ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

পাকিস্তানকে গোল দিয়েছে বাংলাদেশ!

সেকান্দার আলী, গুয়াংজু থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১০
পাকিস্তানকে গোল দিয়েছে বাংলাদেশ!

গুয়াংজু: গল্পে গল্পে বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসান সোহেল আব্বাস। উন্নতির চুল চেড়া বিশ্লেষণও করেন।

এশিয়ার হকিতে বাংলাদেশের উত্থান দেখছেন। ‘অনেক উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। পাঁচ বছর আগে তাদেরকে ২০-২১ গোল দিয়েছি। এখন লড়াই করে জিততে হয়। ’

গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে গ্রুপের শেষে ম্যাচে বাংলাদেশকে ছয় গোলের বেশি দিতে পারেনি পাকিস্তান। উল্টো একটি গোল হজম করতে হয়েছে। এথেকে কিঞ্চিত উন্নতির চিত্র হয়তো পাওয়া যাবে। কিন্তু রাতারাতি ভোঁজবাজির মতো বদলে যায়নি বাংলাদেশের হকি। অন্তত এশিয়ান গেমসে তেমন কিছু করে দেখাতে পারেনি। জাপানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছে ৩-১ গোলে। ভারতের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে ৯-০ তে। কেবল জয় পেয়েছে হংকং চায়নার বিপক্ষে।

সোহেল আব্বাসের বাঁধভাঙ্গা প্রশংসা কোচ গেরহার্ড পিটার রাক হয়তো মুগ্ধ হয়েছেন। কিন্তু কর্মকর্তারা নয়। জার্মানিতে উন্নত প্রশিক্ষণ এবং অনেকগুলো প্রীতি ম্যাচ খেলে গুয়াংজুতে এসেছে বাংলাদেশ হকি দল। এখানেও তিনটি ম্যাচ খেলেছে। অথচ পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নেমে স্পিকের ঝলক দেখাতে পারেননি খেলোয়াড়রা। বলের নিয়ন্ত্রণ রাখাও কঠিন হয়ে উঠেছিলো রাসেল মাহমুদ জিমিদের জন্য। একের পর এক আক্রমণ থামাতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে গোলরক্ষক জাহিদ হোসেনের। তবুও চেষ্টা করে যান। যদিও গোল খাওয়া থেকে নিস্তার মেলেনি।

আক্রমণভাগে চোখে পড়ার মতো কিছু করে দেখাতে পারেননি পুস্কর খিসা মিমু এবং কৃষ্ণ কুমার। মাঝমাঠে মোশরফ হোসেন কুটি স্টিকে বল রাখতে পারছিলেন না। তারওপর হলুদ কার্ড দেখে মাঠের বাইরে যেতে হয়েছে।

মানুনউর রহমান চয়ন যথারীতি ভুল করেন। পেনাল্টি পায় পাকিস্তান। সোহেল আব্বাস এবং মোহাম্মদ ইমরান মিলে চার গোল করেন পেনাল্টি কর্নার থেকে। বাকি গোল দুটি শাকিল আব্বাসের।

খেলার ১৩ মিনিটে রিভার্স হিটে নিশানা ভেদ করেন। এর দুই মিনিট পরে পেনাল্টি কর্নার বিশেষজ্ঞ সোহেল আব্বাস ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। খেলায় সবচেয়ে দর্শনীয় গোলটি এসেছে ফরোয়ার্ড শাকিল আব্বাসের স্টিক থেকে। ২৭ মিনিটে চারজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে জালে বল পাঠান। বিরতি পর্যন্ত ৪-০ গোলে পিছিয়ে থাকে বাংলাদেশ।

পরের অর্ধে আক্রমণ থেকে নিচে নেমে আসেন জিমি। চয়ন, ইমরান হোসেন পিন্টুকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবুও পেনাল্টি কর্নার থেকে দুটি গোল পেয়ে যায় পাকিস্তান। শেষ ২২ মিনিট গোলবার রক্ষিত থাকে। বাংলাদেশ একমাত্র গোলটি করেন তাপস বর্মণ।

গ্রুপের খেলা শেষ। সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে পাকিস্তানের। বাংলাদেশ খেলবে স্থাননির্ধারণী ম্যাচ। সেমিফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর সোহেল আব্বাস বলেন,“আমাদের জন্য ফাইনাল খেলা ছিলো বাংলাদেশের বিপক্ষে। সে ম্যাচে সফল হয়েছি। পরের ম্যাচটিও ফাইনাল। জয় পেলে টিকে থাকবো। হেরে গেলে ব্রোঞ্জ পদকের জন্য খেলতে হবে। ”

এদিকে বাংলাদেশ কোচ পিটার বলেন,“তুলনামূলক আগের চেয়ে ভালো খেলেছে ছেলেরা। রিজার্ভ বেঞ্চ ভালো থাকলে আরো ভালো হতো। ”

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬-১ গোলের পরাজয়কে আগের চেয়ে ভালো মনে করেন অধিনায়ক জাহিদ। তার দৃষ্টিতে, গত এশিয়ান গেমসে ১০-০ গোলে হেরেছি। এবার অনেক ভালো। গোলব্যবধান কম রাখতে পেরে আমরা খুশি। কারণ দেশের মানুষ গোল দিয়ে পারফরমেন্স মূল্যায়ন করবে। ”

একটু আক্ষেপও ছিলো জাহিদের কথায়। বলেন,“প্রতি চার বছরে একবার আমরা পাকিস্তানের মুখোমুখি হবো। এরচেয়ে ভলো কী আশা করতে পারি। অথচ পাকিস্তান বিরামহীন টুর্নামেন্ট এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। তাদের সঙ্গে আমাদের পারার কথা নয়। ”

গুয়াংজু সময়: ২০১২ ঘন্টা, নভেম্বর ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।