠ। যেখানে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে। ঘাসে মড়ক লেগেছে। আগাছায় ভরে আছে আউট ফিল্ড। এঁটেল মাটি দিয়ে তৈরি মাঠের জমি। পানির ছোঁয়া লাগতেই পিচ্ছিল হয়ে উঠে। বিশ্বকাপের আগে পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে জানান বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান মুন্না,“জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নকশায় উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার সুব্যবস্থা করতে হলে অন্তত দুই ফুট পর্যন্ত মাটি অপসারণ করতে হবে। পিচ খুড়ে ফেলতে হবে। এই ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না। ”

পানি অপসারণ ব্যবস্থার সুরাহা না হলেও মাঠে ঘাস বপন করা হবে বলে জানান মুন্না। আগাছা তুলে সেখানে লাগানো হবে সবুজ ঘাস। বিশ্বকাপ কেন্দ্রীয় গ্রাউন্ডস কমিটির এই কর্মকর্তা জেনে শুনে সমস্যা জিইয়ে রেখেছেন।

বাংলাদেশ বিশ্বকাপসহ আয়োজকের মর্যাদা পেয়েছে ২০০৬ সালে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে মূল ভেন্যুর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে ২০০৯ সালের অক্টোবরে। অথচ শুরু থেকে চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামের মাঠ উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়নি।

২০০৭ সাল থেকে বিসিবির গ্রাউন্ড কমিটিতে আছেন শফিকুর রহমান। কিন্তু চট্টগ্রামের একমাত্র আন্তর্জাতিক ভেন্যুর উন্নয়নে তার ভূমিকা নেই বললেই চলে।

প্রায় চার বছর আগে (২০০৭ সালের মে) ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার একদিনের সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। বিসিবির বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি (সাবেক সাধারণ সম্পাদক) মাহাবুবুল আনাম তখন জানিয়ে ছিলেন ‘শিগগিরই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। ’ দেখতে দেখতে চার বছর হতে চলেছে। আগের জায়গাতেই রয়ে গেছে চট্টগ্রামের মাঠ। বিশ্বকাপ সামনে রেখে কেবল অবকাঠামোগত সংস্কার হচ্ছে। এজন্য খরচ হচ্ছে ৭৫ কোটি টাকা।

পশ্চিমে গ্যালারি তৈরি হয়ে রংবেরঙের চেয়ার বসেছে। পূর্ব গ্যালারি বাড়ানোর কাজ চলছে। ভিআইপি গ্যালারি, মিডিয়া বক্স, খেলোয়াড়দের সাজঘরে উন্নয়নের ছোঁয়া স্পষ্ট। এসবের কোন মূল্য থাকবে না মাঠে খেলা আয়োজন সম্ভব না হলে। বছরের পর বছর সমস্যা জিইয়ে রাখার কারণ জানতে চাইলে বিসিবি মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস বলেন,“পানি অপসারণের ব্যবস্থা এখানে আছে। কিন্তু সেটা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মতো উন্নত নয়। বিশ্বের অনেক দেশে এই মাঠের চেয়ে অনেক কম সুবিধা আছে। আমার মনে হয় না বিশ্বকাপের খেলা নিয়ে সমস্যা হবে। ”

শনিবার আইসিসির ভেন্যু পরিদর্শক দল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়াম পর্যবেক্ষণ করবে। এনিয়ে মোটেও বিচলিত নন বিসিবির কর্মকর্তারা। আইসিসির পরিদর্শক দলের পক্ষ থেকে মাঠ নিয়ে আপত্তি আসবে না বলে জানান শফিকুর রাহমান। বরং প্রত্যেকে খুশি হবেন বলে বিশ্বকাপ কেন্দ্রীয় গ্রাউন্ডস কমিটির এই কর্মকর্তার বিশ্বাস। বিসিবির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার এমন মন্তব্যের পর অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। ধারণা করছেন আইসিসি পরিদর্শক দলকে উপঢোকনের মাধ্যমে খুশি করার চেষ্টা চলছে!

বিশ্বকাপ এখনো দূরে। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে একদিনের ক্রিকেট সিরিজের শেষ ম্যাচ আয়োজন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। শনিবার বৃষ্টি হলে খেলা চালানো সম্ভব নয় বলে জানান কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু। বলেন,“এখন থেকে আর বৃষ্টি না হলে খেলা হবে। কিন্তু বৃষ্টি হলে কিছুতেই ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হবে না। ”
 
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।