গুয়াংজু: প্রত্যাশার বেলুন ফুলিয়ে গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে এসেছেন কাবাডি খেলোয়াড়রা। অন্তত একটি পদক নিয়ে দেশে ফেরার স্বপ্ন দেখে।
গুয়াংজুর নানশা জিমনেসিয়ামে সোমবার সকালে মেয়েদের ওপর আধিপত্য দেখিয়ে ভারত চারটি লোনাসহ ৩৪-২০ পয়েন্টে ম্যাচ জিতেছে। কিন্তু জাপানের কাছে এভাবে আত্মসমর্পণ করবে পুরুষ দল স্বপ্নেও ভাবেনি কর্মকর্তারা। সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন রীতিমতো হতাশ হয়েছেন। বলেন,“এভাবে হারবে বুঝতে পারিনি। ভারতের কাছে মেয়েরা হেরেছে এনিয়ে আক্ষেপ নেই। কিন্তু জাপানের কাছে ছেলেদের এই পরাজয় মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। ”
এশিয়ান গেমসে বরাবরই দেশের মান বাঁচিয়েছে কাবাডির দল। এপর্যন্ত তিনটি রৌপ্য এবং দুটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। এবার হয়তো পদক ছাড়াই দেশে ফিরত হবে। জাপানের কাছে ১৫-১৩ পয়েন্টে হারেছে বাংলাদেশ পুরুষ দল। প্রথমার্ধে ৬-৫ পয়েন্টে পিছিয়ে তারা।
এদিকে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমে চুপসে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। একটু ভয়ও পেয়েছিলো। সুযোগ কাজে লাগায় ভারত। দুটি লোনাসহ ১৬ পয়েন্ট তুলে নেয় ওই সময়ের মধ্যে। বাংলাদেশ তখনো কোন পয়েন্ট পায়নি। এরপর একটু একটু করে সাহস সঞ্চয় করেন। একটি পয়েন্টও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ে। বিরতি পর্যন্ত ২২-৭ পয়েন্ট এগিয়ে থাকে ভারত।
দ্বিতীয়ার্ধে সমানে লড়াই হয়েছে। এই অর্ধে এক পয়েন্ট (১৩) বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠে মালেকা বাহিনী ভারতের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে নেই। অবশ্য ভারতের খেলোয়াড়রা শারীরিক, মানসিক এবং কৌশলগত দিক দিয়ে খানিকটা এগিয়ে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা খর্বাকায়। ভালো রেইডার নেই। ভারত বেশিরভাগ পয়েন্ট নিয়েছে রেইড থেকে।
কোচ আব্দুল হাকিম মিয়ার দৃষ্টিতে,“ভয় পেয়ে প্রথম দিকে খেলতে পারেনি মেয়েরা। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় অসুস্থ। প্রস্তুতিতেও একটু ঘাটতি আছে। ১৫ আগস্ট থেকে অনুশীলন হয়েছে। এছাড়া বড় কোন আসরে এই প্রথম খেলছে সবাই। অভিজ্ঞতা থাকলে ম্যাচ জেতা সম্ভব ছিলো। ”
এশিয়ান গেমসে মেয়েদের কাবাডি এই প্রথম। নির্ধারিত সময়ের পরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মূলত সেকারণেই দেরিতে অনুশীলন ক্যাম্প ডেকেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। তবে আন্তর্জাতিক গেমসে আগেও খেলেছে মহিলা দল।
একাদশ দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে রৌপ্য পদকও জিতেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে গুয়াংজু এশিয়ান গেমস শুরুর মাস খানেক আগে।
অভিজ্ঞতার দিক থেকে ভারতের মেয়েরা অনেক এগিয়ে। প্রত্যেকেই পেশাদার খেলোয়াড়। এখানেই শেষ নয়। স্কুল পর্যায় থেকে ভারতে কাবাডি চর্চা হয়।
আব্দুল হাকিম অবশ্য অনুশীলনের ঘাটতির কথা বলতেই পারেন। এশিয়ান গেমসের ক্যাম্প বন্ধ রেখে মেয়েদেরকে হ্যান্ডবল লিগে খেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো।
গুয়াংজু সময়: ১৩০৩ ঘন্টা, নভেম্বর ২২, ২০১০